শাহেদ মিজান, সিবিএন:
বহুল আলোচিত ও দেশের ইতিহাসের বৃহৎ মেগা প্রকল্প মহেশখালীর মাতারবাড়িতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজের উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার দুপুর ১টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি। এর আগে তিনি বক্তব্য রাখেন।
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের নব্বই ভাগ মানুষ আজ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা যত বাড়ছে, তত বিদ্যুৎতের চাহিদা বাড়ছে। কাজেই চাহিদার সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে। চাহিদা মেটানোর জন্য যা যা করণীয় আমরা তাই করছি। বিদ্যুৎ দিলেই মানুষের জীবন-জীবিকার পথ খুলে যায়। আজকে ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনো উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমি মনে করি বিদ্যুৎ অপরিহার্য। উন্নয়ন পরিকল্পনায় আমরা সব সময় প্রত্যন্ত অঞ্চলকে অর্থাৎ গ্রামকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। প্রকৃতির খেয়াল-খুশিতে এই এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা চলে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। মহেশখালীর মানুষের জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন আমরা করে দিয়েছি। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে দেখলাম, এ কাজ সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। বাংলাদেশে নতুন কিছু করতে গেলে নানা রকম বাধা আসে। নতুন নতুন তাত্ত্বিক আসে। কেউ কেউ হতাশায় ভোগে। কেউ কেউ বলে, গেল গেল সব গেল, সব গেল।
শেখ হাসিনা বলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী সব সময় বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে আছে। হলি আর্টিসানে আমাদের উন্নয়ন সহযোগীরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন, এ জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি কক্সবাজারের প্রশাসন, আমাদের দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনগণের প্রতি আহ্বান জানাবো, এই মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে যারা কাজ করছে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি আপনারা খেয়াল রাখবেন। কারণ তারা আমাদের অতিথি, আমাদের উন্নয়ন সহযোগী।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নজীবুর রহমান। অনুষ্ঠানে জাপানী উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে প্রধানন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সে সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, মাতাবাড়ির ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাস্টার মাহমদুল্লাহ ও স্কুলছাত্রী তানজিলা ছোট্টমনি সাথে কথা বলেন ।
চেয়ারম্যান মাস্টার মাহমদুল্লাহর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধান বলেন, মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের অধিগ্রহণ হওয়ার জমির মালিকদের আমরা নিরাশ করিনি, করবো না। তাদেরকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে এবং অবশিষ্টদের দেয়া হচ্ছে। একই সাথে মাতারবাড়ির মানুষের কর্মসংস্থান করা হবে।
স্কুলছাত্রী তানজিলা ছোট্টমনির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা বলেন, মাতারবাড়িকে আধুনিকায়ন করা হবে। সেখানে একটি আধুনিক মানের কলেজ ও সুপরিসর হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে মাতারবাড়িতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহামদ চৌধুরী, কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, চকরিয়া-পেকুয়া আসনে সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ইলিয়াছ, চট্টগ্রাম উপ-বিভাগীয় কমিশনার নিজাম উদ্দীন, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে উপ-সচিব কোল পাওয়ার জেনারশনের এমডি আবুল কাশেম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহিদুর রহমান, মহেশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন ইব্রাহিম, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম, ধলঘাটার চেয়ারম্যান কামরুল হাসান প্রমুখ।