শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর:
কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডীতে এখন শুটকি উৎপাদন এবং তা প্রক্রিয়াজাতকরনে ব্যস্ত সময় পার করছে ইউনিয়নের অন্তত ৫ থেকে ৬ শতাধিক শুটকি তৈরির সাথে জড়িত পুরুষ ও নারী শ্রমিক। সংশ্লিষ্টদের আশা চলতি মৌসুমে এবার ২ কোটি টাকার শুটকি রপ্তানী হওয়ার সম্ভাবনা। যা দেশে বিদেশে শুটকির চাহিদা মেটাতে সক্ষম। এদিকে শুটকি ব্যবসায়িদের দাবী তাদের কোন ধরনের সরকারি ভাবে সহযোগিতা করা হয় না। ঋণ নিয়ে কোনভাবে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মোট কথা খুবই মানবেতর জীবন যাপন করে এই বিশাল শিল্পের সাথে কাজ করছে। যদি সরকারি ভাবে তাদের কিছু ঋন দিয়ে সহযোগিতা করতো তাহলে এই ব্যবসায় তারা আরো লাভবান হতে পারতো। চৌফলদন্ডী এলাকার শুটকী ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম জানান, প্রায় ২ মাসের বেশি সময় ধরে শুটকি উৎপাদন শুরু হয়েছে, তবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কার্যক্রম বেশি চলছে। জেলার ইউনিয়ন হিসাবে চৌফলদন্ডীতে সবচেয়ে বড় শুটকি মোকাম। এখানে চলতি মৌসুমে প্রায় ২ কোটি টাকার শুটকি উৎপাদন হতে পারে। যা দেশ বিদেশের শুটকির চাহিদা মেটাতে সক্ষম। তিনি আরো বলেন দেশের সবচেয়ে বড় এই শিল্পকে সরকার কোন ধরণের সহযোগিতা করেনা। বরং মাঝে মধ্যে অনেক ঝামেলায় ফেলে। তিনি আশা প্রকাশ করেন এই মৌসুমে কমপক্ষে দেড় লক্ষ টন শুটকি উৎপাদন হবে যার আনুমানিক মূল্য ২ কোটি টাকা। স্থানীয় যুবনেতা রফিকুল ইসলাম বলেন শুটকি উৎপাদন একটি অনেক বড় প্রক্রিয়া। এটার সাথে কয়েক শত মানুষ জড়িত, আমার মতে শুটকি একটি বড় শিল্প কিন্তু এই ব্যবসা এখানো শিল্পের মর্যাদা পাননি। এলাকার শ্রমিকরা খুবই কষ্টের মধ্যে থেকে ব্যবসা করে আসছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে পশ্চিম পাড়ার ব্রীজ ঘাট, তৎসংলগ্ন এলাকা, উত্তর পাড়াসহ আরো কয়েকটি এলাকায় শত শত শ্রমিক শুঁটকি উৎপাদনে মহাব্যস্ত। গভীর সাগর থেকে শতাধিক ট্রলার মাছ আহরণ করে চৌফলদন্ডী ব্রীজ ঘাট, তৎসংলগ্ন এলাকায় ভিড়ছে। এসব ট্রলার আসা বিভিন্ন কাঁচা মাছ রোদে শুকিয়ে শুঁটকি করা হচ্ছে। চৌফলদন্ডী নদী ও জাপানী সড়কে বিভিন্ন গ্রামের কয়েকটি বসত ঘরের ছাদে ও উঠানে মাচা বানিয়ে তৈরি হচ্ছে শুঁটকি। এখানে লইট্যা, ছুরি, লাক্কা, পোয়া, ফাইস্যা, মাইট্যা, রূপচান্দা, চিংড়ি মাছসহ বিভিন্ন ধরনের শুঁটকি উৎপাদিত হচ্ছে। পশ্চিম পাড়ার শুঁটকি ব্যবসায়ী একরামুল হক জানান, প্রতি সপ্তাহে তিনি গ্রাম থেকে গড়ে ৫০ মন শুঁটকি চট্টগ্রামে খাতুনগঞ্জের শুটকী আড়তে সরবরাহ দিচ্ছেন। সেখান থেকে ওই শুঁটকি তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানসহ সারা দেশে যাচ্ছে বলে তিনি জানান কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল আলীম বলেন চৌফলদন্ডীসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে শুটকির একটি বিশাল সুনাম আছে সেটা টিকিয়ে রাখতে হবে। মাঝে মধ্যে শুনা যায় শুটকিতে ক্ষতিকারক বিষ মিশিয়ে তারা কৃত্রিম ভাবে শুটকি উৎপাদন করছে এটা খুবই দুঃখ জনক। এ সময় তিনি শুটকি ব্যবসায়িদের সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করা হয় বলে জানায়।