ডেস্ক নিউজ:
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জঙ্গি নিয়ে ব্যক্তিগত মতামত, খবর শেয়ার ও বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সংযত হতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক। গত ৩০ অক্টোবর এ আদেশ দেন তিনি।
ওই আদেশে বলা হয়েছে, অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গি বিষয়ে গণমাধ্যম বা ইন্টারনেটে প্রকাশিত কোনও নিউজ শেয়ার দিয়ে বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সবাইকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এতে বাহিনী ও জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। তাই এ ধরনের মতামত প্রকাশ না করতে বলা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
পুলিশ মহাপরিদর্শকের এই আদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব), নৌ, ট্যুরিস্ট, শিল্প পুলিশ ও আর্মড ফোর্সেসসহ বাহিনীর প্রতিটি ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তৎপরতা চালায়। এর মধ্যে পুলিশের পাশাপাশি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানও (র্যাব) জঙ্গি মোকাবিলায় কাজ করছে। বিভিন্ন সময় জঙ্গি গ্রেফতার ও জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে জঙ্গি নিহতের ঘটনাও ঘটছে। র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা এসব অভিযান নিয়ে প্রায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও নিউজ শেয়ার করে থাকেন।
পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এক বাহিনীর সদস্যরা অন্য বাহিনীর জঙ্গি অভিযান নিয়ে যেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ না করেন। সেজন্য অক্টোবরের দিকে আদেশটি দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে এ ধরনের মতামত জঙ্গি গ্রেফতার ও অভিযান নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে। তাই এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য আলাদা কোনও নীতিমালা নেই। তবে একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে এখানে কর্মরত সদস্যদের ওপর আইজিপির নির্দেশনাকে সময়ের দাবি বলে মনে করছেন পুলিশ সদর দফতরের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-অ্যাডমিন) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আদেশ হয়। এটা স্বাভাবিক। কারণ, পুলিশ বাহিনী যখন গঠিত হয় তখন এত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছিল না। তাই এর ব্যবহারের বিষয়ে পুলিশ প্রবিধানে কোনও দিকনির্দেশনা নেই। এরকম অনেক কিছুই চাহিদা অনুযায়ী করতে হয়।’
পুলিশের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা যখন গণমাধ্যমে কোনও মতামত লিখি, কথা বলি অথবা টকশোতে কথা বলি, তখন যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কথা বলি। কেবল পুলিশ নয়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যে কোনও কাজ করতে গেলেই কিছু দায়িত্বশীলতার মধ্যে থেকে তা করতে হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী, সময়ে সময়ে এমন বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়।’
ডিআইজি আব্দুল্লাহ আল মামুন উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘যখন সাইবার অপরাধ ছিল না, তখন কিন্তু সাইবার আইনও ছিল না। আবার যখন সাইবার অপরাধ এসেছে, তখন তা দমনে আইনও হয়েছে। অর্থাৎ, প্রয়োজনীয়তা থেকেই নতুন আইনও প্রণয়ন করা হয়। সুশৃঙ্খল একটি বাহিনী হিসেবে পুলিশ সদস্যদেরও একটি শৃঙ্খলার মধ্যে থাকতে হবে। আর তা নিশ্চিত করতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের জন্য নতুন নতুন বিষয়েও নির্দেশনাও আসবে— সেটিই স্বাভাবিক।’
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।