হাবিবুর রহমান সোহেল, নাইক্ষ্যংছড়ি :
রামুর গর্জনিয়ায় নিজ ভাসুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করায় নানা হুমকি-ধমকি থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ছোট ভাইয়ের স্ত্রী। গতকাল ১১ এপ্রিল বিকালে কক্সবাজারের এক অভিজাত হোটেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও নিজ ভাসুর আবদুল জব্বার মেম্বারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, মারধর ও মৃত্যুর ভয় দেখানোর অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৯ জুলাই রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউপি’র হরিণপাড়ার হাজী আমির হামজার ছেলে গিয়াস উদ্দিনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় একই এলাকার মৃত ছিদ্দিক আহমদের মেয়ে রাশেদা। বিয়ের পর সুন্দরভাবে স্বামী, সন্তান নিয়ে সংসার করে আসছেন যৌথ পরিবারে। সম্প্রতি ২ সন্তান ও স্ত্রীকে রেখে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান স্বামী গিয়াস। এ সুযোগে স্বামীর আপন বড় ভাই ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল জব্বার মেম্বার বেশ কিছুদিন ধরে অশ্লীল নানা প্রস্তাব ও অঙ্গ-ভঙ্গি করে আসছেন। এ নিয়ে শ্বাশুড়িকে বেশ কয়েকবার অভিহিত করা হয়। কিন্তু শ্বাশুড়ি কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় রাশেদা নায়োরের নামে পিতার বাড়িতে গিয়ে স্থানীয় গন্য-মান্য ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অবিহিত করেন। পিতার বাড়িতে ৩দিন অবস্থান করার পর রাশেদা পুনরায় স্বামীর বাড়িতে চলে আসে।
সংবাদ সম্মেলনে রাশেদা অভিযোগ করে জানান, গেল ৭ এপ্রিল বিকাল ৫টার সময় শ্বাশুড়ি বাড়ির পার্শ্ববর্তী ক্ষেতে কাজ করতে গেলে এবং কেউ না থাকার সুযোগে তাকে জড়িয়ে ধরে লম্পট জব্বার মেম্বার। পরে তার হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য শরীরের স্পর্শকাতর বিভিন্নস্থান স্পর্শ করে এবং তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে এ ঘটনা কাউকে বললে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে চলে যায়। এরপর কান্নাকাটির এক পর্যায়ে শ্বাশুড়ি কান্নার শব্দ শুনে জিজ্ঞেস করলে, পুরো ঘটনা খুলে বলেন রাশেদা। কিন্তু শ্বাশুড়ি উল্টো ছেলের বউ রাশেদাকে ঘর থেকে বের করে দেয় এবং পিতার বাড়িতে চলে যায়। পরে রাশেদার ভাই ইউসুফ আলী ধর্ষণের ঘটনা স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানায়। তিনি গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ২ সদস্য নুরুল আলম ও কামাল হোসেনকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে বলেন। এবং ইউপি সদস্যগণ দু’জনই রাশেদাকে রামু থানায় ধর্ষণ মামলা করার পরামর্শ দেন। কিন্তু রামু থানার অফিসার ইনচার্জ মামলা নিতে গড়িমসি করেন এবং থানায় মামলা না করে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। পুলিশের পরামর্শমতে রাশেদা অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
রাশেদা আরো অভিযোগ করেন, ধর্ষণের ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে এর বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণ ইউপি সদস্য, লম্পট, নারী লোভী জব্বার মেম্বারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করার প্রস্তুতি নেন। ওই দিন রাত আনুমানিক ১১টার দিকে জব্বার মেম্বার ও তার বড় ভাই জয়নাল আবেদিনসহ তার লোকজন ঘটনার প্রতিবাদকারী আনসার সদস্য মো. নুরুল হাকিমকে ব্যাপক মারধর করে এবং জখম করে। এক পর্যায়ে আনসার সদস্যকে মৃত ভেবে চলে গেলে, আশপাশের লোকজন মুমুর্ষ অবস্থায় আনসার সদস্য হাকিমকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এবং তার অবস্থা আশংকা জনক হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন ডাক্তাররা। বর্তমানে সে ওখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে ভিকটিম রাশেদা ধর্ষণকারী, নারী লোভী আবদুল জব্বার মেম্বারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।