শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর :
কক্সবাজার সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁওয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সামাজিক অনুষ্ঠানে দেদারছে ফুটানো হচ্ছে নিষিদ্ধ আতশবাজি। যার ফলে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ও চাপাক্ষোভ বিরাজ করছে। আতশবাজি ফুটানোর আড়ালে অস্ত্র ব্যবসায়ীরা গুলি বর্ষন করে ক্রেতাদের মাঝে বন্দুকের আওয়াজ(শব্দ) পরীক্ষা করতে পারে বলে ধারনা করছে এলাকাবাসী। প্রশাসন আঁতশবাজি বন্ধ করে দিলেও ঈদগাঁওতে ব্যবহার হয়ে আসছে অবাধে। সমাজের খেটে খাওয়া পরিবার থেকে শুরু করে প্রভাবশালী পরিবারেও চলে আসছে এ প্রবনতা। তাদের মেয়ে কিংবা ছেলের বিয়ে থেকে শুরু করে জন্মদিন, উদ্বোধন, খৎনা অনুষ্ঠান, পার্টিসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে ব্যবহার হয়ে আসছে আঁতশবাজি। যদিও বা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে গিয়ে ফুটানো বন্ধ করে দিয়েছিল। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঈদগাঁও বাজারের পুরাতন পুলিশ বিটের পূর্ব পাশের্^ ফুল ও ভিডিও’র দোকান গুলোতে গোপনে আঁতশবাজিসহ আরো অনেক মালামাল বিক্রি করে আসছে একটি সিন্ডিকেট। খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, বৃহত্তর ঈদগাঁওয়ের জালালাবাদ, ইসলামাবাদ, পোকখালী, ভারুয়াখালী, ঈদগাঁও, ইসলামপুর, চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে চলছে বিয়ে মৌসুম এ বিষয়কে টার্গেট করে অতি উৎসাহী পরিবারের সদস্য এবং বন্ধু-বান্ধবরা বিভিন্ন স্থান থেকে আঁতশবাজি ক্রয় করে এনে গভীর রাতে ফুটায়। ফলে পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজনকে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটতে হয়। জালালাবাদ খামার পাড়া এলাকার কামরুন নাহার নামের এক অভিভাবক জানায়, পার্শ্ববর্তী পোকখালী ইউনিয়নের পুর্ব পোকখালী এলাকায় গত সাপ্তাহে ইছাহাকের পুত্র আবদু শুক্কুরের বিয়ে অনুষ্ঠানে গভীর রাতে উপর্যপুরী আঁতশবাজির বিকট শব্দে তার সন্তানেরা ভয়ে ঘুম থেকে চমকে উঠে কাঁদতে থাকে। একই ভাবে গতরাত ঈদগাঁও বাজারে হাজী মার্কেটের উপর থেকে ননস্টপ ফুটানো হয় আঁতশবাজি। পার্শ্ববর্তী লোকজন কোথাও গুলিগুলি হচ্ছে মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেয়। জানতে চাইলে ঈদগাঁওয়ের সাংবাদিক কাফি আনোয়ার বলেন, নিষিদ্ধ আঁতশবাজি কিভাবে রাতের অন্ধকারে ফুটিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ায় তা বোধগম্য নয়। তিনি আরো বলেন, কঠোর ভাবে নিষেধাজ্ঞা জারী করে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারকে নির্দেশ প্রদান করলে অনেকটা কমে আসবে বলে ধারনা করা যাচ্ছে। এ ছাড়া নিকাহ্ নামা রেজিস্টার (কাজীর) মাধ্যমেও এ নির্দেশনা দিতে পারে। ভাদিতলা এলাকার আবদু সালাম জানায়, গত ৩/৪ মাস পুর্বে আলমাছিয়া সড়কে একটি বিয়ের ক্লাবে উপর্যপুরী আঁতশবাজি ফুটিয়ে আনন্দ উল্লাস করছিল স্বজন ও আগত মেহমানরা। এমন সময়ে কলেজ গেইট এলাকায় হুমায়ন ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ীকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে একদল ডাকাত তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দোকানে লুটপাট চালায়। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ৩/৪ রাউন্ড উপর্যপুরী গুলি বর্ষন করে পালিয়ে যায় ডাকাত দল। সেই রাতে আলমাছিয়া সড়কে বিয়ে বাড়িতে আঁতশবাজি ফুটানোর কারনে গুলিবর্ষনের বিষয়টি টের পায়নি স্থানীয়রা। আঁতশবাজি ফুটানোর বিষয়টি স্বীকার করে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভুঁইয়া জানায়, যে সমস্ত দোকান, ব্যক্তি আঁতশবাজি বিক্রি করে শীঘ্রই তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।