ডেস্ক নিউজ:

কোটা সংস্কার আন্দোলন অবসানের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সংগঠনটির যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান এ তথ্য জানিয়েছেন। বুধবার (১১ এপ্রিল) দিনগত রাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ৭১-কে তিনি একথা জানান।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ৭১-কে রাশেদ খান বলেন, ‘আমরা কিছু মানুষের সঙ্গে পরামর্শ করলাম। তারা বললেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা যথেষ্ট ভালো এবং গ্রহণযোগ্য। এরপর আমরাও সিদ্ধান্ত নিলাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, আমরা সে সিদ্ধান্ত মোতাবেক চলবো।’

আন্দোলন থেকে কি সরে আসছেন –এমন প্রশ্নের জবাবে সম্মতি প্রকাশ করে রাশেদ খান আরও বলেন, ‘(বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টায় আমাদের একটা প্রেস ব্রিফিং আছে, সেখানে আমরা সব কিছু আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবো। অন্যান্য বিষয়ে আমাদের আরও কিছু কথা বলার আছে, সেগুলো বলবো।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বিকালে সংসদে সরকারি চাকরির কোটা প্রসঙ্গে বক্তব্য দেন। তার এই বক্তব্যের পর সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের পক্ষ থেকে এর যুগ্ম আহ্বায়ক নূরুল হক জানান, তারা রাতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করবেন। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনের মতামত জানাবেন।

বুধবার বিকালে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন পর তো আবার আরেক দল এসে বলবে, আবার সংস্কার চাই। তো কোটা থাকলেই সংস্কার। আর না থাকলে সংস্কারের কোনও ঝামেলাই নাই। কাজেই কোটা পদ্ধতি থাকারই দরকার নাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষ বারবার কষ্ট পাবে কেন? এই বারবার কষ্ট বন্ধ করার জন্য আর বারবার এই আন্দোলন-ঝামেলা মেটানোর জন্য কোটা পদ্ধতিই বাতিল। পরিষ্কার কথা। আমি এটাই মনে করি, সেটা হলেই ভালো।’

বুধবার (১১ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ৮ এপ্রিল দুপুর ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের পদযাত্রা শুরু হয়। পরে রাজু ভাস্কর্য হয়ে নীলক্ষেত ও কাঁটাবন ঘুরে পদযাত্রাটি শাহবাগ মোড়ে আসে। বিকাল ৩টা থেকে পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা সেখানেই অবস্থান নেন। এ সময় শাহবাগের আশপাশের সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবস্থান ধরে রাখলে রাত পৌনে ৮টার দিকে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ সময় কয়েকজনকে আটকও করে পুলিশ। এরপরই পুলিশ আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশের অ্যাকশনের মুখে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও টিএসসি এলাকায়।

পরে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের একটি দল আলোচনায় বসে। তিনি তাদের দাবি যাচাই-বাছাই করার জন্য ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রাখতে বলেন। তবে আন্দোলনকারীরা তা উপেক্ষা করেই তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যেতে থাকেন।