সাহেদ কায়সার, রামু :

বিকাল সাড়ে তিনটা থেকেই বিদ্যুতের দেখা নেই। অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হয় না। রাতের সাড়ে এগারোটা পর্যন্তও বিদ্যুতের দেখা মেলেনি। ফলে দীর্ঘদিন পর ৪ জানুয়ারী (বৃহষ্পতিবার) রাতে বিদ্যুৎবিহীন রামু উপজেলার এক ভুতুড়ে রূপ দেখল রামু উপজেলার মানুষ। কোথাও বিন্দুমাত্র আলো নেই। আইপিএস বা অন্যান্য প্রযুক্তি দিয়ে সংরক্ষণ করে রাখা বিদ্যুৎও নি:শেষ। ফলে নিকষ কালো আধাঁরের মধ্যে ভুতুড়ে এক পরিবেশে মানুষের অপেক্ষার যেন শেষ হয় না। কবে আসবে বিদ্যুৎ?

এই প্রশ্নের কোন উত্তর নেই খোদ কর্তৃপক্ষ তথা রামু উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলীর কাছেও। তিনিও সঠিকভাবে জানাতে পারলেন ঠিক কবে আসবে বিদ্যুৎ বা সমস্যাটা কোথায়। যোগাযোগ করা হলে তিনি বিদ্যুৎ সমস্যা নিরসনে তিনি তার সর্বশক্তি প্রয়োগের কথা জানালেন। সেই সাথে অনাকাংখিত এই সমস্যার জন্য একটু কো-অপারেট (সহযোগিতা) করারও অনুরোধও জানালেন।

উল্লেখযোগ্য বিষয় রামুতে এই বিদ্যুতের সমস্যা দীর্ঘদিন ছিল না বললেই চলে। ভুক্তভোগীরা জানান, গত নভেম্বর মাসেই রামু বিদ্যুৎ অফিসের গাফেলতির কারণে ওভার ভোল্টেজ সমস্যার সৃষ্টি হয়। যার দরুণ বাসা বাড়ির বৈদ্যুতিক ভাল্ব, টিভি, ফ্রিজ, কম্পিউটারসহ মূল্যবান অনেক ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী খুইয়েছে রামু উপজেলার অনেক মানুষ। বাদ যায়নি রামু উপজেলা পরিষদের সরকারি অফিসের টিভি, ফ্রিজ-কম্পিউটার ও ইলেক্ট্রনিক সামগ্রীও। এ নিয়ে উপজেলা খোদ উপজেলা পরিষদ এবং পুরো রামু উপজেলা জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয় বলে জানান উপজেলার বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

রামু মন্ডলপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ কাজল জানান, গত মাসের ওভার ভোল্টেজের কারণে তার বাসার প্রায় সবকটি বাল্ব নষ্ট হয়ে যায়। টিভি ও ফ্রিজে সমস্যা দেখা দেয়। যা পরে তিনি মেরামত করেছেন। প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টা যাবত বিদ্যুতের এই ওভার ভোল্টেজ থাকলেও দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

রামু সংগত কারণেই স্পর্শকাতর এলাকা। নতুন সংযুক্ত বৃহৎ সেনানিবাস ছাড়া, বিজিবি হেডকোয়ার্টার, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরসমূহে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রয়োজন। সেই সাথে এভাবে যদি নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা হয় তবে রামু উপজেলার নিরাপত্তা সংকটের কথাটাও কিন্তু এড়িয়ে যাওয়া যায়না।

দীর্ঘ আট ঘন্টা ধরে বিদ্যুত নেই। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অর্থাৎ রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত বিদ্যুতের ঠিক কোথায় সমস্যা তার কোন কুল কিনারা করতে পারেনি বিদ্যুৎ অফিস। কোন সন্তোষজনক উত্তরও নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। ফলে সাধারণভাবেই মানুষের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে এটা কি রামু উপজেলা বিদ্যুৎ অফিসের গাফেলতি না তাদের সীমাবদ্ধতা। কর্তৃপক্ষ কো-অপারেট করতে বলেছেন। কিন্তু ঠিক কতখানি কো-অপারেট করা হলে বিদ্যুতের সঠিক সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে বা নিরাপদ বিদ্যুৎ রামুর মানুষ পাবে তারই উত্তর খুজছে রামুর সচেতন মহল।