মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া:
পেকুয়া উপজেলায় দুই যুবককে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। পরিবারের দাবি, গত বৃহস্পতিবার রাতে দুই যুবককে অপহরণ করার পর অজ্ঞাতস্থানে আটকে রেখে অপহরণকারী চক্র শুক্রবার সকালের দিকে ভিকটিমের (অপহৃতের) মোবাইল থেকে দুইলাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করেছে। অপহরণের শিকার যুবকরা হলেন পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের ফাশিয়াখালী গ্রামের মোস্তাক আহমদ সওদাগরের পুত্র হারুনর রশিদ (২৫) ও পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ভোলাইয়া ঘোনা গ্রামের নুরুর আলমের পুত্র আবদুল্লাহ আল নোমান (২২)।
অপহৃত হারুনের ছোটভাই মোহাম্মদ তারেক জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর ভাইসহ অপর একজনকে পেকুয়া চৌমুহুনী থেকে অপহরণ করে দূর্বুত্তরা অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখেছে। গতকাল শুক্রবার সকালে অপহরণকারীরা ভাইয়ের (অপহৃতের) মোবাইল ফোন থেকে তাকে অপহরণ করার কথা জানিয়ে মুক্তিপন চাইলে আমরা (পরিবার সদস্যরা) জানতে পারি। তিনি বলেন, কথা মতো গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত অপহরণকারীদের দেয়া একাধিক বিকাশ নাম্বারে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা আমরা (পরিবার) দিয়েছি, কিন্তু উল্টো দাবিকৃত মুক্তিপন বাবত আরো ৭০ হাজার টাকা পাঠানোর জন্য হুমকি দিচ্ছে অপহরণকারীরা এমন অভিযোগ করেছেন অপহৃতের ছোটভাই মোহাম্মদ তারেক।
এ অবস্থায় আমরা বিকাশের মাধ্যমে আবারও টাকা পাঠাতে নাম্বার সন্ধান করি। তাঁরা (অপহরনকারী) চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের বহদ্দারকাটা স্টেশনের একটি বিকাশ এজেন্টের নাম্বার দেন। অন্য এলাকা থেকে ওই নাম্বারে টাকা দিয়ে বিষয়টি আমরা চকরিয়া ও পেকুয়া থানার ওসিকে অবহিত করি। পরে চকরিয়া থানার ওসি মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর সহায়তায় বহদ্দাকাটাস্থ মাতামুহুরী পুলিশের নেতৃত্বে বিকাশ এজেন্টের দোকানের সামনে অবস্থান করে পাঠানো টাকা উত্তোলনকালে মোহাম্মদ সেলিম নামের অপহরণকারী চক্রের এক সদস্যকে হাতেনাতে আটক করা হয়। আটক সেলিম পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের নয়াকাটা গ্রামের জাফর আলমের পুত্র ও আন্ত:জেলা অপহরণকারী সিন্ডিকেট চক্রের সক্রিয় সদস্য।
চকরিয়া থানার ওসি মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিকাশে পাঠানো টাকা উত্তোলনকালে আটক সেলিম নামের অপহরণকারী চক্রের ওই সদস্যকে মাতামুহুরী পুলিশ ফাঁিড় থেকে থানায় আনা হয়েছে। পরে তাকে পেকুয়া থানা পুলিশের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে।
পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সেলিম অপরহনের কথা স্বীকার করে। তার দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলে চকরিয়ার হারবাংয়ের অদূরে গভীর জঙ্গল থেকে অপহৃত দুই যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে। অপহৃতদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাদের গতকাল রাতেই পেকুয়া সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় অপহৃত হারুনের ছোট ভাই তারেক বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় চারজনের বিরুদ্ধে গতকাল রাতেই একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং ১১। মামলায় আসামীরা হলেন উপজেলার বারাবকিয়া ইউনিয়নের নয়াকাটা গ্রামের জাফর আলমের পুত্র সেলিম, টইটং ইউনিয়নের জুম পাড়া গ্রামের নুরুল ইসলাম, তার পুত্র জসিম উদ্দিন ও একই এলাকার আবদুল হামিদসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনকে আসামী করা হয়েছে।
পেকুয়া থানা পুলিশের এসআই কিশোর মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুই যুবক অপহরনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামী সেলিমকে গ্রেফতার আদালতে সোপর্দ্দ করা হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
স্থাণীয়রা অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় এক বিতর্কিত ইউপি চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় অবস্থান করে সেলিম অপহরণসহ নানান ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছে বলে এলাকাবাসীদের সূত্রে জানা গেছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।