এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া :

চকরিয়া শহরের অভিজাত রেস্তোরা ধানসিঁড়ি কনভেনশন হলরুমে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জমজম হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম ও সেবাখাতে অগ্রযাত্রা সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা তুলেছেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.গোলাম কবির। বলেছেন হাসপাতালে শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার পরিকল্পিত পাঁয়তারার বিষয়ে। গতকাল ১২ মে বিকালে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিস্তারিত তুলে ধরে বেসরকারী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানটির সাফল্য অব্যাহত রাখতে প্রশাসনসহ সকল মহলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে গোলাম কবির বলেন, জমজম হাসপাতালকে নিয়ে কয়েকজন শেয়ার হোল্ডার গতকাল একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। উক্ত সাংবাদ সম্মেলনে অনেক মিথ্যাচার করা হয়েছে, অনেক বানোয়াট তথ্যকে বিভিন্ন সত্যের মত উপস্থাপন করেছেন যা পড়লে যে কোন মানুষ বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় আমরা প্রকৃত ঘটনা আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসন ও দেশের সাধারণ মানুষকে অবহিত করার জন্য আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি।

জমজম হাসপাতাল ১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু করে অদ্যাবধি অত্যন্ত সুনামের সহিত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এই হাসপাতালটি কক্্সবাজার জেলার সর্ববৃহৎ প্রাইভেট হাসপাতাল। এই হাসপাতালে ৩০/৩৫ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ফুল টাইম/পার্টটাইম চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন যা কক্সবাজারে অন্য কোন প্রাইভেট হাসপাতালে নাই। হাসপাতালের সুনাম এবং চিকিৎসা সেবার অগ্রগতির কারণে অনেকের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

