মহসীন শেখ:
দোহাজারী থেকে কক্সবাজারের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল পর্যন্ত প্রথমধাপে রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সদরের বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন ঝিলংজাস্থ প্রস্থাবিত রেললাইন স্টেশনে দ্বিতীয় দফায় ক্ষতিগ্রস্থ ৬ জনকে ৪ কোটি ৬২ লাখ ৬৫ হাজার ৫২১ টাকার চেক বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট খালেদ মাহমুদ। এসময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নোমান হোসেন, জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন রুবেল, কক্সবাজার সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজিম উদ্দিন ও স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর ওমর ছিদ্দিক লালু প্রমুখ।
এর আগে ৮ জানুয়ারী সোমবার সকাল ১১ টায় একই স্থানে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ রেলওয়ের যৌথ উদ্যোগে প্রথম দফায় চেক বিতরণ করা হয়েছিলো। ওইদিন প্রকল্পের অধিগ্রহনকৃত জমির দখল হস্তান্তর করা হয়। সভায় রেল লাইন প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান ও রেলওয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আবুল কালামের কাছে অধিগ্রহনকৃত জমির দলিল ও দখল হস্তান্তরের করেন জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট খালেদ মাহমুদ জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটক আকর্ষণ করার জন্যই সেখানে আইকনিক ইন্টারন্যাশনাল রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ঝিনুক আকৃতির এ স্টেশন দেখলেই বোঝা যাবে এটি সমুদ্র সৈকতের স্টেশন। স্টেশনটির অবস্থান হবে কক্সবাজার বাস টার্মিনালের পাশর্^বর্তী ঝিলংজা চৌধুরী পাড়ায়।
প্রকল্প পরিচালক আরো জানান, ২০২০ সালের মধ্যেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। আর এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রেল নেটওয়ার্ক ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়েতে যুক্ত হবে বাংলাদেশের রেলপথ। এ রেলওয়ে নেটওয়ার্ক মিয়ানমার-বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান এবং ইরান হয়ে যাবে ইউরোপের তুরস্ক পর্যন্ত।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রথমে রেললাইন হবে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত। এছাড়া রামুতে হবে জংশন। আর সেখান থেকে একটি লাইন চলে যাবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। তখন ঢাকা থেকে সরাসরি ট্রেনে পৌঁছা যাবে কক্সবাজারে। পরবর্তী সময়ে কক্সবাজার থেকে আরেকটি লাইন পূর্ব দিকে যাবে মিয়ানমারের কাছাকাছি ঘুমধুমে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন জানান, রেলওয়ের দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের নিকটে ঘুমধুম পর্যন্ত প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৮টি অগ্রাধিকার প্রকল্পের একটি। তাই এ প্রকল্পটির দ্রুত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আশা করা যায়, চলতি বছরের শুরু থেকে শুরু হওয়া এ কাজ শেষ হবে ২০২০ সালের মধ্যে। আর এটা শেষ হলে শুধু দেশ নয়, বিদেশ থেকেও হাজার হাজার পর্যটক কক্সবাজারসহ চট্টগ্রামে জড়ো হবে। তিনি আরো বলেন, এ প্রকল্পের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থাপনা হবে ঝিনুক আকৃতির কক্সবাজার রেল স্টেশন।
প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণকাজ দু’ভাগে বিভক্ত করে প্রথমভাগে দোহাজারী থেকে চকরিয়া পর্যন্ত ট্র্যাক নির্মাণ, রেলের সিগন্যালিং ও টেলিকমিউনিকেশন কাজ করা হবে। পরে চকরিয়া থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্র্যাক নির্মাণ এবং কক্সবাজার রেলস্টেশন নির্মাণ করা হবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।