সিবিএন ডেস্ক:
অবশেষে ‘ভুল’ স্বীকার করল সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। এখন তারা বলছে, ইয়েমেনে একটি বাসে রক্তক্ষয়ী বিমান হামলার ক্ষেত্রে ‘ভুল’ হয়েছিল। এ জন্য তারা ‘দুঃখিত’।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ৯ আগস্ট ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলীয় সাদা প্রদেশে একটি বাসে সৌদি জোট বিমান হামলা চালালে ৪০ জনের বেশি শিশু নিহত হয়। আহত হয় অনেকে। এই বিমান হামলার ঘটনায় সৌদি জোট ভুল স্বীকার করল।
হুতি বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত প্রদেশটিতে ওই বিমান হামলার ঘটনাটি বিশ্বজুড়ে সমালোচনা ও নিন্দার জন্ম দেয়। চাপে পড়ে সৌদি জোট। প্রথমে তারা বিমান হামলাটিকে ‘বৈধ ব্যবস্থা’ বলেই দাবি করে। পরে তারা এই অবস্থান থেকে সরে আসে। হামলার ঘটনাটি তদন্তের ঘোষণা দেয় সৌদি জোট।
গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে সৌদি জোট তাদের ভুল স্বীকার করে। বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় ভুলের জন্য যে বা যারা দায়ী, তাদের জবাবদিহির মুখোমুখি করা হবে।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএতে প্রচারিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ভুলের বিষয়ে জোটের জয়েন্ট ফোর্সেস কমান্ড দুঃখ প্রকাশ করেছে। হতাহত হওয়ার ঘটনায় তারা সমবেদনা জানিয়েছে। শোক প্রকাশ করেছ। ভুক্তভোগীদের পরিবারের প্রতি সংহতি জানিয়েছে।
সৌদি জোট বলেছে, হামলায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে তারা ইয়েমেন সরকারের সঙ্গে কাজ করবে। এ ছাড়া ইয়েমেনে অভিযানের নিয়মকানুন মূল্যায়ন করবে।
তবে জোটের এক মুখপাত্রের ভাষ্য, তাঁদের নিজস্ব তদন্ত অনুযায়ী, এক হুতি নেতাকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছিল।
জোটের জয়েন্ট ইনসিডেন্টস অ্যাসেসমেন্ট টিমের (জেআইএটি) প্রধান লে. জেনারেল মানসুর আল-মানসুরের ভাষ্য, তদন্তে দেখা গেছে, বাসটিতে হুতি নেতা ও যোদ্ধাদের বহন করা হচ্ছিল। তাই হামলাটি বৈধ সামরিক লক্ষ্যবস্তু ছিল। কিন্তু হামলার স্থানটির কারণে এত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জোটের দাবি, তারা ইয়েমেনে কখনোই ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক লোকজনকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করেনি।
তবে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর অভিযোগ, সৌদি জোট ইয়েমেনে মার্কেট, স্কুল, হাসপাতাল ও আবাসিক এলাকায় নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে আসছে।
ইয়েমেনে চলমান সংঘাতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। আহত প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ। হতাহত ব্যক্তিদের দুই-তৃতীয়াংশই বেসামরিক লোকজন। বেসামরিক লোকদের প্রাণহানির জন্য প্রধানত সৌদি জোটের বিমান হামলাকেই দায়ী করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার। পাশাপাশি হুতিদেরও দায় আছে।
ইয়েমেনের বর্তমান পরিস্থিতিকে বিশ্বের সবচেয়ে বাজে মানবসৃষ্ট মানবিক সংকট বলে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ। গৃহযুদ্ধে ইয়েমেনে লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। দেশটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। সেখানে জরা-রোগ-শোক ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটির জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশের এখন মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।