রিয়াজুল হাসান খোকন, বাহারছড়া, টেকনাফ:
টেকনাফ বাহারছড়ার উত্তর শীলখালীতে গত ২১ এপ্রিল আট বছরের শিশু উম্মে সাদিয়াকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার মুলহোতা আজিজ উল্লাহ (১৮)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ| ২২ এপ্রিল রাতে অভিযান চালিয়ে বাহারছড়া শামলাপুর স্থান থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর গ্রেফতারকৃত মুল হোতা ও ধর্ষক স্থানীয় উত্তর শীলখালীর জাকের হোসেনের ছেলে| তারা চট্রগ্রামের বাঁশখালীর বাসিন্দা, সেখান থেকে বাহারছড়া উত্তর শীলখালীতে এসে পাহাড়ে সরকারী বনবিভাগের জায়গায় বসবাস করে আসছিল বলে স্থানীয়রা জানান।
জানা যায়, ২১ এপ্রিল সকাল ১০ টায় সাদিয়ার পিতা শফি উল্লাহ তার বাড়িতে কাজ করা স্থানীয় দিন মজুর ইউসুফের বাড়িতে নিহত সাদিয়াকে মজুরির পারিশ্রমিক ৫০০ টাকা দিয়ে ইউসুফের বাড়িতে তার বউয়ের কাছে পাঠায়। সে সময় দিনমজুর ইউসুফ শফিউল্লাহর বাড়িতে মজুরির কাজে ব্যস্ত ছিল । পরবর্তীতে সন্ধ্যা অবধি সাদিয়া বাড়িতে ফিরে না আসায় শফি উল্লাহ ইউছুফের বাড়িতে খোঁজে যায় । সাদিয়াকে না পেয়ে শফিউল্লাহ সারা রাত বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। পরের দিন ২২ এপ্রিল অনেক খোঁজাখুঁজির পর এক পর্যায়ে স্থানীয় গভীর পাহাড়ে দুপর ১টার দিকে সাদিয়াকে লতা দিয়ে পেছানো ঝুলন্ত অবস্থায় রক্তান্ত লাশ পাওয়া যায়। পরে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ সদস্যরা সাদিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়। আর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিন মজুর মোঃ ইউছুফকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত বড়ুয়া জানান, শিশু কন্যা সাদিয়াকে অপহরণ, ধর্ষণ ও পরবর্তীতে লতা দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার মূলহোতা আজিজ উল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাদিয়াকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যা করা কথা স্বীকার করেছে। এখন আইনগত ভাবে আজিজ উল্লাহর জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আর এই ঘটনায় দিন মজুর ইউছুফের কোনো সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ার কারণে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে ২৩ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে গহীন পাহাড়ে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরোজুল হক টুটুল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া – টেকনাফ সার্কেল) চাউলা চাকমা, টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত বডুয়া ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সোনা আলী।
জানা যায়, সাদিয়ার পিতা শফি উল্লাহ একজন কৃষক । পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে সাদিয়া ৪র্থ। ভাই বোনেরা তাদের বোনের এই নির্মম মৃত্যু দেখে হতবাক। তাদের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। আদরের মেয়ের এই নির্মম মৃত্যুতে বার বার মুর্ছা যাচ্ছে মা। এলাকাবাসী মূলহোতার কঠোর শাস্তি চেয়েছে।