আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় দায়ে মিয়ানমারের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার।
সম্প্রতি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রধান মিন অং হ্লেইংসহ অন্য ছয় শীর্ষ সেনা জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে জাতিসংঘ এক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই চলতি সপ্তাহে বেশ চাপের মুখে রয়েছে মিয়ানমার। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয়েছে বলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের বেশ কিছু সেনাপোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাখাইনে অভিযান চালায় মিয়ানমার সেনারা। অভিযানের নামে সেখানে রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়, নারীদের ধর্ষণ করা হয়, নির্বিচারে গুলি করে বহু মানুষকে হত্যা করা হয়। ফলে আতঙ্কিত রোহিঙ্গারা নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সংঘটনের অভিযোগে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা। তারা দেশটির আরও পাঁচ শীর্ষ সেনা কর্মকর্তার বিচারের দাবি জানিয়েছে।
সোমবার জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, ব্যাপকহারে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং গণহত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ দোষী সেনা কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিকভাবে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন।
কিন্তু বুধবার মিয়ানমারের তরফ থেকে জাতিসংঘ মিশনের ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জাও হতেই এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা এফএফএম (দ্য ইউএন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন) সংস্থাকে মিয়ানমারে প্রবেশের অনুমতি দেইনি। তাই মানবাধিকার সংস্থার কোন বিশ্লেষণী প্রতিবেদন আমরা গ্রহণ করছি না এবং তাদের কোন সমাধানও মেনে নিচ্ছি না।
তিনি এক্ষেত্রে মিয়ানমারের নিজস্ব ইন্ডিপেন্ডেন্ট কমিশন অব ইনকোয়ারির কথা বলেছেন। জাতিসংঘের সংস্থা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে তাদের এই সংস্থা সাড়া দেবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।