মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু, নাইক্ষ্যংছড়ি, :
৩২ বছর ধরে ভিক্ষা করেও জীবন মান পরিবর্তন হয়নি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগানঘোনা গ্রামের মৃত ছালেহ আহমদের স্ত্রী হতভাগী সোনা মেহেরের। তিনি ভিক্ষা পেশায় শুরু করে ১৯৮৪ সালে। দীর্ঘ ৩২ টি বছর ভিক্ষা করার পরেও জীবনের কোন পরিবর্তন হয়নি তার।
স্থানীয়দের মতে, বৃদ্ধা এ মহিলাটির বয়স প্রায় ১০০ বছরের কাছাকাছি হলেও সে এখনো তার পুরনো পেশায় রয়ে গেছে।
হতভাগী সোনা মেহেরের জানান, ৩২ বছর ধরে ভিক্ষা করে খাচ্ছি, এলাকার মানুষ ও আদর করে আমাকে বার বার ভিক্ষা দেয়। কেন ভিক্ষা করে জানতে চাইলে সোনা মেহের জানান, তার দুই ছেলে এক মেয়ে নিয়ে ১৯৮৪ ইং সনে স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়লে সেই থেকে ছেলে মেয়ের ভরন পোষন ও স্বামীর চিকিৎসার খরচ যোগাতে পরিবারে উপার্জনের জন্য কেউ না থাকায় ভিক্ষা পেশায় নামতে হয় তাকে। এ প্রতিবেদকের কাছে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, দীর্ঘ ২৭ বছর আগে তার স্বামী মারা যায়, সেই থেকে সে ভিক্ষা ছাড়তে চাইলেও ভিক্ষা তাকে এখনো ছাড়েনি। ভিক্ষা করে দুই ছেলে এক মেয়েকে কোন রকম মানুষ করলেও তাকে থাকতে হয়েছে ভিখারী হয়ে। ছেলে মেয়ের কথা জিজ্ঞাসা করতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। দুই ছেলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে অভাবে আছেন, মেয়েও তাই। তিনি বলেন, এখন আমার বয়স হয়েছে চোখেও তেমন দেখি না তাই মেয়ের নাতিকে নিয়ে প্রতি নিয়ত ভিক্ষা করে কোন রকম জীবন চালাচ্ছি। প্রতি রমজান মাসে আমাকে সবাই ফিতরা দেয়। অন্য সময় ১০ ঘর ঘোরে যা পায় তা দিয়ে কোন রকম চলে গেলেও মাথা গোজার ঠাঁই ঘরটি এখনো করতে পারিনি। হয়ত এই হায়াতে পারব না। এইভাবে মেয়ের ঘরে থেকে মনে হয় শেষ বিদায় নিতে হবে।
স্থানীয় মেম্বার আরেফ উল্লাহ ছুট্টু জানান, সে গরীব এবং একমাত্র বয়স্ক মহিলা তাই, আমি প্রথমেই তাকে বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করেছি।
সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী বলেন, তিনি বয়স্ক ভাতা পায়। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার আগে ও পরে সব সময় তার খবরা খবর রাখছি, ভবিষ্যতেও রাখব।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।