বিদেশ ডেস্ক:
নির্বাহী ক্ষমতার বলে জারি করা জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত আইনকে আরও কঠোর করার ঘোষণা দিয়েছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য সান জানিয়েছে, এজন্য আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হয়েছে। আনীত সংশোধনীর মাধ্যমে জরুরি অবস্থা চলাকালীন গ্রেফতার হওয়াদের অধিকার সীমিত করা হয়েছে। দ্য হিন্দুস্থান টাইমস-এর এক খবরে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের তৎপরতায় এরইমধ্যে বিরোধীদের মনে ব্যাপক শঙ্কা ও ভীতি তৈরি হয়েছে।
মালদ্বীপের জরুরি আইনে কঠোরতা
দ্য সান জানিয়েছে, মালদ্বীপের সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদে জরুরি অবস্থা চলাকালীন গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির অধিকার বর্ণনা করা হয়েছে। সংশোধনীর মাধ্যমে সেই অধিকার সীমিত করে ফেলেছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন। দ্য সান বলছে, জরুরি অবস্থার মধ্যে আইনজীবীর সাহায্য পাওয়া ছাড়া আর কোনও অধিকার পাবেন না গ্রেফতারকৃতরা। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংশোধিত আইন অনুযায়ী গ্রেফতারকৃতদের তাৎক্ষণিকভাবে আটকের কারণ জানানোর আইনি বাধ্যবাধকতা থাকছে না। থাকবে না ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আটকের কারণ সম্বলিত চিঠি গ্রেফতারকৃতকে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা। থাকবে না ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আটককৃতকে বিচারকের সামনে এনে আটকের কারণ ব্যাখ্যার বাধ্যবাধকতা । শর্তহীন ও শর্তযুক্ত জামিন অথবা মুক্তি দেওয়ার বিচারিক কর্তৃত্বও খর্ব করা হয়েছে এতে।
দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া একটি ঐতিহাসিক আদেশকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। জরুরি অবস্থা জারির সময় প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করেছেন কারণ তাদের রায়ে নির্বাহী ক্ষমতা ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়বে। এতে করে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনস্বার্থ ব্যাহত হবে। তার রায় বাস্তবায়িত হলে মালদ্বীপের সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব হতে পারে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, জরুরি অবস্থা জারির মধ্য দিয়ে সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার ও আটক করার ক্ষেত্রে মালদ্বীপের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এক তরফা ক্ষমতা পেয়েছে। এতে দেশটিতে চলমান সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা করছে তারা। এরইমধ্যে সংকট ঘনীভূত হওয়ার আলামতও মিলেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতাদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। মালে থেকে বিরোধী দলের সংসদ সদস্য ও আইনজীবী আলী হুসেন হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, বিরোধী দলের সাংসদদের যেকোনও সময়ে গ্রেফতার করা হতে পারে। সামরিক বাহিনীর পার্লামেন্ট ভবন ও সুপ্রিম কোর্ট ভবন ঘিরে ফেলার মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে প্রেসিডেন্টের যেকোনও আদেশ মানতে প্রস্তুত রয়েছে তারা।