তাজুল ইসলাম পলাশ, চট্টগ্রাম:
গত কয়েকদিন ধরে শোকে যেন নিস্তব্ধ হয়ে আছে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামবাসীর প্রিয় নেতা নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক তিন বারের সিটি মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীকে হারিয়ে মৃত্যু শোক যেন কেটে উঠতে পারেনি চট্টগ্রামবাসী। তাছাড়া গত তিন দিন ধরে শোক পালন করছে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন। নগরজুড়ে যেন বিরাজ করছে হতাশা। এরই মধ্যে আজ প্রিয় নেতার কুলখানীতে পদদলিত হয়ে মারা গেছে ১০ জন। যাদের সবাই সনাতন ধর্মী।
এঘটনায় আহত হয়েছে কমপক্ষে অর্ধ শতাধিক। নিহত ও আহতদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ । অপ্রিতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নেতার কুলখানী খেতে এসে নিজেরাই লাশ হবে এমনটি ভাবতেই পারেনি কেউ। আর একসাথে এতগুলো লাশের ভার বহন করতে হবে চট্টগ্রামবাসীকে যা ছিল চিন্তারও বাহিরে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, লাশের ভারে বারি হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।
একনজর দেখতে হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসছে চমেকে । আহত ও নিহতদের স্বজন ছাড়াও হাসপাতালে ভিড় করছেন সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা। নিহতদের স্বজনদের আহাজারীতে বাকরুদ্ধ সবাই। মেজবান খেতে এসে পদদলিত হয়ে এতো লোকের মৃত্যু তা মেনে নিতে পারছেননা অনেকে। পাশাপাশি সমালোচনাও হচ্ছে আয়োজকদের গাফেলতি নিয়ে। নিহতদের আত্মিয় স্বজনরা বলছেন, আয়োজকদের গাফেলতির কারনে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি অফিসার আমিনুল হক সরকার জানান, এখনো পর্যন্ত ১০ জনের খবর নিশ্চিত করতে পেরেছি। তিনি বলেন, তিন জনের অবস্থা আশংকাজনক। তারা হাসপাতালের আই সি ও তে আছে।
নিহত প্রদ্বীপ দাশের স্ত্রী রেখা তালুকদার জানান, এতো লোকের করতে হলে অনেক নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করতে হতো। তাহলে এতো বড় দূঘটনা ঘটতো না।
একই কথা বললেন, নিহত লিটন দেব এর বড় ভাই ঝুটন দেব।
প্রয়াত নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরিবারের পক্ষ থেকে নগরীর ১২টি কমিউনিটি সেন্টারে প্রায় লক্ষাধিক লোকের মেজবানের আয়োজন করা হয়েছিল। মেজবান খেতে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশসহ বিভিন্ন এলাকায় মাইকিংও করা হয়। এতো লোকের আয়োজনের বিষয়ে আরো সতর্ক হওয়া দরকার ছিল বলে মনে করছেন অনেকে। আরো কয়েকটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজন করছে চাপ কিছুটা কম হতো। এতে করে এমন দুর্ঘটনা দেখতে হতোনা চট্টগ্রামবাসীকে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরীর আসকারদীঘির পাড় রিমা কমিউনিটি সেন্টারে মেজবান খেতে এসে সোমবার দুপুরে পদদলিত হয়েছে সনাতন ধর্মের ১০জন নিহত হয়।
নিহতরা হলেন-নিহতরা হলেন, কৃষ্ণ দাশ (৪৫),পিতা রায় মোহন দাশ, উত্তর কাট্টলী,পাহাড়তলী, সুধীর দাশ(৫০) পিতা লাল মোহন দাশ, পাথরঘাটা, কোতোয়ালী, প্রদীপ তালুকদার (৫৪) পিতা মনোরঞ্জন তালুকদার, ফতেয়াবাদ, ঝন্টু দাশ (৪৬) পিতা বিনোদ বিহারী, ফতেয়াবাদ, ধনাশীল (৪৫) পিতা অজ্ঞাত, বাঁশখালী, অলক ভৌমিক (৩৬) পিতা ননী গোপাল ভৌমিক, ছোট কুমিরা, সীতাকু-, লিটন দেব (৫০) পিতা প্রকৃতি রঞ্জন দেব, মোহসেন আউলিয়া, আনোয়ারা, দিপংকর রাহুল দাশ (২৬) পিতা অজ্ঞাত, বড়ইতলী, চকরিয়া কক্সবাজার।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।