মো: ফারুক, পেকুয়া
রাজাখালী বহুমূখী বেশারাতুল উলুম ইসলামিয়া ফাজিল /স্নাতক মাদ্রাসা পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের আরবশাহ বাজার-বাঁশখালী সীমান্তে একটি ইসলামি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিশু শ্রেণি থেকে শুরু করে ফাজিল/স্নাতক পর্যায়ে মাদ্রাসা শিক্ষা দেওয়া হয়। ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ মাদ্রাসাটি ১৯৮৪সালে এমপিও কার্যকর হয়। বর্তমানে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষসহ ২৪জন শিক্ষক শিক্ষাকতায় আর সাড়ে ১২শ শিক্ষার্থী এ মাদ্রাসায় শিক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে। রয়েছে আবাসিক শিক্ষা ক্ষেন্দ্র ও কারুকার্য বিশিষ্ট মসজিদ। শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার মানের ক্ষেত্রে উপজেলায় মাদ্রাসাটি শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে পেকুয়ায়।
মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, ১৯৫০ সালে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও দানবীর মরহুম আলহাজ¦ মুহাম্মদ কবির চৌধুরী ও আলহাজ¦ আহমদ কবির চৌধুরী মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৩-১৯৬৪ সালে মাদ্রাসা প্রথম স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয়। ফাজিল/কামিল শিক্ষাবর্ষ চালু করে ১৯৭৭-৭৮ সালে। দাখিল থেকে ফাজিল পর্যন্ত এমপিও ভুক্ত হয় ১৯৮৪ সালে।
বর্তমানে রয়েছে ১জন অধ্যক্ষ, ১জন উপাধ্যক্ষ, সহকারী অধ্যাপক ৩জন, প্রভাষক ৮জন, সহকারী শিক্ষক ৬জন, সহকারী মৌলভী ২জন, জুনিয়র শিক্ষক ৩জন, গ্রন্থাগারিক ১জন, ৩য় শ্রেণির কর্মচারী ২জন, ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী ৪জন। সহকারী শিক্ষক ইংরেজি, সহকারী শিক্ষক ইসলাম ও ইবতেদায়ী প্রধানের সংকট রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাখিল (১ম থেকে ১০ম) ৮৯০ জন, আলিম ২০০ জন, ফাজিল/স্নাতক ১৫৪ জন। বিশাল ৩টি ভবনে পাঠদান চললেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ায় বর্তমান সরকার ২ কোটি ৫০লাখ টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মিত হচ্ছে।
বিগত ৩বছরে শিক্ষার্থীর ফলাফলও আশানুরুপ। ২০১৫/১৬/১৭ সালে ইবতেদায়ী পাশের হার শতকরা হিসাবে যথাক্রমে ৯৯, ১০০ ও ৯৯। জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরিক্ষায় ২০১৫/১৬/১৭ সালে পাশের হার শতকরা হিসাবে যথাক্রমে ৯৮,৯৮ ও ১০০। দাখিল পরিক্ষায় ২১০৫/১৬/১৭/১৮ সালে পাশের হার শতকরা হিসাবে যথাক্রমে ৯৮,৮৮, ৮২ ও ৭২। আলিম পরিক্ষায় ২০১৫/১৬/১৭/১৮ সালে পাশের হার শতকরা হিসাবে যথাক্রমে ৯৭, ৯৮,৬৪ ও ৯২। ফাজিল পরিক্ষায় ২১০৫/১৬/১৭/১৮ সালে পাশের হার শতকরা হিসাবে যথাক্রমে ৯৭,৭৬,১০০ ও ১০০।
মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, রাজাখালী বহুমূখী বেশারাতুল উলুম ইসলামিয়া ফাজিল ¯œাতক মাদ্রাসা আমার প্রাণের সাথে মিশে গেছে। বিগত ১৯বছর ধরে শিক্ষাকতা করে যাচ্ছি। সমস্ত সুঃখ দুঃখের স্মৃতি জড়িত। মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এ,জে,এম গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী অনেক আন্তরিক মাদ্রাসাটিকে শ্রেষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তুলতে। যখন তিনি আসতে পারেননা তখন খোঁজ খবর নেন। সকলের সাথে আন্তরিক পরিবেশে কথা বলেন। মাদ্রাসার সমস্যার কথা শুনার সাথে সাথে সমাধানের চেষ্টা করেন। বর্তমান অধ্যক্ষ কপিল উদ্দিন ফারুকী অনেক ভাল মনের মানুষ। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে মিশে থাকেন সবসময়। যার কারণে ফলাফল অনেক ভাল হয়। বর্তমানে আমরা প্রতি ক্লাসে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সাথে যৌথ মিটিং করি। জঙ্গিবাদ, মাদক, বাল্য বিয়ের ব্যাপারে আলাপ হয় সব সময়। প্রত্যেকটি জাতীয় দিবস পালন করা হয়। আগামী ১৫ আগষ্ট জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর শাহাদত দিবস শোকাহত পরিবেশে পালন করা হবে। আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে ভবন বরাদ্ধ দেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।
তিনি আরো বলেন, ৯আগষ্ট ফাজিল ৩য় বর্ষের পরিক্ষার্থীদের বিদায় ১ম ও ২য় বর্ষের পরিক্ষার্থীদের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। উপস্থিত থাকবেন সভাপতি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তা থেকে শুরু করে দাতা সদস্য, শিক্ষক, অভিভাবক, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীরা। তিনি এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।