শাহেদ মিজান, সিবিএন:
জুমার নামাজে আদায় করতেু কক্সবাজারে চলমান ইজতেমায় মুসল্লীদের ঢল নেমেছে। ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী স্থায়ী মুসল্লী ছাড়াও আরো বিপুল মুসল্লী জুমার নামাজ আদায় করেছে ইজতেমায়। সব মিলে ইজমেতমায় তিন লক্ষাধিক মুসল্লী জুমার নামাজ আদায় করেছে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করেছেন। এতে ইজতেমা প্রাঙ্গণ মানুষে কানায় কানায় ভরে উঠে।
আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে শহরের জেলে পার্ক মাঠ-সংলগ্ন পশ্চিমের ১৭ একর জায়গাজুড়ে শুরু হয় তিনদিন ব্যাপী কক্সবাজার জেলা ইজতেমা। ওই দিন ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মাধ্যমে তিন দিন ব্যাপী এই ইজতেমা শুরু হয়। শুক্রবার ইজতেমার জুমার নামাজ আদায়ের আয়োজন করা হয়। নামাজে স্থায়ী মুসল্লী ছাড়াও কক্সবাজার শহর, কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও রামুসহ দূর-দূরান্ত থেকে বিপুল মুসল্লী অংশ নিতে আসেন। সব মিলে তিন লক্ষাধিক মুসল্লী এক সাথে নামাজ আদায় করেন। নামাজে অংশ নেন কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন ও কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম রহিম উল্লাহসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন গণমান্য ব্যক্তিগত। জুমার নামাজে বিপুল মহিলাও অংশ নেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেলা ১১টা থেকে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লীরা ইজতেমা স্থলে আসতে থাকে। নামাজ শুরু হওয়ার আগেই ভরে উঠে পুরো ইজতেমাস্থল। সেখানে জায়গা সংকুলান না হলে অনেকে পাশের বালিকা মাদ্রাসা সড়ক ও আশেপাশে নামাজ আদায় করেন। নামাজের শুরু হয় ওয়াজ। নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলো শত শত পুলিশ সদস্য। সব মিলে শান্তিপূর্ণভাবে জুমার নামাজ আদায় করেন মুসল্লীরা।
ইজতেমার আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানান, জেলা পর্যায়ে ক্যাটাগরিতে কক্সবাজারে তৃতীয়বারের মতো ইজতেমা অনুষ্ঠিত চলছে। পাঁচ লাখ মুসল্লী সমাগমের লক্ষ্য নিয়ে পুরো ইজতেমা স্থলের ১৭ একর জায়গায় প্যান্ডেল করা হয়েছে। জেলার রামু, চকরিয়া, সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া টেকনাফ, উখিয়া এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও লামা উপজেলার মানুষ ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও কক্সবাজারে অবস্থানরত দেশের বিভিন্ন স্থানের তাবলিগ জামাতের লোকজন ও বাংলাদেশ অবস্থানরত ওমান, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার তাবলিগ জামাতের লোকজন অংশ নিয়েছেন। ইজতেমায় তাবলিগ জামাতের আহলে সুরা মাওলানা মোজাম্মেলুল হক, ছৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, মাওলানা মোশারফ ও কাকরাইল মসজিদের ওস্তাদ মাওলানা মনির বিন ইউসুফসহ দেশবিদেশের আরো বেশ কয়েকজন বক্তা বয়ান করছেন। প্রতিদিন ফযরের নামাজের পর শুরু হয়ে এশার নামাজ পর্যন্ত ইজতেমার বয়ান চলছে। শনিবার দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইজতেমা শেষ হবে।
ইজতেমা বাস্তবায়ন কমিটির জিম্মাদার আতাউল করিম জানান, ইজতেমায় মুসল্লীদের প্রয়োজন মাফিক সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তার জন্য বসানো হয়েছে ৬’শ টয়লেট, শতাধিক নলকূপ, সাতটি বিশাল আকারের ওজুখানা, পানির জন্য ২২টি মটর। মুসল্লীদের খেদমতের জন্য ইজতেমার কর্তৃপক্ষের এক হাজার ২০০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জেলা পুলিশের সাড়ে তিন’শ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছে। তাদের নেতৃত্বে রয়েছেন তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
ইজতেমা বাস্তবায়ন কমিটির জিম্মাদার আতাউল করিম বলেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি আর নৈকট্য লাভের আশায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ইজতেমায় শরিক হন। ইতিমধ্যে অনেক মুসল্লী চলে এসেছেন। শুক্রবার ইজতেমায় সর্বাধিক মুসল্লীর সমাগম ঘটবে বলে আশা করছি। একই ভাবে শনিবার আখেরি মোনাজাতেও রেকর্ড পরিমাণ মুসল্লী সমবেত হবেন।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন বলেন, ইজতেমা ও মুসল্লীদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। সেই সাথে সব ধরণের গোপনীয় নাশকতার আশঙ্কা ঠেকাতে গোয়েন্দা নজরদারী রয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।