দর পতনে ব্যবসায়ীরা হতাশ
মোঃ আশেকুল্লাহ ফারুকী, টেকনাফ :
মিয়ানমারে রাখাইন (আরাকান) রাজ্যে সহিংস ঘটনা বিদ্যমান থাকার পরও টেকনাফ স্থল বন্দরে আমদানি ও রপ্তানীতে এখন চাঙ্গাভাব। যে সব পণ্য আমদানিতে শীর্ষে রয়েছে, চাউল, কাট, মাছ ও আঁচার অন্যতম। গত ২ ডিসেম্বর বিকালে এ প্রতিবেদক স্থল বন্দর পরিদর্শনে দেখা যায়, চাউল নিয়ে জাহাজ মিয়ানমার থেকে জেটিতে ভিড়েছে। কয়েকটি গোদাম ছাড়াও স্থল বন্দরের মাঠে চাউল রাখার তিল পরিমাণ জায়গা নেই। এসব পণ্য খোলা আকাশের নীচে পড়ে আছে। ইতিপূবের্ং বাংলাদেশ মিয়ানমার পর্যায়ে চাউল আমদানি চুক্তি সম্পদিত এবং ২৫ আগষ্ট রাখাইন (আরাকান) রাজ্যে সেনাবাহিনী ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে সহিংস ঘটনার পর দলে দলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর মিয়ানমার থেকে অন্যান্য আমদানি পণ্যের চেয়ে চাউল আমদানি অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। স্থল বন্দর গোদাম ও শেড ভর্তি ছাড়াও মাঠে তিল পরিমাণ জায়গা নেই চাউল রাখার। গত ২ ডিসেম্বর দুপুরে এ দৃশ্য চোখে পড়ে। আমদানি ও রপ্তানী পণ্য উঠানামা করার জন্য ক্রেইন না থাকলেও শত শত শ্রমিক চাউল জাহাজ থেকে কাঁধে বহন করে ট্রাকে এবং স্থল বন্দর মাঠে ও গুদামে রাখতে দেখা যায়। চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে মিয়ানমার থেকে চাউল আমদানি শুরু হয় এবং এখনো এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে আরো ৫টি ছোট বড় জাহাজ চাউল ভর্তি নিয়ে স্থল বন্দর জেটির পাশ্বে নোঙর করে চাউল খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। দেশে আমন ধানের চাউল বাজারে আসায় মিয়ানমারের আমদানিকৃত চাউলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেনা ব্যবসায়ীরা। চাউলের মূল্য বা দর পড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা স্থানীয়ভাবে গুদামে মওজুদ করছে এবং চাউলের মূল্য বা পত্তা পাবার আশায় ব্যবসায়ীরা স্থল বন্দর খোলা মাঠে চাউলের স্তপ করে রেখেছে। এমতাবস্থায় স্থল বন্দরে বাজারজাত করনের উদ্দেশ্যে ৪/৫টি ট্রাকে শ্রমিকেরা চাউল বোঝাই করছে।
আমদানি পণ্যের হেড মাঝি করিম জানায়, বাজারে চাউলের মূল্য দরপতন হওয়ায় ব্যবসায়ীরা চাউল বাজারজাত করেন তেমন উৎসাহী নয় বিধায় চাউল এভাবে মাঠে পড়ে আছে। স্থল বন্দর দিয়ে যে ক’জন চাউল আমদানী করছেন, তাদের মধ্যে আলহাজ্ব মোঃ হাশেম, বিসমিল্লাহ, শওকত, সৈয়দ করিম ও সাদ্দাম হোছন উল্লেখযোগ্য। ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের দায়িত্বে নিয়োজিত সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোঃ জসীম উদ্দীন চৌধুরী ২০১৭ সালের জানুয়ারী মাসে এখানে তিনি যোগদান করার পর স্থল বন্দরের ছোট খাটো বিভিন্ন সমস্যা কেটে উঠে, স্থল বন্দরের ব্যবসায়ীদের সুযোগ সুবিধা অনেকাংশে পূরণে স্বচেষ্ট হন। কিন্তু গেল প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোরার আঘাতে ইমেগ্রেশান জেটি, মূল্য জেটি, শেডসহ বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এছাড়া ও আমদানি পণ্য বোঝাই অনেককগুলি জাহাজ জেটির সাথে বেঁধে রাখে এবং যাহা ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশী। যার কারণে জেটিগুলো ক্ষতিগ্রস্থের অন্যতম বলে তিনি জানান। পরবর্তীতে আমদানি রপ্তানী পণ্য উঠানামা করার স্বার্থে এবং স্থল বন্দরের চেহারা পাল্টাতে সম্প্রতি ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে দীর্ঘ কাটের স্টীল জেটি নির্মিত করা হয়। যাহা বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভবিষ্যতে স্থল বন্দরের উন্নয়নে কার্গোজেটি নির্মাণ পণ্য উঠানামার জন্য ক্রেইন ক্রয়, স্কেল এবং অন্যান্য স্থাপনা সংস্কার পূর্বক স্থল বন্দরকে একটি আধুনিক মানে গড়ার লক্ষ্যে ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বরাবরে বিষয়টি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে চিটি দিয়েছেন বলে জানা যায়। গত নভেম্বর মাসে ৯ কোটি ৭৩ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা রাজস্ব আয় করেছে যার বিল অব এন্টি নং- ৬৬৯। নির্ধারীত টার্গের চেয়ে ২ কোটি ৫৬ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হয়েছে। অপর দিকে রপ্তানিতে ১ কোটি ৫১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা এবং বিল অব এন্টি নং ৩৮। কাস্টমস্ সুপার জানান- এখন ভরা মৌসূম এবং আবহাওয়া অনুকূলে এবং দেশের পরিস্থিতি ভাল থাকলে রাজস্ব আয়ের আরও চমক দিবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।