আব্দুল আলীম নোবেল:
অসহায় মানুষের নিরাপদ ঠিকানা। বিপদগ্রস্ত ও নির্যাতিত মানুষের পাশে থেকে বিশ্বাসের জায়গা তৈরি করার নিরলস প্রচেষ্টায় সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা। যার কাজের স্বীকৃতিও পেয়েছেন ইতিমধ্যে, অর্জন করেছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার। বলছি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘অগ্রযাত্রা’র কথা। যাদের মূল উদ্দেশ্যই হলো- ক্লান্তিহীন ভাবে মানবসেবায় কাজ করা।
১৯৯৮ সালে যাত্রা করা বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি মানুষের দুর্দিনে সবার আগে এগিয়ে আসে এবং তা অব্যাহত রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার মিয়ানমারের জান্তা সরকারের নির্মম নির্যাতনে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পাশে থেকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানটি। উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় গ্রহণ করা রোহিঙ্গাদের জন্য যেসব কাজ করছে তার মধ্যে- ১৯ রিং বিশিষ্ট পরিবেশ বন্ধব স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নির্মাণ, নারী বান্ধব নিরাপদ গোসল খানা,
টিউবওয়েল স্থাপন, ঘুমানোর পাটি, থাকার জন্য শেড নির্মাণ, শীত বস্ত্র বিতরণ (সুয়েটার ও কম্বল), ত্রিপাল বিতরণ, ট্রাকে করে বিশুদ্ধ খাবার পানি বিতরণ, বিভিন্ন মানের খাবার সামগ্রী দেয়া হচ্ছে ডাল, আলু চাউল,পেয়াজ এবং পরিধেয় কাপড় লুঙ্গী ও থামি, এছাড়া সাবানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রি। পাশাপাশি রয়েছে অসুস্থ রোহিঙ্গাদের জন্য স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম বালুখালী, থাইংখালী ময়নারঘোনা স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র রয়েছে। শিশুদের জন্য আলাদা বিনোদন কেন্দ্র।
অগ্রযাত্রা শুধু স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে সাহায্য-সহযোগিতায় থেমে থাকেনি, পাশাপাশি দেশ গড়ার কাজেও সম্পৃক্ত হয়েছে। তাই তো পিছিয়ে পড়া নারীদের সেলাই মেশিন বিতরণ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বের অন্যতম প্রাকৃতিক ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকা হওয়ায় সচেতনতা বাড়ানোর জন্য দূর্যোগের উপর প্রশিক্ষণ এবং দক্ষ নারী শক্তি গড়ার জন্য প্রদান করছেন হস্ত শিল্পের ট্রেনিং। অসহায় ও পথ মানুষদের শীতের কাপড় বিতরণ করে আসছেন প্রতি বছর। এছাড়া বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ কার্যক্রমও রয়েছে অগ্রযাত্রা সংস্থাটির। অগ্রযাত্রার রয়েছে রামুর রশিদনগরস্থ পানিরছড়ায় মফিজাবাদে অগ্রযাত্রার মানবিক পল্লী।
অগ্রযাত্রা দীর্ঘদিন ধরে
কক্সবাজার রামু, পেকুয়া, কুতুবদিয়াসহ বেশ কিছু এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য সহযোগিতা, বাড়িঘর নির্মাণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছে। এছাড়া ঢাকা বাশখালী ,আনোয়ারসহ চট্টগ্রামে গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করেছে সেচ্ছাসেবী এই প্রতিষ্ঠানটি। মানুষের জন্য কাজ করা এই মানবিক প্রতিষ্ঠানটির গুরুভার কাধেঁ নিয়ে নিরলস পথ চলা, নারী উদ্যোক্তা, সংগঠক, অগ্রযাত্রার সভাপতি নীলিমা আক্তার চৌধুরী। এই পর্যন্ত তিনি চারবার জাতীয় পুষ্কার ও একবার আন্তর্জাতিক পুরস্কার রয়েছে তার ঝুলিতে।
অগ্রযাত্রার নির্বাহী পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন, মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। এছাড়া একঝাক পরিশ্রমি আগ্রযাত্রার টীম নিরলসভাবে কাজ করে যাচেছ। লক্ষ্য একটাই মানুষের জন্য কাজ করুন দুনিয়াজুড়ে। অগ্রযাত্রা এখন মানবিক বিশ্বকে জানার মুক্তজানালা।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।