জীবন থমকে গেছে রাখাইনে

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১০:১০

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


ফাইল ছবি : রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে মিয়ানমার সেনাবহিনী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উত্তরের এক লাখ ৮০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গার জীবন থমকে গেছে বলে জানিয়েছে রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি। বুধবার রেড ক্রসের পক্ষ থেকে এ ধরনের মন্তব্য করা হয়।

চলতি বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহনী ও পুলিশের বেশ কিছু তল্লাশি চৌকিতে হামলার অযুহাতে রোহিঙ্গা নিধন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে ছয় লাখ ২৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

আইসিআরসির পরিচালক ডোমিনিক স্টিলহার্ট জানান, সেখানে এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে। রোহিঙ্গাদের দোকান খুলতে এবং বাজারে যেতে বাধা দিচ্ছে সংখ্যাগুরু বৌদ্ধরা।

২৫ আগস্টের পর থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষকে পাঠ্যপুস্তকে উল্লিখিত গণহত্যার উদাহরণের সঙ্গে তুলনা করেছে জাতিসংঘ। সংঘর্ষের মধ্যেই আইসিআরসি একমাত্র সংস্থা যারা রাখাইন রাজ্যে সাহায্য পাঠানোর জন্য কাজ করেছে।

এদিকে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ সরকার। সেই চুক্তি অনুসারে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেয়ার পর আবারও সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা বলছে, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি এখনও সঙ্কটাপন্ন। সে ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ছাড়াই ফিরিয়ে নেয়ার ফল ভাল হবে না।

অবশ্য রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিয়ে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়নি। জাতিসংঘের দাবি, আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। একই দাবি বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে।

তবে সেসব দাবি উপেক্ষা করে মিয়ানমার বলছে, তারা দিনে তিনশ জনের বেশি করে ফিরিয়ে নিতে পারবে না। সেই হিসেবে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে পাঁচ বছরের বেশি সময় লেগে যেতে পারে।

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া হলেও তাদেরকে ঠিক কোথায় পুনর্বাসন করা হবে সে ব্যাপারেও স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। মিয়ানমার বলছে, কেবল বৈধ প্রমাণ সাপেক্ষে নিজেদের দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়া হবে।

যদিও বংশ পরম্পরায় বসবাস করে আসলেও রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। তাছাড়া সহিংসতার মধ্যে রাখাইন ছেড়ে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের কাছে তেমন নথিপত্রও নেই। সে কারণে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, রোহিঙ্গা ফেরানোর প্রক্রিয়া অনেকটাই জটিল হবে।