বিশেষ প্রতিনিধি
সমাজ থেকে যৌন হয়রানী প্রতিকার ও প্রতিরোধে টেকসই সামাজিক অন্দোলন দরকার। এ জন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, কমিউনিটি ওয়াচ গ্রুপ ও সরকারী কর্মকর্তাসহ সর্বস্থরের লোকজনকে আরো বেশী ভূমিকা পালন করতে হবে।
বুধবার (২২ নভেম্বর) সকালে ব্রাকের মেয়েদের জন্য নিরাপদ নাগরিকত্ব-মেজনিন প্রকল্প সমাপনী ও যৌন হয়রানী নির্মূলকরণে করণীয় বিষয়ক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
ব্রাকের জেলা প্রতিনিধি অজিত নন্দির সভাপতিত্বে কক্সবাজার জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ নোমান হোসেন প্রিন্স।
তিনি বলেন, প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আজ সবার হাতে স্মার্ট ফোন। এমনকি কচি শিক্ষার্থীদের হাতেও মোবাইল ফোন। অবাধে ব্যবহার করছে ফেসবুক। অনেকে ইন্টারনেটে অশ্লীল ভিডিও দেখে রাত কাটিয়ে দিচ্ছে। এতে করে সমাজের একটি অংশ ফেসবুক ব্যবহারে কুফল বয়ে আনছে। ফেসবুক ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীরা ক্লাসে মনোযোগিতা হারিয়ে ফেলছে।
সভায় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ইউএনও নোমান হোসেন বলেন, তোমরা পড়ালেখায় মনোযোগি হও। কোন অবস্থাতেই মোবাইল ব্যবহার করবেনা। মোবাইল হাতে দেখলে ক্লাস থেকে বের করে দেয়া হবে।
মতবিনিময় সভায় মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে মেজনিন কর্মসুচির বিভিন্ন কর্মকান্ডের একটি চিত্র তুলে ধরেন সিনিয়র সেক্টর স্পেশালিস্ট (মেজনিন) ঝর্না রানী দে। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে মেজনিন কর্মসুচি কক্সবাজারে চালু করা হয়েছে। কক্সবাজার সদর ও রামুর ২০টি স্কুলে তাদের কাজ হয়েছে। এ কর্মসুচিতে সম্পৃক্ত হয়েছে ৫৫৩ শিক্ষক, ১৬৯৩৬ শিক্ষার্থী, ৬২৫০ অভিভাবক এবং কমিউনিটি ওয়াচ গ্রুপের ৩২৫ জন সদস্য। মেজনিন কর্মসুচিতে জড়িত রয়েছে মিডিয়াকর্মী, সুশীল সমাজ ও স্থানীয় প্রশাসন বিশেষভাবে পুলিশ। কর্মসুচির অধীনে শিক্ষক প্রতিনিধি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় মনো সামাজিক সাপোর্টিভ কাউন্সেলিং প্রশিক্ষণ, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে ম্যারেজ রেজিস্ট্রার ও ধর্মীয় নেতাদের সাথে মতবিনিময় সভা হয়েছে। ১৫ জন সাংবাদিক, ৫৫ জন শিক্ষক এবং কমিউনিটি ওয়াচ গ্রুপের ৪৭ জন সদস্যকে জেন্ডার প্রশিক্ষন দেয়া হয়েছে। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করা হয়েছে ১০টি। যৌন হয়রানী ও নারী নির্যাতনের ঘটনা সমাধান করা হয়েছে ৪৪টি।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন-শিক্ষাকর্মকর্তা (বিদ্যালয় পরিদর্শক) মহিউদ্দিন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রশিক্ষক আসমা জেরিন, ব্রাকের সিনিয়র ম্যানেজার (নলেজ মেনেজমেন্ট) কামরুজ্জামান, যৌন হয়রানী নির্মূলকরণ নেটওয়ার্কের জেলা সভাপতি প্রবীন সাংবাদিক ফজলুল কাদের চৌধুরী, প্রবীন সাংবাদিক প্রিয়তোষ পাল পিন্টু।
ব্রাকের সিনিয়র ম্যানেজার (মেজনিন) রফিকুল ইসলামের উপস্থাপনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন- যৌন হয়রানী নির্মূলকরণ নেটওয়ার্কের সদস্য মোহাম্মদ জুনাইদ, ইমাম খাইর, চঞ্চল দাশ গুপ্ত, মোঃ নাজমুল হোসেন, মফিজুর রহমান, জুনিয়র সেক্টর স্পেশালিস্ট মোঃ ইমসাইল, রিয়াজ মাহমুদ প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, কমিউনিটি ওয়াচ গ্রুপ নেটওয়ার্কের সদস্য ও সরকারী কর্মকর্তাসহ প্রায় দেড়শজন অংশ গ্রহণ করেন। সভার প্রারম্ভে স্বাগত বক্তৃতা রাখেন ব্রাকের জেলা প্রতিনিধি অজিত নন্দি।