জসিম মাহমুদ,টেকনাফ :
নৌকা সংকটের কারণে ভেলায় করে নাফনদী পাড়ি দিয়ে দুই পরিবারে ১১ জন সদস্য তার মধ্যে ৩ জন পুরুষ,৩ জন মহিলা,৬ জন শিশু । গতকাল সকাল ১০ টার সময় নাফ নদীর মাঝ পথে এসে জোয়ারের ঢেউতে ভেঙ্গে যায় রোহিঙ্গা বাহি একটি বেলা। পানিতে ভাসতে দেখে নাফ নদীতে দহলরত কোস্টর্গাড তাদেরকে উদ্ধার করে। বেলায় চরে আসা নুর মোহাম্মদ জানান তার চার সন্তান,স্ত্রীসহ ৬ জন ও রোহিঙ্গা নারী আলমাস খাতুনে চার জন সন্তানসহ মোট ১১ জন মিয়ানমার থেকে ভেলায় করে পালিয়ে আসি । সকাল সাড়ে ৮ টার সময় ডংখালি চর থেকে রওনা করি। ১ ঘন্টা ২০ মিনিট চরার পর নাফ নদীর মাঝ পথে এসে আমাদের বেলা ভেঙ্গে যায় । আমাদের সাথে থাকা সব জিনিস পত্র পানিতে ভসে য়ায় । আমরা সবাই পানির খালি জারিক্যান ধরে ভাসতে থাকি। ভাসতে দেখে কোস্টগার্ডে একটি নৌকা এসে আমাদের সবাইকে উদ্ধার করে। তিনি আরও জানান বসত বাড়ি হারানোর পর পালিয়ে পাহাড়ের কিনারায় বসবাস করছিলেন,এতোদিন বাংলাদেশে না এসে পালিয়ে আত্মগোপনে ছিলাম। কিন্তু এখন আর সেখানে থাকার কোনো সুযোগ নেই। এখন নতুন করে গ্রামের নলকূপ থেকে শুরু করে পুকুরের পানিও নষ্ট করে দিচ্ছেন। খালি পড়ে থাকা বসতঘর থেকে শুরু করে হাটবাজার ও চালের গুদামগুলোতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন সেনা সদস্যরা । তারা ধ্বংস করছে রোহিঙ্গাদের কোটি কোটি টাকার স¤পদ।
টেকনাফের সাবরাং হারিয়াখালী ত্রাণকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি ও টেকনাফ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির বলেন,উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে বুধরার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আরও ৩১৪ পরিবারে এক হাজার ৫০জন রোহিঙ্গা টেকনাফে এসেছে। তাদের প্রথমে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালীতে সেনা বাহিনীর ত্রাণকেন্দ্রের মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ দিয়ে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে পাঠানো হয়েছে।
টেকনাফ ২ বিজিবির উপ অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, সকাল ১১টার দিকে নারী,পুরূষ,শিশুসহ মোট ১১ জন রোহিঙ্গা শাহ পরীর দ্বীপ কোস্টগার্ডে বিজিবি কাছে হস্থান্তর করে । তাদের প্রথমে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালীতে সেনা বাহিনীর ত্রাণকেন্দ্রের মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ দিয়ে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন এক শ্রেণির দালাল চক্রের সদস্যরা রোহিঙ্গা পারাপার করতে কখনো নৌকা, কখনো ভেলা ভাসিয়ে রোহিঙ্গা নিয়ে আসছে । নাফনদী দিয়ে রোহিঙ্গা পারাপার বন্ধ করতে গত ২৫ আগস্টের পর থেকে নাফনদীতে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন রাতের আধাঁরে কিছু নৌকা আবারো রোহিঙ্গা পারাপার করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এখন দালাল চক্রের সদস্যরা রাতের আধাঁরে রোহিঙ্গাদের নৌকায় করে এনে সাগর তীরবর্তী এলাকায় তুলে দিচ্ছেন।