শফিক আজাদ, উখিয়া:
উখিয়ার ঘাট বালুখালী কাস্টমসে ভুয়া কাস্টম কর্মকর্তা পরিচয়ে মিয়ানমার থেকে নির্যাতনে শিকার হয়ে পালিয়ে আসা সর্বশান্ত রোহিঙ্গার নিকট থেকে ছিনিয়ে নেয়া প্রায় অর্ধ কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণের বার ও মুক্তিপন বাবদ নগদ ১০লাখ আত্মসাৎ সম্পর্কে সংবাদ প্রকাশিত হলে জড়িত কাস্টম্সের ভাড়াটিয়া কর্মচারীরা বাঁচতে নতুন করে আবারো মাঠে নেমেছে বলে সুত্রে জানা গেছে। সুত্রে এও জানিয়েছেন ইতিপূর্বে ৭টি স্বর্ণে বার ও নগদ ১০লাখ টাকা লুটের ঘটনার পর আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রায় ৬লাখ টাকা বিতরণ করেন ঘটনার থেকে পার পেয়ে যায়। যার প্রেক্ষিতে ঘটনার ৬মাস পূর্ণ হলেও তথ্য উৎঘাটন হয়নি।
রোববার সরজমিন উখিয়া ঘাট বালুখালী কাস্টমস এলাকা ঘুরে বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আবুল হোসন ও দুদু মিয়া ২জনই বহিরাগত কর্মচারী। তারা যে সময় যে কর্মকর্তা কাস্টমসে যোগদান করে তাদের সাথে গভীর সখ্যতা গড়ে তুলে কাস্টমসে বহাল তবিয়তে অনিয়ম দুর্নীতি অব্যাহত রাখে । জনৈক কর্মচারী আবুল হোসেন নিজে সরকারের নিয়োগ প্রাপ্ত কেউ না হয়েও ওই অফিসে যারা সরকারি কর্মচারী রয়েছে তারা আবুল হোসেনের কথায় উঠে আর বসে। বালুখালী শুল্ক গুদামের চাবি থাকে তার হাতে। সে রাতের আধারে সরকারি জব্ধকৃত মূল্যবান মালামাল অন্যত্রে বিক্রি করে দিলেও দেখার বা বলার কেউ নেই।
নাম প্রকাশ না করার স্বর্তে কাস্টমস এলাকার এক দোকানী জানান, আবুল হোসেন কাস্টমস চাকুরী করে একাধিক বিবাহ করেছে। পাশাপাশি নাইক্ষ্যংছড়ি তার ২য় স্ত্রীর শ^শুর বাড়ী। সেখানে নির্মাণ করে যাচ্ছে বহুতল বাড়ী। মোটা টাকার বিনিময়ে গাছের করাত কলের অনুমোদন বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন। তিনি আরো বলেন, অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের নিকট থেকে কাস্টমসে জনৈক কর্মচারী ৭টি স্বর্ণের বার ও নগদ ১০ লাখ টাকা লুটপাটের ঘটনাটি এখানকার কম বেশি সবাই জানে কিন্তু কেউ বলতে সাহস পাচ্ছেনা। যাহা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
স্থানীয় আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কাস্টম্স থেকে যতদিন এসব বহিরাগতদের বের করে দেওয়া না হবে ততদিন অনিয়ম হতে থাকবে। দৈনিক আজকের দেশবিদেশ পত্রিকায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ হওয়ার ওই সব দুর্নীতিবাজরা নড়েচড়ে বসেছে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় বিভিন্ন লোকজনকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে যাচ্ছে।
এছাড়াও ওই অফিসে কর্মরত আরেক কর্মচারী কামরুল ইসলাম। তার বাড়ী হোয়াইক্যংয়। সেও হোয়াইক্যংয়ে গড়ে তুলেছে বিলাস বহুল বসতবাড়ী। কথায় আছে কাস্টম্স অফিসে ঢুকতে পারলে রাতারাতি লাখপ্রতি আর কোটিপ্রতি হওয়া যায়।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত আবুল হোসেন ৭টি স্বর্ণে বার ও নগদ ১০ লাখ টাকা লুটের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, ওই দিন ৫শ পিস ইয়াবা আটক করা হয়েছিল। যা কাস্টমসে মামলা হয়েছে। তাছাড়া বাড়ী নির্মাণের বিষয়টি সাংবাদিককে নাইক্ষ্যংছড়ি গিয়ে দেখা আসার কথা বলে মুঠোফোন কেটে দেন। দুদু মিয়াও একই ভাবে ঘটনা অস্বীকার করেন। আর কামরুলের নিকট থেকে অনেক চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে উখিয়ারঘাট কাস্টমস কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম তালুকদারের সাথে যোগাযোগ করার জন্য তার কার্যালয়ে গিয়েও পাওয়া যায়নি। এরপর মুঠোফোনে শতাধিক বার যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।