তাই আমি জমজম হাসপাতালের শেয়ার হোল্ডার আশেক উল্লাহ, রিদুয়ান ও নুর হোসেন গং এর মিথ্যাচারের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি মো: গোলাম কবির ২০১৪ সালে সকল শেয়ার হোল্ডারের সর্বোচ্চ ভোটে পরিচালক নির্বাচিত হয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্বাচিত হই। বর্তমানে আমাকে ৩য় বারের মত ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্বাচিত করা হয়। (২ বছর মেয়াদী) আমার নেতৃত্বে হাসপাতাল যখন দিনদিন অগ্রগতির দিকে যাচ্ছে, আয় উন্নতি বাড়ছে, চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি পেয়ে হাসপাতাল যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন আশেক উল্লাহ, রিদুয়ানুল হক, দূর্নীতিবাজ নুর হোসেন ও নুরুল ইসলাম চার কুচক্রি জোট বেঁধে হাসপাতাল ধ্বংসের প্রচারনায় লিপ্ত হয়ে সম্মানিত বয়োবৃদ্ধ ডা: মাহবুব কামাল চৌং ও দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত ডা: শওকত ওসমানের কাঁধে বন্ধুক রেখে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার অপচেষ্ঠা করছে। ডা: মাহবুব কামাল চৌং চেয়ারম্যান ছিলেন এবং ডা: শওকত ওসমান ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন, উনারা বর্তমানে সম্মানিত ২ জন শেয়ার হোল্ডার মাত্র। ডা: শওকত ওসমানকে কেউ এমডি করে নাই। উনারা বয়স্ক এবং অসুস্থতার ভারে চট্টগ্রাম শহরে রোগী দেখার সুযোগ হয় না। জমজমে এসে এমডির দায়িত্ব পালন করবে কি ভাবে ? গোলাম কবির লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে- এসব বক্তব্য আশেক উল্লাহ, রিদুয়ান গং এর আজগুবি সৃষ্টি। ২০১৬ সালে রিদুয়ানের নেতৃত্বে এবং ২০১৭ সালে ইঞ্জিনিয়ার নুর হোসেনের নেতৃত্বে আর্থিক বিষয়ে তদন্তের জন্য ২টি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। উক্ত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ২টিতে মো: গোলাম কবির টাকা আত্মসাৎ করেছে এমন কোন অভিযোগ নাই। অথচ এই চার কুচক্রি কিভাবে আজ গোলাম কবিরের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ তোলে ? বরং ডা: শওকত ওসমান ১৬,৬৪,৪১৫/- টাকা, ডা: আব্বাছ উদ্দিন ৭,৭৭,৮৪৯/- টাকা ডা: মাহবুব কামাল চৌং ৩,৯৭,৭৬৬/-, আশেক উল্লাহ প্রায় ২,৮৮,০০০/- টাকা রিদুয়ানুল হক ২,১০,৬৬৭/- টাকা, নুর হোসেন প্রায় ২,০০,০০০/-টাকা ও নুরুল ইসলাম প্রায় ৬৫,০০০/-টাকা, সর্ব মোট ৬০,৮৬,৯৩৬/-সরাসরি আত্মসাৎ করেছে বলে অডিট কমিটি ও তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দিয়েছে। এই টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়ে শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। (সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী)। সুপ্রীম কোর্টে গোলাম কবিরের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে এই বক্তব্যটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে মহামান্য সুপ্রীম কোর্টে ৪৫৮০ নং মামলায় ১২/০২/১৮ইং পুর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানী শেষে মো: গোলাম কবির এমডি হিসাবে নুর হোসেন ও ডা: আব্বাছ উদ্দিন গংকে পরিচালক হতে অব্যহতি দেওয়া চিঠি বহাল রাখেন। উক্ত মামলায় ডা: শওকত ওসমানের এমডি হিসাবে দাবী প্রত্যাখান করেন এবং সুপ্রীম কোর্টের এই আদেশ এখনো বহাল আছে। অপরদিকে ১২/০২/১৮ইং সুপ্রীম কোর্টের একই বেঞ্চে ২৫২৬ নং মামলায় সিরাজুল ইসলাম গং এর মামলাটি ডিসমিস করেন অর্থাৎ সিরাজুল ইসলামের আবেদনটি খারিজ করেন। এই মামলায় গোলাম করিবকে এমডি হতে বাদ দিয়ে ডা: শওকত ওসমানকে এমডি ঘোষনার বিষয়টি বানোয়াট ও মিথ্যাচার। আশেক উল্লাহ, রিদুয়ান, নুর হোসেন গং কোন ধরনের ভোটের বিশ্বাস করে না। কারণ এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সকল ভোটে উক্ত চক্রটি ৪/৫ ভোটের অধিক ভোট পায় না বলে তারা কোন ধরনের নির্বাচন বিশ্বাস করে না। ৭৫ জন শেয়ার হোল্ডার গত ১৬ বছর ভোট দিয়েছে এখন কেন তারা ভোটার হবে না ? উক্ত ২৫ জন শেয়ার হোল্ডার (কথিত আন-রেজিস্ট্রার্ড) এর শেয়ার প্রায় অপর ৫০ জনের সমান। তাদেরকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করা কার স্বার্থে ? ১৭/০২/১৮ইং চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় ৩ পক্ষের যে বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি হয়েছে এতে মো: গোলাম কবিরকে এমডি হিসাবে বহাল রেখে বিরোধ নিষ্পত্তির দায়িত্ব দেওয়া হয়। উক্ত কমিটি ১১/০৫/১৮ইং নির্বাচনের তরিখ ঘোষনা করেন এই নির্বাচন সমঝোতার নির্বাচন যা আশেক উল্লাহ, রিদুয়ান গং পরাজিত হওয়ার ভয়ে অংশ গ্রহণ করে নাই। পুলিশি বাধার মুখে সাধারণ সভা পন্ড হওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। পূর্ব হইতে এই সাধারণ সভা হোটেল মিডওয়েতে নির্ধারিত ছিল। অধ্যাপক এনামুল হক মঞ্জুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তোলা-আশেক উল্লাহর (শিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি) মত জ্ঞান পাপীদের অপপ্রচার করা সম্ভব। উক্ত বিষয়ে অধ্যাপক এনামুল হক মঞ্জুর বিরুদ্ধে ৩ বার প্রকাশ্যে তদন্তে কোন অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় চুড়ান্ত রিপোর্ট প্রদান করেন। পুনরায় এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ কেউ প্রচার করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “সুপ্রীম কোর্টের আদেশ অমান্য করে এমডি পদ দখল করে রাখা, ডা: শওকত ওসমান এমডি হওয়া, গোলাম কবিরকে অস্থায়ী এমডি নিয়োগ করা, এক মাসের মধ্যে বেতন ভুক্ত এমডি নিয়োগ, গোলাম কবির এমডি হতে সরে দাড়াতে নারাজ হওয়া, গোলাম কবিরের আর্থিক অনিয়ম, আত্মসাৎ, স্বেচ্ছাছারিতা, দুর্নীতি, প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া, হাইকোর্টের রিট বিপক্ষে যাওয়া, ৭ই জানুয়ারী সিংহভাগ শেয়ার হোল্ডার গোলাম কবিরকে হাসপাতাল হতে বের করে দিলে বিষয়টি থানায় এমডি হতে বাদ দিয়ে ২ জন করে ৬ জনকে এক মাসের পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া, আবাসিক প্রকৌশলীকে ২ লাখ টাকা দেওয়া। ১১ জন পরিচালক গোলাম কবিরকে সর্ব সম্মতিক্রমে অব্যহতি দেওয়া, ডাক্তার কর্মচারী জিম্মি, রোগীদের হয়রানী করা, যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াত শিবিরকে পৃষ্ট পোষকাত করা, মালামাল কেনাকাটায় দুর্নীতি, এনবিআর কর্মকর্তাকে ৫লক্ষ টাকা ঘূষ দেওয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন অফিসে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েছে বলে টাকা আত্মসাৎ করা ইত্যাদি বক্তব্য সম্পূর্ণ বানোয়াট উদ্দেশ্য প্রনোদিত ও ষড়যন্ত্র মূলক। এই মিথ্যাচার রিদুয়ান, আশেক উল্লাহ, নুর হোসেন গং এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।

সর্বোপরি জমজম হাসপাতাল একটি সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান। এই হাসপাতাল এবং প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ব্যক্তি বর্গকে জড়িয়ে বিবেগ বর্জিত মিথ্যাচার হতে বিরত থাকার জন্য সকল মহলের প্রতি বিনীত অনুরোধ করছি। অদ্য বিকাল ৫.০০ টায় চকরিয়ার একটি অভিজাত হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: গোলাম কবির, পরিচালক যথাক্রমে এডভোকেট ওসমান আলী, জাবের আহমদ চৌং, রিয়াজ মো: রফিক ছিদ্দিকী, ফখরুল আনাম ও শেয়ার হোল্ডার জালাল আহমদ প্রমুখ।