রাশিয়া বিশ্বকাপের জমজমাট আসরের অর্ধেক পথ পাড়ি দেয়া হয়ে গেছে। ১৪ জুন লুঝনিকি স্টেডিয়ামে দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ ফুটবল বিশ্বকাপের পর্দা উন্মোচন। রাশিয়ার ১১টি শহরের ১২টি ভেন্যুতে আয়োজন বিশ্বকাপের ২১তম আসরের।
দেখতে দেখতে বিশ্বকাপের অর্ধেক সময় এবং তিনভাগের দুই ভাগ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে। বিশ্বকাপে অনুষ্ঠিত হবে মোট ৬৪টি ম্যাচ। এর মধ্যে গ্রুপ পর্বের ম্যাচই ৪৮টি। ইংল্যান্ড-বেলজিয়াম এবং পানামা-তিউনিসিয়া ম্যাচের মধ্য দিয়ে শেষ হলো গ্রুপ পর্বের লড়াই।
বিশ্বকাপের শুরু থেকেই অঘটন আর শ্বাসরূদ্ধকর একটি পরিস্থিতি। প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের বিপক্ষে অবিশ্বাস্যভাবে ৫-০ গোলে জয় পায় রাশিয়া। পরেরদিন ইরার-মরক্কো ম্যাচ উপহার দিয়েছিল দারুণ একটি খেলা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আত্মঘাতি গোলে হেরে যায় মরক্কো। পরের ম্যাচে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর হ্যাটট্রিক। অসাধারণ একটি ম্যাচে স্পেনের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র। পরেরদিন আর্জেন্টিনার আইসল্যান্ডের কাছে হোঁচট খেলো আর্জেন্টিনা।
এরপর মাঠে নেমেই অঘটনের শিকার জার্মানি। মেক্সিকোর কাছে ১-০ গোলে হার। রাতের খেলায় ব্রাজিল ১-১ গোলে ড্র করলো সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে। প্রথম পর্বের শুরুতেই বিশ্বকাপটা জমে উঠেছিল। টান টান উত্তেজনা আর শ্বাসরূদ্ধকর একেকটি ম্যাচ। শেষ পর্যন্ত ইনজুরি সময়ে গোল। একের পর এক টাইব্রেকার আর ভিডিও অ্যাসিন্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) পদ্ধতি, সত্যিই এবাররে বিশ্বকাপকে মনে রাখবে সবাই।
যে ১৬টি দলের বিদায় নিশ্চিত হয়েছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। ২০১০ সালে ইতালি, ২০১৪ সালে স্পেনের পর ২০১৮ সালে এসে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বিদায় নিয়েছে জার্মানরা। শেষ ম্যাচে তারা হেরেছে (২-০ গোলে) দক্ষিণ কোরিয়ার মত দলের কাছে। জার্মানি ছাড়া বাকি ফেবারিট দল সবাই উঠেছে দ্বিতীয় রাউন্ডে।
যে ১৬টি দলের বিদায় নিশ্চিত হয়েছে তারা হচ্ছে- ‘এ’ গ্রুপ থেকে মিসর, সৌদি আরব। যদিও শেষ ম্যাচে মিসরের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল সৌদি আরব। ‘বি’ গ্রুপ থেকে মরক্কোর বিদায় আগেই নিশ্চিত হলেও ইরান ঘাম ঝরিয়ে ছেড়েছে স্পেন-পর্তুগালের। শেষ পর্যন্ত বিদায় নিয়েছে মরক্কো এবং ইরান।
‘সি’ গ্রুপ থেকে পেরু বিদায় নিশ্চিত করেছে সবার আগে। শেষ রাউন্ডের ম্যাচে এসে পেরুর কাছে হেরে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পথ বন্ধ হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার। পেরু এবং অস্ট্রেলিয়া বিদায় নেয় প্রথম রাউন্ড থেকেই। দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে ফ্রান্স-ডেনমার্ক। ‘ডি’ গ্রুপে আর্জেন্টিনা ছিল খাদের কিনারে। তবে শেষ ম্যাচে এসে নাইজেরিয়াকে হারিয়ে টিকে যায় আর্জেন্টাইনরা। বিদায় নেয় নাইজেরিয়া এবং আইসল্যান্ড। দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে ক্রোয়েশিয়া এবং আর্জেন্টিনা।
‘ই’ গ্রুপেও ব্রাজিল ছিল অনেকটা খাদের কিনারায়। শেষ পর্যন্ত সার্বিয়াকে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করে ব্রাজিলিয়ানরা। কোস্টারিকার সঙ্গে ড্র করলেও দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হয় সুইজারল্যান্ডের। বিদায় নেয় কোস্টারিকা এবং সার্বিয়া। ‘এফ’ গ্রুপেই সবচেয়ে বড় অঘটনের জন্ম নেয়। মেক্সিকোর কাছে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে সুইডেনের কাছে জিতলেও শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে যায় জার্মানরা।
‘জি’ গ্রুপ থেকে আগেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় তিউনিসিয়া এবং পানামার। দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে যায় বেলজিয়াম এবং ইংল্যান্ডের। এইচ গ্রুপে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নাটকীয়তা অপেক্ষা করছিল। শেষে সেনেগাল এবং জাপান দুই দলই হেরে যায়। কলম্বিয়া হয়ে যায় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। ফেয়ার প্লে রুলসে বিদায় নেয় সেনেগাল। দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে যায় জাপান। বিদায় নেয়ার তালিকায় রয়েছে পোল্যান্ডও।
এক নজরে জেনে নেয়া যাক যারা যারা বিদায় নিয়েছে- মিসর, সৌদি আরব, ইরান, মরক্কো, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, নাইজেরিয়া, সার্বিয়া, কোস্টারিকা, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া, তিউনিসিয়া, পানামা, সেনেগাল এবং পোল্যান্ড।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।