শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর:
সারাদেশব্যাপী নাগরিকদের মধ্যে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয় পত্র (স্মার্ট কার্ড) বিতরণ শুরু হয়েছে কক্সবাজার সদরে। সুশৃঙ্খলভাবে ইসলামপুর ও ইসলামাবাদ ইউনিয়নে বিতরণ হলেও ঈদগাঁও ইউনিয়নে বিতরণের শুরু থেকে বিপত্তি দেখা দিয়েছে। ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় হলরুমে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট আইডি কার্ড নিতে এসে ভোটাররা বিড়ম্বনায় পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে বিড়ম্বনা ও ভোগান্তির দৃশ্য দেখতে গিয়ে চোখে পড়েছে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের স্বজনপ্রীতি নিয়ে। কার্ড বিতরণে নিয়োজিত কর্মীরা সুষ্ঠুভাবে কার্ড বিতরণ করতে দেখা গেছে। তবে শৃঙ্খলায় নিয়োজিত আনসার ও সদস্যদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩ জানুয়ারী ইসলামপুর ইউনিয়ন থেকে কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। এ কার্যক্রম চলবে মার্চ মাসের শেষ পর্যন্ত।
ঈদগাঁও ভাদিতলা থেকে আসা স্মার্ট কার্ড সংগ্রহকারী লায়লা বেগম, ছেনুআরা বেগম, আবছার কামালসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় বর্তমান জনপ্রতিনিধি ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের আয়ত্বে আনতে অনেক কার্ড সংগ্রহকারীকে আগেভাগে কেন্দ্রে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এছাড়া স্মার্ট কার্ড নিতে আসা অন্যান্য গ্রাহকদের অভিযোগ, অপারেটর সংখ্যা কম হওয়ায় কার্ড দিতে সময় ব্যয় হচ্ছে। এক সাথে ২/৩টি ওয়ার্ড মিলে বিতরণ করায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।
তারা আরো জানান, বিতরণের স্থান বাজার কেন্দ্রিক হওয়ায় দীর্ঘ যানজট ও মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে কেন্দ্রে আসতে হচ্ছে। ১মদিন থেকেই বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অনেককে। ভোগান্তি কমাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বাড়ানোরও দাবী জানান তারা। অন্যদিকে আইডি কার্ড ও স্লিপ হারিয়ে গেলে স্থানীয় সোনালী ব্যাংকে ড্রাফট করার নিয়ম থাকলেও ৪টার পর বন্ধ থাকায় আরো দূর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে অনেককে। আগামী ২২ জানুয়ারী থেকে শুরু হবে জালালাবাদ ইউনিয়নে। উক্ত ইউনিয়নে বিতরণের সম্ভাব্য স্থানটিও নির্ধারণ করা হয়েছে ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুম। ৭নং ওয়ার্ড মোহনবিলার খলিলুর রহমান, মাহফুজুর রহমান, গৃহকর্মী নাজনিন সরওয়ার, রুমেনা আক্তারসহ অনেকেই জানান, ৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে এত দুরে গিয়ে স্মার্ট কার্ড নেওয়া সম্ভব না। তারা ওয়ার্ড ভিত্তিক বিতরণেরও দাবী জানান।
এ ব্যাপারে জানার জন্য সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শিমুল শর্মার সাথে মোবাইলে যোগাযোগের জন্য কয়েকবার কল দিলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নোমান হোসেন জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ সরেজমিন নিজেই দেখেছি। এখানে কোন অনিয়ম দেখা যায়নি। তবে সাধারণ জনগণের প্রচুর ভোগান্তি হচ্ছে। মূলত স্থানীয় রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ ও কিছু কার্ড প্রার্থী লোক শৃঙ্খলা না মানায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি সকলকে ধৈর্য্য সহকারে সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাড়িয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করার জন্যও অনুরোধ জানান।