সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও :

কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলীর ৬৬/৩ ফোল্ডারের বেড়িবাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় চরম ঝুঁকিতে রয়েছে ওই এলাকার ২০ হাজার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী বেড়িবাঁধটি পুননির্মাণের দাবি জানিয়ে এলেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় স্থানীয়দের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

গত বছরের জলোচ্ছাস রোয়ানু-মোরা’য় বেড়িবাঁধটির সি-বল্ক ঘোনা পয়েন্টে ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। ফলে জোয়ারের পানিতে ১২শ একর লবণ মাঠ-চিংড়ি ঘের, ২ শতাধিক বসত বাড়িতে চলছে র্দীঘ ২০ মাস ধরে জোয়ার-ভাটা। প্রধান-প্রধান সড়ক ভেঙে যাওয়ায় এখনো ইউনিয়নের গাইট্যাখালী-রাজঘাট পাড়ার মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার বরাবর বাঁধটি পুননির্মাণের দাবি জানালেও সম্প্রতি পাউবো দেড় কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়ে কাজ শুরু করেন। তবে কাজের অগ্রগতি নিয়ে জনমনে নানা প্রতিক্রিয়া শুনা যাচ্ছে। র্দীঘদিন অতিবাহিত হওয়ায় দৃশ্যমান কাজের এখনো ইতিবাচক সাড়া পায়নি এলাকাবাসী।

কক্সবাজার সদর থেকে মাত্র থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলী গ্রাম। মহেষখালী চ্যানেলের ৬নং স্লুইচ গেইট পয়েন্টের বিশাল ভাঙনে বিলীন হয়েছে এ এলাকার ২শ বাড়ি ও ১২শ একর লবণ মাঠ।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, চট্রগ্রামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্টান বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও প্রতিরক্ষার কাজ করেছে। তবে আগামী ২/১ দিনের মধ্যে ভাঙন এলাকা ক্লোজ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। ভাঙন থেকে গোমাতলীকে বাঁচাতে খালের উৎসমুখে প্রায় ২৩ চেইনের বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।

স্থানীয়রা জানান,গত বছরের রোয়ানু-মোরা’র আঘাতে বেড়িবাঁধটি ভেঙে জোয়ারের পানি ঢুকে ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে রাজঘাট, চরপাড়া,আজিমপাড়া, গাইট্যাখালী, আছিন্নাপাড়া, কাটাখালী, বারডইল্লাপাড়া, দক্ষিণপাড়া, সিদ্দিক বাপের পাড়া, বদর খাইল্লাপাড়া চরম ক্ষতির মুখে পড়ে। অচল হয়ে পড়ে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। সাগরের পলি মাটিতে ঢেকে যায় লবণ মাঠের জমি। ফলে এ এলাকার মানুষ লবণ চাষ করতে না পারায় এখন চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছে। বাধ্য হয়ে অনেক লবণ চাষী কাজের সন্ধানে বিভিন্ন স্থানে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।

কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম রহিমউল্লাহ বলেন, গোমাতলীর বেড়িবাঁধটি এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি। কারণ বাঁধটি না দিলে শুধু গোমাতলী নয়, হুমকির মুখে পড়বে লবণ-মৎস্য ঘের। মাত্র ৩শ মিটার দীর্ঘ এ বেড়িবাঁধটি দুর্ভোগ থেকে বাঁচাতে পারে কয়েক হাজার মানুষকে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান বলেন, স্থানীয় জনসাধারণ, এমপি, কউক চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে বেড়িবাঁধটি পুননির্মাণের অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখে অনুমোদন ও বাজেট দিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। আশা করছি আগামী রবিবারের মধ্যে বাঁধটি পুননির্মাণ কাজ শেষ হবে।