টেকনাফ সংবাদদাতা:
শীত মৌসুমের শেষভাগে এসে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও নাফ নদীতে টেকনাফের জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। ফলে টেকনাফ উপজেলার জেলেরা ও ব্যবসায়ীরা কর্মব্যস্ত সময় কাটছে। প্রতিদিন ধরা পড়া শত শত মণ ইলিশ ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার বাজার ও মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে। ব্যবসায়ীরা ইলিশের আমদানি বুঝে দর ওঠানামার জন্য ব্যস্ত ক্রেতা-বিক্রেতারা।
মেসার্স টেকনাফ ফিসিং এর মালিক নুরূল আমিন বলেন, টেকনাফের বিভিন্ন ঘাট থেকে প্রতিটি ১২০ টাকা দরে ৭০০০ হাজার ইলিশ ক্রয় করি। ৪০০ গ্রাম থেকে শুর করে প্রায় ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ। বরফ না পেয়ে জেলেরা মাছ একটু নষ্ট করে পেলে। অন্যদিকে চট্রগ্রামের মাছের আড়তে ফোন দিয়ে জানতে পারি ওখানে বিক্রি হচ্ছে মণ প্রতি ১৫০০০ টাকা। তিনি আরও বলেন ঢাকা-চট্রগ্রামের মাছের আড়ৎ ব্যবসায়ীরা জানান ইলিশের আমদানি বাড়লে দাম এখনো একটু কম। আমাদের দেশেও প্রচুর ইলিশের চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিন গাড়ি গাড়ি ইলিশের চালান চট্রগ্রাম-ঢাকাসহ সারাদেশে যাচ্ছে। এদিকে ইলিশের মৌসুম শুরুর পর বর্তমানে দাম অনেকটা কমে আসলেও আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাড়বে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
টেকনাফ বাহারছড়া ঘাটের ফিসিং ট্্রলারের মালিক আবুল কালাম বলেন তিন দিন আগে আমার ট্রলারটি ৯ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যায়। গত কাল রাতে মাঝি ফোন দিয়ে বলে আমাদের বরফ শেষে হয়ে গেছে আমরা চলে আসতেছি। পরে দিন সকাল ১০টার সময় ঘাটে গিয়ে দেখি ট্রলারটি ঠিক চলে আসল। মাঝি আমাকে দেখে বল আমরা ৩০০০ ইলিশ মাছ পেয়েছি। মাঝির কথা বিশ্বাস না করে ট্রলারে গিয়ে দেখি ৪০০ গ্রাম থেকে শুর করে প্রায় ৯০০ গ্রাম ওজনের প্রচুর ইলিশ। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে মাছ ব্যবসায়ীরার ভীড় করতে শুরূ করল। নিজেদের জন্য কিছু ইলিশ মাছ রেখে ব্যবসায়ীদের সাথে দর কষাকষি করে ১শ ইলিশ ১১০ টাকা দরে ২৯০০টি ইলিশ মাছ বিক্রি করি।
শাহ পরীর দ্বীপের স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী ও ফিসিং ট্রলারের মালিক মোহম্মদ কায়ছার বলেন আমার ট্রলারও আজ ১২০০ইলিশ পেয়েছে। বরফের সংকটের কারণে মাছ একটু নষ্ট হয়ে গেছে। তার পরও ভাল দাম পেয়েছি মণ প্রতি ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি করি।
টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে শীত মৌসুমের শুরুতে ইলিশ মাছ ধরা না পড়লেও প্রাকৃতিক কারণে এবারে ইলিশের মৌসুম একটু দেরিতে শুরু হয়। জেলেদের জালে এখন প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবারেও ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যাবে। না হলে কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হতে পারে ব্যবসায়ীদের।