এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া:
সদ্যঘোষিত চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংর্ঘষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দেয় বর্তমান কমিটির নেতারা। অন্যগ্রুপে ছিল পদ বঞ্চিতরা। ঘটনার সময় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংর্ঘষ চলাকালে চকরিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বৃহস্পতিবার বিকালে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া শহীদ আবদুল হামিদ পৌর বাসটার্মিনাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আগের কমিটি বিলুপ্তির প্রায় আটমাস পর ৩১ জুলাই চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি অনুমোদন দেয় কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ । কমিটিতে মোহাম্মদ মারুফ সভাপতি ও আরহাম মোহাম্মদ রুবেল সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কমিটিতে সহ-সভাপতি হয়েছেন সাদ্দাম হোসেন রুবেল, তোয়াছিন আনোয়ার জিহান, সাইফুল ইসলাম ও আবু ইউসুফ জয়। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে বুলেট ফারুক, আকিদ হোসেন সাজিদ এবং জাহেদুল ইসলামকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। একই সাথে চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাজিদ হোসেন সাকিব ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন মিঠু এবং সাবেক সহ-সভাপতি তারেক রাহাতকে জেলা ছাত্রলীগের সদস্য করা হয়েছে।
কমিটির অনুমোদনের পর বৃহস্পতিবার বিকালে সদ্য ঘোষিত উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে চকরিয়া শহীদ আবদুল হামিদ পৌর বাসটার্মিনালে নেতাকর্মীরা সংবর্ধনা দেয়ার প্রস্ততি নিচ্ছিলেন। ওইসময় নতুন সভাপতি-সম্পাদকের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে কক্সবাজার থেকে গাড়িবহর নিয়ে বাসটার্মিনাল এলাকায় পৌছলে ছাত্রলীগের পদ বঞ্চিত পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত হয়ে সংর্বধনা অনুষ্ঠান প্রতিহত করার চেষ্ঠা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সংর্বধনার পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা। ওইসময় দুইপক্ষের নেতাকর্মীরা মহাসড়কে জড়ো হয়ে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েন। ঘটনার সময় অনুষ্ঠানে সববেত নেতাকর্মীরা দিকবেদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। মুহুর্তের মধ্যে পৌরশহরে দোকানপাট ও যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদ্য ঘোষিত উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবীতে পদ বঞ্চিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আবদুল্লাহ আল আনাছের নেতৃত্বে পৌরশহরের চিরিঙ্গা কাঁচাবাজারের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এছাড়াও চকরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের গেইটের সামনেও টায়ার জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এসময় তারা ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবী জানিয়ে মিছিল করতে থাকে।
ঘটনার ব্যাপারে জানতে অনুমোদিত কমিটির কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মারুফ ও সাধারণ সম্পাদক আরহান মাহমুদ রুবেলের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অপরদিকে ছাত্রলীগের পদ বঞ্চিত সভাপতি প্রার্থী তারেকুল ইসলাম রাহাত বলেন, ঘোষিত ছাত্রলীগের কমিটি চকরিয়ার ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না। যাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে তাদের রাজনীতিতে কোন অবদান এবং তাদের মধ্যে দুই সন্তানের পিতা ও রয়েছে বলে দাবী করেন। তৃনমূল ও ত্যাগী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে অবৈধ কমিটিকে প্রতিহত করবে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দ গতকাল বিকালে কক্সবাজার থেকে চকরিয়ায় আসার পথে পদ বঞ্চিতরা বাধা দেয়ার চেষ্ঠা করে। খবর পেয়ে ওইসময় চকরিয়া থানা পুলিশের একটিদল ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুইপক্ষকে শান্ত করেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।