সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর ৪০২তম পাক্ষিক সাহিত্য সভায় বক্তাগণ বলেন, মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যে রামু এঅঞ্চলের অবদান অনস্বীকার্য। রামুর মাটি মধ্যযুগের অনেক কবির পদধুলিতে ধন্য হয়েছে। জেলার বিশিষ্ট ছড়া শিল্পী ধনিরাম বড়–য়া তাদেরই একজন উত্তরসূরী। তিনি শুধু ছড়া লিখে হাত পাকাননি। তিনি একাধারে কবি, উপন্যাসিক, নাট্যকার, লোকগবেষক। তিনি একজন দক্ষ মানুষ গড়ার কারিগরও। শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন শিশু-কিশোরকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি আধুনিক লেখালেখিতে হাত পাকিয়েছেন ৫০-এর দশকেই। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের ২০ ডিসেম্বর রামু উপজেলা সদরের ফতেখারকূল ইউনিয়নের বাঁকখালী নদীর তীর সংলগ্ন শ্রীধনপাড়ায় এই ছড়াশিল্পীর জন্ম।
সাহিত্য একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি-লোকগবেষক মুহম্মদ নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে একাডেমীর এন্ডারসন রোডের চৌধুরী কুটিরস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে ২৪ নভেম্বর ২০১৭ শুক্রবার অনুষ্ঠিত সাহিত্য সভায় বক্তাগণ এসব কথা বলেন।
বক্তাগণ বলেন, ধনিরাম বড়–য়া ১৯৫৮ সালে রামু খিজারী উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীতে অধ্যয়নকালেই লেখালেখি শুরু করেন। এটা কম কথা নয়। সে সময়কার ‘দৈনিক আজাদ’ পত্রিকার ‘মুকুলের মাহ্ফিলে’ তার প্রথম ছড়া প্রকাশিত হয়।
বক্তাগণ বলেন, ধনিরাম বড়–য়া পড়ালেখা বেশি না করলেও গান, বাঁশি, তবলা, সেতার ইত্যাদি রপ্ত করেন। তিনি এই বয়সেও বাঁশি বাজিয়ে বাজি মাত করেন।
একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে একাডেমীর স্থায়ী পরিষদের চেয়ারম্যান কবি সুলতান আহমেদ, একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও স্থায়ী পরিষদের সদস্য কবি মীর্জা মনোয়ার হাসান, একাডেমীর নির্বাহী সদস্য ও পিটিআইর প্রাক্তন সুপার রাজবিহারী চৌধুরী, একাডেমীর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ও স্থায়ী পরিষদের সদস্য কবি অধ্যাপক দিলওয়ার চৌধুরী, এডভোকেট নূরুল হক ছড়াকার ধনিরাম বড়–য়ার জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন।
বক্তাগণ আরো বলেন, ছড়াকার ধনিরাম বড়–য়া কক্সবাজারের সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের একটি উজ্জ্বল। কক্সবাজারের সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে লিখতে গেলেই ধনিরাম বড়–য়ার নাম আসবে।
পরে কবি সুলতান আহমদ, রোজবিহারী চৌধুরী, মোহাম্মদ আমিরুদ্দীন কবিতা পাঠ করেন।
শুরুতেই একাডেমীন সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলাম লিখিত ‘ধনিরাম বড়–য়া কক্সবাজারের একজন শক্তিমান সাহিত্যিক’ শীর্ষক শিরোনামে লিখিত প্রবন্ধ একাডেমীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছড়াকার, কণ্ঠশিল্পী নূরুল আলম হেলালী পাঠ করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালেই তার প্রথম গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধের প্রেক্ষাপট নিয়েই লেখা গ্রন্থটি ‘স্বাধীনতার গল্প’ নামেই প্রকাশিত হয়। এর পরে একে একে ‘লাল নীল ছড়া’, ‘অন্তু ও টিমির গল্প’, ‘রামুর প্রাচীন স্থাপত্য’ ও ‘ঐতিহ্য’, ‘কালের বিচারে বৌদ্ধ ধর্ম’ ও ‘রামুর লোকসাহিত্য’ গ্রন্থসমূহ প্রকাশিত হয়।
এছাড়াও বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের পত্রিকা ‘কৃষ্টি’তে প্রকাশিত হয় বৌদ্ধ ধর্মকে অবলম্বন করে লেখা ৩টি নাটক। নাটকগুলো হলো ‘অঙ্গুলীমাল’, ‘অজাতশত্রু’ ও ‘মুক্ত বিহঙ্গ’।
৮ ডিসেম্বর একাডেমীর ৪০৩তম পাক্ষিক সাহিত্য সভা
কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর ৪০৩ তম পাক্ষিক সাহিত্য সভা আগামী ৮ ডিসেম্বর ২০১৭ শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টায় কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে দেশের অন্যতম অনুবাদ সাহিত্যিক-সাংবাদিক জাফর আলমের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করা হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে একাডেমীর সংশ্লিষ্ট সকলসহ জেলার কবি-সাহিত্যিক, সাহিত্যামোদি, সাহিত্যানুরাগী, চিন্তাশীল গবেষক, বুদ্ধিজীবীসহ সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুল অনুরোধ জানিয়েছেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।