অর্পন বড়ুয়া, উখিয়া থেকে ফিরে :

প্রতিদিনের মতো অটোরিক্সায় করে নিজের কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন রোজিনা আক্তার রুজি। একটি বেসরকারী এনজিও সংস্থায় কাজ করতেন তিনি। বালুখালী ট্রানজিট পয়েন্ট এলাকায় বাঁশবাহী ট্রাক খাদে পড়লে, চাপা পড়ে কয়েকটি অটোরিক্সা। ঘটনাস্থলে প্রান হারায় রোজিনাসহ আরো ৩ জন।
এমন দূর্ঘটনা যেনো ব্যস্ততম উখিয়া-টেকনাফে এখন নিত্যদিনের চিত্র। অনিয়ন্ত্রিত যান চলাচল এবং যানবাহন নিয়ন্ত্রনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ না থাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় অস্বাবিক মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে এমনটাই মত জেলার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের।
সোমবার (১৬ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ট্রানজিট পয়েন্টে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক সংলগ্ন কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে এই দূর্ঘটনাটি ঘটে। এতে আহত হয়েছে আরো অনেকেই। তবে গুরুতর আহত ৪ জনকে বালুখালী রেডক্রিসেন্ট ও রেড ক্রস হসপিটালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এনজিও কর্মী রোজিনা আক্তারের বাড়ি উখিয়া উপজেলার বালুখালী পানবাজার এলাকায়। কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না রোজিনা আক্তারের এই মৃত্যু। শোকে কাতর তার স্বজন ও সহকর্মীরা। রোজিনা আকতারের সহকর্মী বেসরকারী এনজি সংস্থার প্রোগ্রাম অফিসার ছৈয়দ আলম জানিয়েছেন, রুজি ওই এনজিওতে রোহিঙ্গাদের শিক্ষা প্রকল্পের কাজ করতেন। তার কর্মস্থল ছিল কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। বাড়ি থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথেই সে এই দূর্ঘটনার শিকার হয়েছে। কিন্তু ভাগ্যবশত রুজির সাথে থাকা আড়াই বছর বয়সী সন্তান দূর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকাল ১০টার দিকে অতিরিক্ত বাঁশ বোঝাই ট্রাকটি কক্সবাজার থেকে বালুখালী যাচ্ছিল। ঘটনাস্থলে পৌছুঁলে ট্রাকটি হেলে পড়ে যেতে থাকলে ট্রাকের চালক ও সহকারী ট্রাক থেকে নেমে যায়। এসময় পাশে থাকা ৩টি অটোরিক্সার উপর হেলে পড়ে ট্রাক। ফলে অটোরিক্সার ৪ যাত্রী ঘটনাস্থলে মারা যায়। আহত হয় অনেকেই।
কক্সবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরাজুল হক টুটুল জানিয়েছেন, ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে এবং নিহত দুই রোহিঙ্গাসহ চারজনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আহতেদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, এই মাসে কক্সবাজারের বিভিন্ন সড়কে দূর্ঘটনায় অন্তত ১২ জনের প্রানহানি ঘটেছে বলে জানান পুলিশ। আহত হয়েছে অন্তত ২৫ জন।