হাবিবুর রহমান সোহেল,নাইক্ষ্যংছড়ি :
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের বাঁকখালী মৌজার ছাগল খাইয়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ হোছন (৪২) ও নুরুল আজিম (৩২) গত ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নিজ বাড়ী থেকে ৮/১০ জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের একটি দল অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণের দুইদিন পর অপহৃতদের মোবাইল থেকে ফোন করে পরিবারের সদস্যদের নিকট ৭ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে আসছিল সন্ত্রাসীরা। টাকার পরিমাণ কম হলেও এবং যথাসময়ে টাকা পরিশোধ না করলে তাদের হত্যা করা হবে বলেও মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়ে আসছিল সন্ত্রাসীরা।অপহৃত মোঃ হোছনের স্ত্রী রাশেদা বেগম জানান, অপহরণের দুইদিন পর মোবাইল ফোনে তার স্বামীর মুক্তিপনের জন্য ৪ লাখ টাকা দাবী করেছিল। গতকাল রবিবারও একইভাবে টাকা দাবী করে এবং না দিলে হত্যার হুমকি দেয়। বৃদ্ধ পিতা ফয়েজ আহাম্মদ কান্নারত অবস্থায় বলেন, তারা কৃষি কাজ করে কোন রকমে ঘর সংসার চালায়। এত টাকা কোথায় পাবে এবং ছেলেকে কিভাবে জিম্মি দশা থেকে মুক্তি করে আনবে ! এ কথা বলে তিনি বিলাপ করে কাঁদতে থাকেন। অপহৃত নুরুল আজিমের স্ত্রী ইছমত আরা বলেন, স্বামীর মুক্তির জন্য ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে সন্ত্রাসীরা। অন্যথায় তাকেও হত্যা করা হবে। অপহৃত নুরুল আজিমের বড় ভাই আমির হোছন জানান, তারা অত্যন্ত গরীব। এত টাকা কোথায় পাবে। কোন রকমে মানুষের জমি বর্গা চাষ করে তাদের সংসার চলে। গতকাল রবিবার এই প্রতিবেদক সরজমিনে গিয়ে দুর্গম দোছড়ি ইউনিয়নের বাঁকখালী মৌজার ছাগল খাইয়া গ্রামে অপহৃতদের আত্মীয় স্বজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, অপহরণের পর দুর্গম পাহাড়ে পুলিশ-বিজিবির অভিযান অব্যাহত আছে। তারপরও ৬দিন যাবত তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মাঝে উৎকন্ঠায় দিন কাটছে। স্ত্রী-পুত্র, মা-বাবার কান্নায় আকাশ, বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। তারা শঙ্কায় রয়েছেন যদি তাদের হত্যা করে ফেলে। তাদের হাতে টাকাও নাই, কোন রকম অল্প কিছু টাকা দ্বার কর্জ্ব করে যোগাড় করেছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানান। আজ দীর্ঘ ৬দিন পার হলেও তাদের উদ্ধার সম্ভব হয় নাই। স্থানীয় ইউপি সদস্য রেহেনা আক্তার জানান, অপহৃত দুইজনের উদ্ধারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসীরা মাঝের মধ্যে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দুইজনের জন্য ৭ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবীর কথা তিনি তাদের পরিবারের নিকট শুনেছেন। এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার নবাগত ইনচার্জ মোঃ আলমগীর শেখ এর নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, অপহৃতদের উদ্ধারে পুলিশ-বিজিবির অভিযান অব্যাহত রায়েছে এবং সম্ভাব্য স্থানগুলো ঘেরাও পূর্বক অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অচিরেই অভিযানের মাধ্যমে উদ্ধার করা সম্ভব বলে তিনি আশা করছেন। উল্লেখ্য, বিগত দিনেও দোছড়ি ইউনিয়নের বাঁকখালী মৌজার ছাগল খাইয়া থেকে ৬জন তামাক চাষী অপহরণ করেছিল সন্ত্রাসীরা। তাদেরকেও মুক্তিপনের বিনিময়ে সন্ত্রাসীরা ছেড়ে দেয় বলে স্থানীয়রা জানান।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।