সাইফুল ইসলাম:
“কখনো খরা, কখনো ভরা”। এটিই যেন চিরচেনা চিত্র কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের। বলছি-রূপালী ইলিশের কথা। বুধবার সকাল ১০টার দিকে খবর এলো ব্যাপক ইলিশ ধরা পড়েছে জেলেদের জালে। এরপর প্রতিবেদকের কৌতুহলী মনে সেখানেই ছুটে যাওয়া। দৃশ্যপট: নুনিয়ারছড়াস্থ ফিশারীঘাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। এতে ট্রলার মালিক, জেলে পলী, ভোক্তা সাধারণের মূখে হাসি ফুটেছে। মাসকয়েক পূর্বে সাগরে মৎস্য শিকার বন্ধ থাকার পর বর্তমানে কক্সবাজারে হাটে-বাজারে ইলিশে ভরে গেছে। একেবারে টাটকা মাছ। দামেও সস্তা। খেতেও দারুন স্বাদ। কিছুদিন পূর্বে বাজারে ইলিশ সহ সামুদ্রিক মাছের আকাল চললেও এখন পথে ঘাটে ইলিশ পেয়ে দারুন খুশি স্থানীয়রা।
ট্রলারের মালিকসহ কয়েকজন জানিয়েছেন ৪/৫ দিন ধরে বঙ্গোপসাগর থেকে যেসব ট্রলার ঘাটে ভিড়ছে, দেখা গেছে, অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের তুলনায় প্রায় বোটে ইলিশই বেশী ধরা পড়েছে। কারও ট্রলারে ২০ হাজার, কারও ২৫হাজার এমনকি ৩০থেকে ৩৫ হাজার ইলিশ পাওয়া যায়।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবসায়ীরা বলেছেন, যেহারে ইলিশ ধরা পড়ছে, দেশের চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে বিদেশেও ইলিশ রফতানি করা যাবে। আগের চেয়ে কম মূল্যে ইলিশ ক্রয় করে খুশি মনে ঘরে ফিরছে ক্রেতারা।
স্থানীয় বাজারসহ হাট বাজারে ইলিশের মূল্য হাতের নাগালে এসেছে। একটু ছোট্ট সাইজের হলে কেজিতে মাত্র ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা ও বড় হলে ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে টাটকা রূপালি ইলিশ। ট্রলারের মালিক আব্দুর রহমান বলেন, সপ্তাহের শুরু থেকে বঙ্গোপসাগরের প্রচুর রূপালি ইলিশ ধরা পড়েছে, যা গত বছরকে হার মানাবে।
সরেজমিনে ফিশারীঘাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রে চারদিকে শুধু ইলিশ আর ইলিশ। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন হাট বাজারে সড়কের পাশে, পথচারীর ও বিভিন্ন গাড়ীর যাত্রীদের হাতে, জেলেদের নৌকা ও ঝাঁকাসহ যেদিকে চোখ যায় সর্বত্র শুধু ইলিশ আর ইলিশে সয়লাব।
দেখা যায়, সাগর থেকে আসা প্রতিটি জেলে নৌকায় ইলিশে পরিপূর্ণ। জেলেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কখনো এত ইলিশ একসাথে ধরা পড়েনি। এদিকে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও বেশিরভাগই ছিলো ছোট ও মাঝারি আকারের। এসব ইলিশ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২শ থেকে ৩’শ টাকার মধ্যে।
কক্সবাজারে ইলিশ মাছের দাম সস্তা শুনে চট্টগ্রাম থেকে আসা এক পাইকারী ব্যবসায়ী আবদু সালাম বলেন, ইলিশের শেষ মৌসুমের জোঁ-থাকায় খুব সকালে এখানে চলে এসেছি মাছ কিনতে। তবে এত মাছ ধরা পড়বে তা কল্পনাও করিনি। তিনি বলেন আরও বলেন, প্রায় ৫ মন ইলিশ মাছ ক্রয় করেছি। তাও আবার বিভিন্ন দামে কেনা হয়েছে। তবে বড় আকারের ইলিশের সংখ্যা ছিলো একটু কম। তবে মাঝারি ও ছোট্ট আকারের মাছ বেশি।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে খুচরা মাছ ক্রয় করতে যাওয়া কালুর দোকান এলাকার সাইফুদ্দীন এর সাথে ইলিশের কথা বলতে গিয়ে হাসি মুখে বলেন, এত মাছ দেখে অনেকেই প্রশ্ন করছেন সাগরে ইলিশ আর আছে, না সবই একসাথে ধরা পড়ে গেছে। আসলেই আজ যত ইলিশ দেখেছি, ১০ বছরেও আমি একসাথে এত ইলিশ দেখিনি। তবে বড় মাছের সংখ্যা
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক শরীফুল ইসলাম জানান, প্রায় ৫/৬ দিন ধরে সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছে। আরও কয়েকদিন থাকতে পারে বলে ধারণা করেন তিনি। এত ইলিশ তা গত বছরকে হার মানাবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।