শাহনেওয়াজ জিল্লু, কক্সবাজার ॥

কথায় আছে পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসুতি। সাথে যদি যোগ হয় সৎ সাহস আর বুদ্ধিদীপ্ত তারুণ্য তাহলেতো সোনায় সোহাগা। এমন একজন তরুণ নেতৃত্বের কর্মপ্রচেষ্ঠার সুফল ভোগ করতে যাচ্ছে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের আপামর জনসাধারণ। প্রায় ২২ হাজার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও ৬ হাজার ভোটার রয়েছে এই ওয়ার্ডে। অনেকটাই পিছিয়ে পড়া এজনগোষ্ঠীর কল্যাণে করে যাওয়া একের পর এক ধারাবাহিক উন্নয়ন কর্মকান্ডের দরুন ওয়ার্ডটি ক্রমাগত সমৃদ্ধশালী হয়েছে। এছাড়াও উন্নয়ন সাধিত হয়েছে শিক্ষাদীক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তিতেও।

সরেজমিন, এলাকার হালকাকারা, মৌলভীরচর, হিন্দুপাড়া, জালিয়া পাড়া, সাম্বির পাড়া ও সওদাগর পাড়ায় প্রায় ২০/২৬ মিটার প্রসস্ত সড়ক ও ৪/৬ মিটার প্রসস্ত ড্রেইন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।

ইতোমধ্যে অত্র ওয়ার্ডে যেসব কর্মযজ্ঞ সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে তার মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, কেন্দ্রীয় হরিমন্দির সড়কটি আর.সি.সি করণ, আড়াই কিলোমিটার ওয়াসা লাইন তৈরি প্রস্তুত করণ, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিদ্যুৎ খুটি স্থাপন, অসহায় গরীব দুস্থদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করণ, বায়তুর রহমত জামে মসজিদের পুকুর ভরাট। মসজিদটি ডিজিটাল করণের উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাস্তবায়নসহ বর্তমানে চলমান রয়েছে আরোও ১২ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ। এনিয়ে এলাকাজুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে খুশির আমেজ বয়ে যাচ্ছে। এনিয়ে স্থানীয় জালিয়া পাড়ার মৃত নুরুল হাকিমের স্ত্রী ইসমত আরা (৪৫) জানান, পূর্বে এলাকাটি অনেক বেশি অবহেলিত ছিলো। হাটার রাস্তা পর্যন্ত ঠিক ছিলো না। প্রত্যেকটি সড়কেই কাদামাটি থাকতো। সাধারণ মানুষ খুব কষ্ট করে পায়ে হেটে চলাফেরা করতো। যানবাহন চলাচল উপযোগী কোনো সড়ক এখানে ছিলো না। বিশেষ করে অসুস্থ রোগী এবং গর্ভবতী মহিলারা এখানে প্রতিনিয়তই দুর্বিসহ পরিস্থিতির শিকার হতো। কিন্তু বর্তমানে কাউন্সিলর আসার পর থেকে যেভাবে রাতারাতি রাস্তা নির্মাণে হাত দিয়েছে এতে আমাদের কষ্ট অনেকটাই লাঘব হয়েছে। তিনি আরোও জানিয়েছেন, এলাকার এতো উন্নয়ন হবে আমরা তা আগে কখনো ভাবিনি। এছাড়াও হালকাকারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এমবিবিএস ডাক্তারের অধীনে বিনা খরচে চিকিৎসা সেবার বিষয়টিও উল্লেখ করেন ইসমত আরা।

স্থানীয় যুবক খোকন সিকদার জানান, উন্নয়ন কর্মকান্ড শুরু হওয়ায় আমরা নিজেদের খুবই ভাগ্যবান মনে করছি। উন্নয়নের প্রয়োজনে আমরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও কাজ করতে রাজি। সেই সাথে আমরা সমগ্র এলাকাবাসী ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে সর্বাত্মক সহযোগীতা করে যাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও করে যাবো।

এদিকে এসব উন্নয়ন কর্মকান্ডের ৭০ শতাংশই ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। বাকীটুকু সম্পন্ন হলে পৌর চকরিয়ার অত্র ওয়ার্ডবাসী দেখতে পাবেন একটি সুদর্শন ওয়ার্ড।

