নিজস্ব প্রতিবেদক:
সকালের ঘরকোয়াশা ভেদ করে দুর্গম উপকূলের অসংখ্য শিক্ষার্থী সমবেত হয় শহরের কক্সবাজার সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে। সকাল ৯টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া কক্সবাজার আঞ্চলিক ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের উদ্বোধন করেন কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সুভাষ চন্দ্র সাহা।
তিনি বলেন, বিজ্ঞান শিক্ষা সবচেয়ে প্রয়োজনীয় শিক্ষা। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হল, কক্সবাজারের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দিনদিন বিজ্ঞানের প্রতি অনিহা তৈরী হচ্ছে। এটা দূর করতে ফিজিক্স অলিম্পিয়াড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি বিশ্বের দীর্ঘতম পর্যটননগরী হিসেবে কক্সবাজারে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি প্রকৌশল কলেজ স্থাপন করা এখন সময়ের দাবী।
প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ অলিম্পিয়াড কমিটি ও ডাচবাংলা ব্যাংকের আয়োজনে অনুষ্ঠিত কক্সবাজার আঞ্চলিক ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য দেন কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ফজলুল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রামের লোহাগড়া আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ফজলুল হক, কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মফিদুল আলম ও প্রথম আলো সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার আব্দুল কুদ্দুস রানা।
কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ফজলুল করিম চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী দিনদিন কমে যাচ্ছে। পদার্থ বিদ্যার কথা শুনলে শিক্ষার্থীরা আঁতকে উঠছে। তারা বিজ্ঞান মনস্কতা হারাচ্ছে। এটি চলতে থাকলে জাতির জন্য একটি অন্ধকার ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে।
তিনি আরও বলেন, পূতিগত বিদ্যা একজন মানুষকে কখনোই উচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে পারে না। তাই বাস্তব শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। এই ফিজিক্স অলিম্পিয়াড শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি ভীতি দূর করবে। আর তাদেরকে উৎসাহিত করবে।
প্রথম আলোর সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার আব্দুল কুদ্দুস রানা বলেন, প্রথম আলো শুধু সংবাদ পরিবেশন নয়; সমাজে যা কিছু ভালো সবকিছুই করার চেষ্টা করে। শুদ্ধ ভাষা শেখার জন্য ভাষা প্রতিযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে জানার জন্য ইন্টারনেট উৎসব, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও গণিত জানার জন্য গণিত উৎসব পালন করে। এবার শুরু হয়েছে ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। এটি বিজ্ঞানকে সহজভাবে গ্রহণ করার জন্য শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করবে।
জেলার আটটি উপজেলার (চট্টগ্রামের কয়েকটিসহ) ৫২টি স্কু-কলেজের ৫৪৫ জন শিক্ষার্থী উৎসবে অংশ নেন। শিক্ষার্থীরা মাদক, মুখস্ত, মিথ্যা, বাল্যবিবাহ এবং ইভটিজিংকে ‘না’ বলেন।
শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষা শেষে চলে বন্ধুসভার সদস্যদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্টান।
এরপর সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভা কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ফজলুল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত হয়। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সোমেশ্বর চক্রবর্তী শিক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারে সতর্ক করেন এবং পরীক্ষার্থী না হয়ে শিক্ষার্থী হওয়ার তাগিদ দেন। এছাড়াও অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী, ট্যুরিষ্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারি পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমি ও দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকার পরিচালনা সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে প্রশ্নপর্ব ছাড়াও চলে সায়েন্স ভিডিও শো ও শোভাযাত্রা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো বন্ধুসভার জেলা কমিটির সভাপতি ইব্রাহিম খলিল। শেষে প্রতিটি ক্যাটাগরীতে ২০ জন করে ৬০ জন প্রতিযোগীকে জাতীয় পর্যায়ের জন্য মনোনীত করা হয়।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।