কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া:
মিয়ানমান সেনাদের নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা উখিয়া-টেকনাফের শরণার্থী শিবিরে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের চাপে নানামুখী বিপদের মুখে স্থানীয়রা। বিরূপ প্রভাব পড়েছে পরিবেশ ও দৈনন্দিন জীবনে। শরণার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয়দের জীবন মান উন্নয়ন করার কথা থাকলেও তা কিভাবে হবে, সেটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
এক সময় শুনশান নীরব ছিল এই বাড়ীর পরিবেশ। এখন চারপাশে শরণার্থী শিবির। চাষের জমিটুকুও চলে গেছে শিবিরের আওতায়। বাড়ীর নারীরা আর আগের মত চলাফেরা করতে পারেন না। হাজারো রোহিঙ্গার ভীড়ে অজানা এক ভয় কাজ করে এ বাড়ীরর মানুষের মনে। শুধু এ বাড়ী নয়, এমন হাল এখন, অনেক স্থানীয় বাসিন্দার।
অল্প জায়গায় ১১ লাখ শরণার্থীর বসতি। চিকিৎসকরা বলছেন, অস্বাস্থ্যকর এই ক্যাম্পগুলো রোগবালাইয়ের জন্মভূমিতে পরিণত হয়েছে। শুধু রোহিঙ্গারোই নন, সেই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয়রাও। এরই মধ্যে স্থানীয়দের মধ্যে অর্ধশতাধিক ডিপথেরিয়া রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
এখানকার স্কুল-কলেজগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম প্রায় গোল্লায় গেছে। প্রথম দিকে ছিল অস্থায়ী শিবির, এরপর নিবন্ধন কেন্দ্র, আর এখন পরিবেশ না থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসে না। অনেক ছাত্র-শিক্ষক চাকরি নিয়েছেন, এনজিওতে।
প্রায় দেড় হাজার হেক্টর বনভূমিতে গড়ে উঠেছে শারণার্থী শিবির। এখানে প্রতিদিন ৮০০ টন জ্বালানী কাঠ দরকার। যা আসে আশপাশের বন থেকে। ফলে প্রতিদিন দুটি ফুটবল মাঠের সমান বন উজার হচ্ছে। হুমকিতে জীববৈচিত্র্য।
বন্যহাতি চলাচলের পথে গড়ে উঠেছে শরণার্থী শিবির। এখন সেখানে লাখো শরণার্থীর পদচারণা। গেল কয়েক মাসে হাতির আক্রমণে মারা গেছেন অন্তত ৬ জন। আহত হয়েছেন অনেকে।
বিপুল চাহিদার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অনেক বেড়ে গেছে। যা স্থানীয়দের অন্যতম কষ্টের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।ত্রাণ হিসেবে পাওয়া চাল, ডাল, কম্বল, বাসন, সাবান ফেয়ার এন্ড লাভলী, তৈল, চাদর, কাপড়,চেম্টু,বডি এস্পাই,বালটি,মগ,শাড়ি,লুঙ্গি,কামিজসহ নিত্যপণ্য খোলা বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে। স্হানীয়রা প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান,রোহিঙ্গাদের অতিরিক্ত ত্রাণ দেওয়া যেন বন্ধ করে দেন।
বিপদগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দেয়ার কথা থাকলেও, এখনও এর রূপরেখা চূড়ান্ত হয়নি।