উসমান গণি ইলি:
কক্সবাজর সদর উপজেলার পোকখালী একটি অনুন্নত এলাকা। এখানে নেই শিক্ষাদীক্ষার তেমন সুযোগ। মাধ্যমিক পর্যায়ের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান বলতে নেই। গ্রামীণ অবকাঠামো খুবই অনুন্নত। যোগাযোগ ব্যবস্থাও নাজুক। সব মিলিয়ে পোকখালী ইউনিয়ন বলতে গেলে একটা অজপাড়া গায়ের নাম।
এসব কিছুর মাঝেও গুটি গুটি পায়ে এগুচ্ছে অনুন্নত জনপদ পোকখালী। ইতোমধ্যে এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বেশ কয়েকটি শিশুশিক্ষালয়। গ্রামের ভেতরে গড়ে উঠছে নুরানী কেজি মাদরাসা। শিশুরা ঝুঁকছে শিক্ষায়। ছড়িয়ে পড়ছে শিক্ষার আলো।
তার মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান পোকখালী আইডিয়াল কেজি স্কুল। ২০০৯ সালে এলাকার শিক্ষা বঞ্চিত শিশুদের আদর্শ ও মানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্নে ৪০ শতক জমিতে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন হাফেজ আলহাজ্ব আবু বকর।
প্রতিষ্ঠার ৩ বছর পর ২০১৩ সালে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেয় ৪১ জন।
সেখান থেকে ৮ জন জিপিএ-৫ সহ শতভাগ পাশ করেছে। বর্তমানে নার্সারী থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ৬ শতাধিক ছাত্রছাত্রী রয়েছে।
১৭ জন শিক্ষক দিনরাত আন্তরিকতা দিয়ে পাঠদান করে যাচ্ছে। কয়েকটি শিক্ষক পদ খালি রয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা হাফেজ আলহাজ্ব আবু বকর সার্বক্ষণিক পড়ালেখা তদারক করেন।
স্কুলের বাৎসরিক কোনো আয় নেই বললেই চলে। শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো ধরনের ‘উপবৃত্তি’ নেই। শিক্ষার্থীর জন্য টিউশন ফি ব্যবস্থা করেন স্কু্ল কমিটি ও শিক্ষকরা।মাঝে মধ্যে এগিয়ে আসে স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা। তবে তা যথেষ্ট নয়।
১৪ আগষ্ট সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের বেহাল দৃশ্য। তবুও থেমে নেই। শিক্ষার মান উন্নয়ন হচ্ছে দিন দিন।জিপিএ-৫ সহ পাশের হার শতভাগ অর্জনের ধারাবাহিক কৃতিত্ব রয়েছে স্কুলটির নামের পাশে।
বর্ষাকালে টিনের চাল থেকে বৃষ্টির পানি পড়ার কারণে শিক্ষার্থীদের মাথায় ছাতা দিয়ে দাড়িয়ে ক্লাস করতে হয়। অনেক সরঞ্জাম ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়ছে।শিক্ষকদের অফিস ঘরটি নামেমাত্র।
স্থানীয়দের সহায়তায় নির্মিত ১৩ কক্ষ বিশিষ্ট টিনের ঘরটির নাজুক দশা। অনুপযুগি হয়ে পড়েছে ব্যবহারের। সামান্য বৃষ্টি নামলে শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে পাঠদানে ব্যাঘাত হয়। শ্রেণী কক্ষ সংস্কার খুবই জরুরী।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য মামুন আল রশিদ বলেন, শত প্রতিবন্ধকতায় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আইডিয়াল কেজি স্কুল। কিছু সমস্যা স্কুলটির যাত্রাপথ টেনে ধরছে। সামনে এগুতে কষ্ট হচ্ছে। শিক্ষকদের বেতন নিয়ে কষ্ট পেতে হয় তাদের।
প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম জানান, স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা অনেক সহায়তা করেছেন। এখনো করছেন। তাদের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নামেমাত্র যে ফি নেয়া হয় তা দিয়ে সব শিক্ষকের বেতন তো দূরের কথা-খুটিনাটি খরচ মেটানো দায় পড়ে। বর্ষা আসলে করুণ দশায় পড়তে হয়। দ্রুত স্কুলের সংস্কার দরকার বলে মনে করেন প্রধান শিক্ষক।
অন্ধকারে আলোর বাতি পোকখালী আইডিয়াল কেজি স্কুল
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে
