আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি
বান্দরবানের আলীকদমে ত্রাণের ঢেউটিন বিক্রির অভিযোগে সদর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য সন্তোষ কান্তি দাশের বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার রাতে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী সুজন দাশ। মামলা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার আমতলী পাড়া থেকে চোরাই পথে বিক্রি হওয়া ৪ বান ত্রাণের ঢেউটিন উদ্ধার করে পুলিশ।
জানা গেছে, গত ৬ জুলাই ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দে আলীকদম উপজেলায় ৫২ বান ঢেউটিন ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
প্রাপ্ত অভিযোগে প্রকাশ, দুঃস্থদের তালিকায় একবান ঢেউটিন ও নগদ ৩ হাজার টাকা পান ১নং আলীকদম ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের দানু সর্দার পাড়া আমিরুজ্জামানের স্ত্রী গুলতাজ বেগম। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অফিস থেকে যথারীতি ত্রাণের ঢেউটিন ও নগদ অর্থ গ্রহণ করেন গুলতাজ বেগম। এসব ঢেউটিন ও নগদ অর্থ ১নং আলীকদম ইউপি’র ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার সন্তোষ কান্তি দাশ গুলতাজ বেগমের কাছ থেকে কেড়ে নেয় বলে গত বুধবার ইউএনও অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের সূত্রধরে যুবলীগ সভাপতি জিহাদ চৌধুরী ও উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সৌরভ পাল ডালিম ত্রাণের ঢেউটিনগুলি উদ্ধারে অনুসন্ধান শুরু করেন।
ছাত্রলীগ সভাপতি সৌরভ পাল ডালিম জানান, তারা অনুসন্ধানের একপর্যায়ে এসব ঢেউটিন ৫নং ওয়ার্ডের জনৈকা আনছারু বেগমের বাড়িতে রক্ষিত আছে বলে জানতে পারেন। পরে খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক দুংড়িমং মার্মাসহ নেতৃস্থানীয় অনেকেই সেখানে উপস্থিত হন। ঘটনাস্থল আনছারু বেগমের বাড়ির সিলিং থেকে পুলিশ ৪ বান ত্রাণে ঢেউটিন উদ্ধার করে।
আনছারু বেগম জানান, তিনি ইউপি মেম্বার সন্তোষ কান্তি দাশ থেকে প্রতিবান ৩ হাজার দরে ৯ হাজার টাকায় তিনি ৩ বান ঢেউটিন ক্রয় করেন। চার বানের মধ্যে একবান সে ত্রাণ হিসেবে পেয়েছেন।
অভিযুক্ত মেম্বার সন্তোষ কান্তি দাশ বলেন, ত্রাণের ঢেউটিনগুলি তিনি বিক্রি করেননি। তবে যারা ত্রাণ পেয়েছিল তাদের বিক্রির সময় তিনি মধ্যস্থতা করেছেন।
এদিকে, ত্রাণের ঢেউটিন বিক্রির অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ-সহকারি প্রকৌশলী সুজন চৌধুরী। এতে আসামী করা হয় ইউপি সদস্য সন্তোষ কান্তি দাশ ও ঢেউটিন ক্রেতা আনছারু বেগমকে। পুলিশ আনছারু বেগমকে শুক্রবার সকালে কোর্টে চালান করেছে। অভিযুক্ত ইউপি মেম্বার পলাতক রয়েছে।
ইউএনও মো. নাজিমুল হায়দার বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানান, অভিযুক্ত ইউপি মেম্বারকে দাপ্তরিকভাবে নোটিশ করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।