এম.এ আজিজ রাসেল :
পর্যটন নগরী কক্সবাজারের উন্নয়নে জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেনের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সন্ত্রাস, জঙ্গীসহ নানা সংকট ও সমস্যা সমাধানে তার দক্ষ নেতৃত্ব সকলের প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। বিগত ৩ বছরে রামু ট্রাজেডি থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা ইস্যু টিম ওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। এছাড়া রোহিঙ্গাদের দেখতে নানা দেশের প্রধানসহ কুটনীতিক এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিশ্চিদ্র প্রটোকল ও নিরাপত্তা দেয়া দিয়েছেন তিনি। এছাড়া এই সাদা মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে অনেকটা বদলে গেছে কক্সবাজারের চেহারা। পর্যটন শিল্প বিকাশে তার নানা উদ্যোগ দেশের সুনাম বৃদ্ধি করেছে দ্বিগুণ। কোন রকম দুর্নীতি ছাড়াই সরকারের মেগা প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। তাই মোঃ আলী হোসেনের মতো একজন জেলা প্রশাসক পাওয়া সত্যিই কক্সবাজারবাসীর জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। ১ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে একটি অনুষ্ঠানে সদ্য পদোন্নতি পাওয়া জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন সম্পর্কে নানা অভিজ্ঞতার আলোকে এসব কথা তুলে ধরেন বক্তারা। একপ্রকার এই অনুষ্ঠান ছিল বিদায় সংবর্ধনার ন্যায়। অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন বলেন, আমার ১৭ বছর চাকরি জীবনে অনেক প্রশাসনের ক্যাডারের সাথে পরিচয় রয়েছে। কিন্তু কক্সবাজারের সদ্য বিদায়ী এই জেলা প্রশাসক সত্যিই অতুলনীয়। কক্সবাজারের মানুষের জন্য তিনি অনেক করেছেন। নিজেকে ঢেলে দিয়েছেন কক্সবাজারের উন্নয়নে। সব পরিস্থিতি তিনি দক্ষভাবে সামাল দিয়েছেন। বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় তার ভূমিকা অপরীসিম। জেলা আওয়ামী লীগে সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ভাল মানুষরা বেশিদিন ঠিকে না। তবে কর্মের জন্য তারা আজীবন মানুষের মনের মধ্যে বসবাস করে। তেমনি জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেনকে কক্সবাজারের মানুষর হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান দিয়েছে। এটি সবাই পারেনা। তিনি কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন মানুষ চাইলে সব পারে। বদলে দিতে পারে একটি সবকিছুকে। র্যাব-৭ এর কক্সবাজার ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর রুহুল আমিন বলেন, জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন এর কর্ম বা আদর্শ এই এলাকার মানুষ স্মরণে রাখবে। তিনি নিজের স্বার্থ বিবেচনা না করে মানুষের জন্য সব করে গেছেন। এমন মানুষই সবখানে প্রয়োজন।
জরাজীর্ণ সংবর্ধনার জবাবে জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন বলেন, একটি জাতির উন্নয়নে দরকার দক্ষ নেতৃত্ব। আমি চেষ্টা করেছি কক্সবাজারের রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধি, পদস্থ কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ সকল স্তরের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে কক্সবাজারকে সাজাতে। অনেক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও সব পরিস্থিতি আমরা সুন্দরভাবে সামাল দিয়েছি। কক্সবাজারের অবকাঠামোগত উন্নয়নে কাউকে ছাড় দেয়া হয়। আশা করছি সরকারের মেগা প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজারের চেহারা পাল্টে যাবে। ২৫ আগষ্ট থেকে মিয়ানমার থেকে এই দেশে রোহিঙ্গা আসতে শুরু করে। প্রথমে পরিস্থিতি সামাল দেয়া খুব কঠিন হলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সমন্বিত পদক্ষেপের ফলে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সমম্ভব হয়েছে। যার ফলে কক্সবাজার আজ বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত। তিনি বলেন, কক্সবাজারের উন্নয়ন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সবাই একযোগে কাজ করলে বইবে শান্তির সুবাতাস।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজী আবদুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা: আবদুস ছালাম, জেলা জাসদের সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. নুরুল ইসলাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের কমান্ডার মোঃ শাহজাহান, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, সদর উপজেলার চেয়ারম্যান জিএম রহীমুল্লাহ, মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়াসহ জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক, পদস্থ কর্মকর্তা ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের বর্তমান জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন পদোন্নতি পেয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্ন সচিব হয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের উপসচিব (জন নিরাপত্তা) মোঃ কামাল হোসেনকে কক্সবাজারের নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে ।