হাবিবুর রহমান সোহেল, নাইক্ষ্যংছড়ি:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের মঞ্জয়পাড়ায় পাহাড় কাটতে গিয়ে মাটিচাপা পড়ে তিন শ্রমিক নিহতের ঘটনা, বাগান মালিক একই গ্রামের রাজেন্দ্র বড়–য়ার ছেলে সুপায়েন বড়–য়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ঘুমধুম গ্রাম পুলিশ প্রধান ছৈয়দ আলম বাদি হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় দন্ডবিধি ৩০৪(ক)/১১৪ তথসহ ভূমি ইমারত আইনের ১২(১১) ধারায় মামলাটি রুজু করেন। মামলার বাকি তিনজন আসামি হলেন-সুপায়েন বড়–য়ার ভাই রিটন বড়–য়া, ভুট্টো বড়–য়া ও প্রতিয়া বড়–য়া। তবে গতকাল পর্যন্ত তাঁদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
অন্যদিকে এ ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন, বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াসিন আরফাত, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল, বান্দরবান ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের এডি ইকবাল হোসেন ও স্থানীয় ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গির আজিজ। তদন্ত কমিটির সদস্যরা গতকাল মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে যান।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি শেখ আলমগীর বলেন, মাটিচাপায় তিন শ্রমিক নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিরা ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
তদন্ত কমিটির সদস্য ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম সরওয়ার কামাল বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি অধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। দ্রæত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবো। আজ বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। তিনি নিহত এবং আহত পরিবারের সদস্যদেরকে নগদ অর্থও বিতরণ করবেন।’
উল্লেখ্য, গত সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঘুমধুম ইউনিয়নের মঞ্জয়পাড়ায় পাহাড় কাটার সময় মাটি চাপা পড়ে পাঁচ শ্রমিক নিখোঁজ হন। ওই পাহাড়টি বন বিভাগ থেকে লিজ নিয়ে স্থানীয় সুপায়েন বড়–য়ার পরিবার অবৈধভাবে ড্রেন নির্মাণ করছিল। পরে স্থানীয়রা নুর মোহাম্মদ (২৫) নামে একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজারে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেন। ঘটনার সাত ঘন্টা পর সন্ধ্যায় নুরুল হাকিমকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করেন দমকলবাহিনীর সদস্যরা। দীর্ঘ উদ্ধার তৎপরতা শেষে রাত সাড়ে আটটায় বাকি তিন শ্রমিক- মো. আবু (৩০), সোনা মেহের (৩৫) ও জসীম উদ্দিনের (২৫) লাশ উদ্ধার করা হয়।