বিশেষ প্রতিবেদক:
উখিয়া-টেকনাফের দু’বারের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে কানাঘুঁষা চলছে। তার বিরুদ্ধে ইয়াবা গড়ফাদারের অভিযোগ থাকায় এমনটি বলা হচ্ছে। তবে তার বিরুদ্ধে করা এই অভিযোগের প্রমাণ নেই বলে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরাসরি বলেছেন। তারপরও তার বিরোধীরা তার মনোনয়ন নিয়ে ‘টানাটানি’ শুরু করেছেন। এই নিয়ে সংবাদ মাধ্যমেও লেখালেখিও হচ্ছে। তবে মাঠের পরিস্থিতি ভিন্ন দেখা যাচ্ছে। কারণ ভোটার এবং দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে বদিই একমাত্র আস্থা। ভোটার এবং দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে কথা এমনটি জানা গেছে।
তারা বলছেন, আবদুর রহমান বদি যেভাবে সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে থেকেছেন অতীতেও কোনো সংসদ সদস্য এভাবে থাকেননি। আর যারা তার সাথে প্রতিযোগিতার করছে তারাও আগামীতে বদির মতো জনসেবা করবে বলে মনে হয় না। এ কারণে জনগণ এবং দলের তৃণমুলে সাংসদ বদির ব্যাপক জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছে। সব স্তরের মানুষে সাথে সহজে মিশে যাওয়া এক ‘জাদুকরী’ গুণ আছে তাঁর। এই কারণে তাঁর জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে।
স্থানীয় পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১০ বছরে উখিয়া-টেকনাফে সমানভাবে উন্নয়ন করেছেন সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি। উন্নয়নের পাশপাশি গরীব-অসহায় মানুষের পাশে সব সময় দাঁড়িয়েছেন। তার কাছে সাহায্যের জন্য আসতে হয়নি। তিনিই খুঁজে খুঁজে চিকিৎসার অভাবে মরতে বসা, অর্থকষ্টভোগা লোকজন, বৃদ্ধ, বিধবা, গরীব শিক্ষার্থীসহসহ নানাভাবে অভাবগ্রস্ত লোকজনকে তিনি অকৃপণ হস্তে সহযোগিতা করেছেন। তার সহযোগিতায় অনেক মুমূর্ষু রোগী এখন সুস্থ-সুন্দর জীবন যাপন করছেন। অনেক শিক্ষার্থী আলোকিত জীবন পেয়েছেন। অনেক পরিবারে ফিরেছে স্বচ্ছলতা।
জানা গেছে, উখিয়া-টেকনাফে দুইটি ফায়ার সার্ভিস, দুই উপজেলায় থানার নতুন ভবন, দুই হাসপাতালের ৫০ শয্যা করে বৃদ্ধি করেছেন এমপি বদি। একই সাথে উখিয়া-টেকনাফ সড়কে নতুন ব্রীজ, গ্রামীন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, উখিয়ায় একটি স্কুল সরকারী করন, টেকনাফে কলেজ সরকারীকরণ, প্রাথমিক ও হাইস্কুলে নতুন ভবন, গরীব অসহায় মানুষকে সহায়তার ব্যাপক নজির রয়েছে তাঁর। পেটে ১৮ কেজি টিউমার নিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জমিলা বেগমকে সুস্থ করে তোলা, সম্প্রতি চট্টগ্রামের ট্রেনে কাটা পড়ে পা হারানো রবিউলের পাশে দাঁড়ানোসহ অসংখ্য অসহায় রোগীর পাশে দাড়িয়েছেন তিণি। এছাড়াও প্রায় শতাধিক মেধাবী শিক্ষর্থীকে পড়ালেখার খরচ দিয়েছেন। যাদের অনেকে আজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সমাজ ও দেশের জন্য আলো ছড়াচ্ছে।
সাধারণ ভোটার ও আওয়ামী লীগের তৃণমুলের নেতাকর্মীরা বলছেন, আবদুর রহমান বদি ভোটার এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীদেও মাঝে যেমন জনপ্রিয় তা আপাত কোনো দলের কোনো নেতার নেই। তিনি জনগণকে ভালোবাসেন বলে জনগণের কাছে তিনি তুমুল প্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। একারণে অনেক বিএনপি-জামায়াতের লোকও তাঁকে ভালোবেসে নৌকায় ভোট দেবেন। বদি ছাড়া কেউ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলে তেমন সাড়া পাবেন না।
পালংখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজল কাদের ভুট্টো বলেন, ‘দলীয় এমপি হিসেবে দলের নেতাকর্মীদের যেভাবে মূল্যায়ন করতে হয় সেভাই মূল্যায়ন করেন এমপি বদি। অনেক তারও বেশি করেন। তিনি সব দলের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের খোঁজ রাখেন এই কারণে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বদিও উপর আস্থাশীল।’
হলদিয়াপালং ইউনিয়ন আ’লীেেগর সভাপতি মোঃ ইসলাম বলেন, ‘উন্নয়নের ক্ষেত্রে উখিয়া-টেকনাফ নিয়ে এমপি বদির কোনো বৈষম্য নেই। তিনি দু’উপজেলাতে সমানভাবে উন্নয়ন ও সাধারণ জনগণকে নানা সহযোগিতা করেছেন। বরং বলতে গেলে উখিয়ায় বেশি উন্নয়ন করেছেন। তার উন্নয়নের কথা এখন উখিয়া-টেকনাফের মানুষের মুখে মুখে। সাধারণ জনগণ এখন দলমত ভুলে এমপি বদিকেই আবারো আগামীর এমপি চাচ্ছেন। এটা আমার কথা না মাঠের কথা।’
বাহারছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বাহার বলেন, ‘এমপি বদি দলের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে নেই ঠিক। তবে দলের জন্য একজন নিবেদিত প্রাণ মানুষ তিনি। দলের যেকোনো প্রয়োজনে তিনিই এগিয়ে আসেন। তাই দলের নেতাকর্মীরা তাঁর জন্য মরিয়া। তাকেই মনোনয়ন দেয়া তৃণমুলের নেতাকর্মীদের এখন প্রাণের দাবি।’
রতœাপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলমগীর বলেন, ‘ আমার বিশ^াস সরকারের এমপিদের মধ্যে আবদুর রহমান বদির মতো জনদরদী এবং জনপ্রিয় এমপি খুব বেশি নেই। সবার আগে জনগণকে বুঝেন। জনগণের যেকোনো প্রয়োজনে ছুটে আসেন। তাকে খবর দিতে হয় না। তিনি নিজেই খবর নিয়ে ছুটে আসেন মানুষের কাছে। সাধারণ মানুষ তাঁকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরার সুযোগ পায়। তিনি কাছে পেলেই যেকোনো মানুষকে বুকে আগলে নেন। সব স্তরের মানুষের মিশে জাদুকরী গুণ আছে তাঁর। তাকে মনোনয়ন দিলে যেভাবে নির্বাচন হোক উখিয়া-টেকনাফ আসন আওয়ামী লীগের থাকবেই। এতে কোনো সন্দেহ নেই!’
টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এম. এ জহির বলেন, ‘দলীয় রাজনীতি এবং ভোটের রাজনীতে ভিন্নতা রয়েছে। ভোটের রাজনীতির মাঠের এক পাক্কা খেলোয়াড় এমপি আবদুর রহমান বদি। তিনি জানেন, জনগণকে কিভাবে ভালোবাসতে হয়। কিভাবে জনগণের ভালোবাসা আদায় করে নিতে হয়। তাঁর এই গুণ উখিয়া-টেকনাফের রাজনীতিবিদদের তেমন কারো মাঝে নেই। তিনিই সেরা। তাকেই মনোনয়ন দেয়া মানে ভোটের আগে একটি সিট নিশ্চিত করতে পারবে আওয়ামী লীগ। তাই তাকেই মনোনয়ন দেয়া এখন উখিয়া-টেকনাফবাসীর প্রাণের দাবী।’
জানতে চাইলে সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি বলেন, ‘ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা উখিয়া-টেকনাফে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। আর আমি সংসদ সদস্য হিসেবে গত ১০ বছর আমি উখিয়া-টেকনাফের জনগনের সেবা করেছি। উখিয়া-টেকনাফে হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। তাই এই উন্নয়নকে অব্যাহত রাখতে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি উখিয়া-টেকনাফের জনগনের সেবক হিসেবে কাজ করেছি এমপি হিসেবে না। চেষ্টা করেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন সবার কাছে সবার মাঝে পৌঁছে দিতে। আগামীতেও আমার এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
মনোনয়ন প্রসঙ্গে এমপি বলেন, মনোনয়ন দিবেন শেখ হাসিনা। তাই মনোনয়নের ব্যাপারে আমি চিন্তা করছি না। তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা; আমি জানি তিনি কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিবেন না। তাঁর প্রতি আমার শতভাগ আস্থা রয়েছে।’
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।