আর এতসব উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ যার বুদ্ধিদীপ্ত প্রচেষ্টা ও নিরলস পরিশ্রমের ফসল তিনি হলেন, অত্র ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর সাবেক ছাত্রনেতা ও তরুণ রাজনীতিবিধ রেজাউল করিম। সুদক্ষ এই তরুণ চকরিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডে সর্বশেষ পৌরসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই এই তরুণ নিজেকে আপামর জনসাধারণের শ্রমিক হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে এসেছে। এবং প্রত্যেকটি কাজ সফলতার সাথে সমাপ্তি করেছে।

ওয়ার্ডের উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সবসময় নিজেকে জনগণের সেবক হিসেবে ভেবেছি। কখনো নিজেকে নেতা ভাবিনি। পৌর মেয়র ও বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছি। তারা আমাকে পর্যাপ্ত সহযোগীতা করেছে। উন্নয়নের কাজে যখন যেভাবে তাদের কাছে এলাকার অপূর্ণাঙ্গতা, অসংলগ্নতা তোলে ধরেছি তখনই তারা আমাকে সহযোগীতা করেছে। সর্বশেষ কিছুদিন আগেও ১২ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের মতো সহযোগীতা পেয়েছি। পৌর মেয়র সরাসরি এগুলো তদারকি করছেন। এর আগেও œ সাড়ে ৭ কোটি, ৫ কোটি টাকার প্রকল্পসহ আরোও বিভিন ছোট ছোট প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে সমাপ্ত করেছি। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের এমজিএসপি, এলজিএসপি, এলজিআইডি ও টাউন প্রজেক্টের সমস্ত সুযোগ সুবিধা আদায় করে এলাকাবাসীকে উন্নয়ন উপহার দিয়েছি। আমার ওয়ার্ডটি পৌর এলাকার সদর ওয়ার্ড বলা চলে। কর্মস্থল হিসেবে সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন পৌর এলাকায় নিরাপদ এবং সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন আবাসন চায়। কিন্তু ইতিপূর্বে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না থাকায় এখানে এধরণের মানুষ বসবাস করতো না। এমনকি এলাকার মানুষগুলোই বসবাস করতে অনেক কষ্ট হয়ে যেতো। এখন দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখানে স্বাচ্ছন্দে বসবাস করছে। একারণে এটাকে ‘কসমোপলিটন ওয়ার্ড’ও বলা চলে। তিনি আরোও জানান, ইদানিং কতিপয় ইর্ষান্বিত মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রও করে যাচ্ছে। এবং তারা চরম মিথ্যাচারেও মেতে উঠেছে। তবে আমি এসবের প্রতি বিন্দু পরিমাণও ভ্রুক্ষেপ করি না। আমি জনগণের জন্যই কাজ করেছি এবং করে যাচ্ছি। সুতরাং জনগণই আমার শক্তি।

উল্লেখ্য, তরুণ রাজনীতিবীদ রেজাউল করিম বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ চকরিয়া পৌর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ইতিপূর্বে তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চকরিয়া পৌরসভা শাখার সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক, পৌর ২নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনসসহ বিগত ১৯৯৭ সন থেকে এক টানা ২১ বছর ধরে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শে একনিষ্টভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

এছাড়াও সামাজিকভাবে কাউন্সিলর রেজাউল করিম একাধারে পৌর ২নং ওয়ার্ড শাহ মজিদিয়া কমপ্লেক্স পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক, গারাঙ্গীয়া দরবারের বড় হুজুর কেবলা ও ছোট হুজুর কেবলা ( রাঃ) চকরিয়া উপজেলা তরিকত কমিটির সেক্রেটারী, চিরিংগা পুরাতন বাসসষ্টেশন জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য, হালকাকারা বায়তুর রহমত কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ ২নং ওয়ার্ডের সকল স্কুল,মসজিদ, মাদরাসাসহ সামাজিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

ওয়ার্ডটিতে যেসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো রয়েছে তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ক্যান্টনমেন্ট সড়ক, পিডিবি কার্য্যালয়, চিরিঙ্গিা বাজার, কেন্দ্রিয় হরি মন্দির, মাল্টিমিডিয়া স্কুল, ডিজিটালাইজ্ড বায়তুর রহমত জামে মসজিদ ও শতাধিক শপিংমল। এছাড়াও সম্প্রতি ১২ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত হচ্ছে প্রসস্থ আর.সি.সি সড়ক ও ড্রেইন নির্মাণ। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এসব কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তরুণ সমাজ সেবক কাউন্সিলর রেজাউল করিম। আর কাজগুলো শেষ হলেই দৃশ্যমান হবে পৌর চকরিয়ার সুদর্শন ‘কসমোপলিটন’ ওয়ার্ডের।