জে,জাহেদ :
সম্মেলন শেষে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা হইনি।পরে দলীয় সভানেত্রীর হাতে ন্যস্ত হয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের নাম ঘোষণার। তখনেই একটি মহল অপপ্রচার শুরু করে ছাত্রনেতাদের নামে।
যাদের নাম বেশ আলোচনায় ও গুডবুকে ঠাঁই পেয়েছে মুলত তাদের নামে শুরু হয় নানা অপপ্রচার। তাদেরই একজন চট্টগ্রামের মেধাবী তরুণ আদিত্য নন্দী। যার রাজনীতির হাতেখড়ি স্কুল জীবন থেকেই। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে।
সাম্প্রতিক সময়ে তাকে নিয়ে নানা অপপ্রচার ও অপ্রাসঙ্গিক বির্তক হয়। যার জবাব দিলেন ৩ঘন্টা আগে নিজের ফেসবুক স্টাটাসে। যা পাঠকের প্রয়োজনে হুবহু তুলে ধরা হল–
“নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আমি। বাবা-মায়ের ইচ্ছা পড়ালেখা শিখে মানুষের মত মানুষ হওয়া। বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে আমাদের দু’ভাই এর ধ্যান-জ্ঞান শুধু পড়ালেখা। বাবা-মায়ের কষ্ট আমরা দু’ভাই দেখেছি, এখনও দেখছি।
বাবার হাড় ভাঙা খাটুনির উপর ভর করে আমার আর আমার দাদার বেড়ে উঠা, পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া, কৃতিত্বের সাথে এসএসসি-এইচএসসি পাশ করা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম ্ হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ-এ ভর্তি হওয়া, ২০০৮-এ তখন দেশরতœ শেখ হাসিনা কারান্তরীণ- জগন্নাথ হলে উঠেই নেত্রীর মুক্তি আন্দোলনে শরিক হওয়া।
একদিকে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া অন্যদিকে নেত্রীর মুক্তি ও অবরুদ্ধ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়া, রাজনীতি না বোঝা বঙ্গবন্ধু-অনুরক্ত বাবা-মা সেই ক্রান্তিকালে কিভাবে আমাকে সেদিন প্রেরণা যুগিয়েছিল- তা বলে বোঝাতে পারবো না।
বাবার ঘাম ঝরানো কষ্টার্জিত টাকা নিয়ে পড়ালেখা করছি, রাজনীতি করছি; আমারও ভিতরে রক্তক্ষরণ, বাবার কষ্ট লাঘবের জন্য, নিজের খরচ নিজে জোগাবার জন্য শুরু করলাম টিউশনি।
বলতে দ্বিধা বা লজ্জা নাই, নিজের খরচ চালানোর জন্য এখনও টিউশনি করছি। আর সেই আমি হয়ে গেলাম একটা বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক?
আমার বন্ধুর ব্যবসাকে আমার নিজের ব্যবসা বলে চালিয়ে দেওয়া হলো। আমার বন্ধুর নাম এস এম তারিকুর রহমান। যে অপপ্রচার চালিয়েছিলেন, সে হিসাবে মিলিয়ে নিন:
তারিকুর রহমানের এর ট্রেড লাইসেন্স অনুযায়ী বসবাসের ঠিকানা- “উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টর, ১৩ নম্বর রোড এর ৪৪ নং বাড়ির ২য় তলা ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা রয়েছে- ৩২সি, ট্রপিক্যাল আলাউদ্দিন টাওয়ার, সেক্টর-৩, উত্তরা, ঢাকা- ১২৩০। এবং প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে- ‘এক্সেক্ট টেক্সটাইল সল্যুশন’।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ট্যুরিজম ্ হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট থেকে বিবিএ পাশ করেছি। সকল ডকুমেন্ট আমার বিভাগ, রেজিস্টার বিল্ডিং, জগন্নাথ হল অফিস কক্ষে খোঁজ নিলেই জানা সম্ভব। কিন্তু আমাকে বানিয়ে দেয়া হলো আমি অছাত্র! আমি পাশ করতে পারি নাই।
বানানো হলো ‘ফেলু আদিত্য’! আচ্ছা বলুন তো, জীবনের সাথে যুদ্ধ করা আমার সম্পর্কে এই মিথ্যা সংবাদে আমার বাবা-মায়ের কেমন লেগেছে? অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নেমে আমাকে ঘায়েল করতে এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে কেন বাবা-মাকে কষ্ট দিলেন, বলতে পারেন?
আমাকে বানানো হচ্ছে বিবাহিত! যে মেয়েকে জড়িয়ে আমাকে বিবাহিত বলা হচ্ছে, সেই মেয়েটির বিবাহিত জীবনকে কেন আপনারা বিষিয়ে তুলছেন? তার স্বামী আছে, সংসার আছে, নতুন পরিবার-পরিজন আছে; তাকে কেন একটা বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছেন, বলতে পারেন? আপনাদের এমন মিথ্যা প্রোপাগান্ডায় আমি আমার বাবা-মায়ের কাছে ছোট হয়েছি, দাদার কাছে ছোট হয়েছি।
তারা কিছুই বলেনি, শুধু বলেছে- তুই কি সত্যিই বিয়ে করেছিস? আমি কি বলবো? আমার ভেজা-ভারি গলা তাদেরকে সত্যটা জানিয়ে দিয়েছে। তবু বলেছি, পারলে আমাকে বিয়ে দিয়ে দাও; তবেই তো বিশ্বাস করবে আমি আগে বিয়ে করি নাই!
আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছেন, আমি নাকি ‘মাতাল’! এই বিশ্ববিদ্যালয়, এই জগন্নাথ হল, এই ছাত্রলীগ এর নেতাকর্মীরা; তোমরা তো জান, আমি কেমন, আমি কি?
ফেসবুক ও দু’একটি অনলাইনে আমাকে নিয়ে এধরণের অপপ্রচার জেনে-শুনে আমার বাবা-মা, দাদা, আত্মীয়-স্বজন মানসিকভাবে আজ বিপর্যস্ত। তারা কষ্ট পেয়েছে, কিন্তু আমি কি তারা জানে। তারা আমাকে সাহস যোগাচ্ছে। শুধু বলেছে, মনোবল হারাবি না। সত্যের জয় হবেই। এসব অপপ্রচার, গুজবে আমি মোটেও বিপযর্স্ত নই, বিচলিত নই বরং শক্তি পাচ্ছি।
প্রিয় নেত্রীর মুখ থেকে বঙ্গবন্ধু’র সেই অনুপ্রেরণার বাণী আমি শুনেছি। সেটি হচ্ছে-“যে গাছ ফল দেয়, সেই গাছে ঢিল পড়ে”।
পরিশেষে, অপপ্রচাকারীদের উদ্দেশ্যে শুধু বলবো-“এদের জ্ঞান দাও প্রভু, এদের ক্ষমা কর”।