মিছবাহ উদ্দিন, ঈদগাঁও
ঈদগাঁওতে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ ছাড়াই বহু দোকানে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। আইন কানুন না মেনেই শুধু মাত্র ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এ জ্বালানির ব্যবসা চলছে অহরহ। এসব দোকানে নেই আগুন নির্বাপক যন্ত্র। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে নেই প্রতিকারের ব্যবস্থা। জনবহুল কিংবা আবাসিক এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্যবসার কারণে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেক সময় প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। তবে বিস্ফোরক অধিদপ্তর সম্প্রতি সনদ নবায়নের জন্য সার্কুলার জারি করেছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সনদ নবায়ন করার আহবান জানানো হয় বলে সুত্রে জানাযায়। তবে যাদের সনদ নেই তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি তারা।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, খুচরা এলপি গ্যাস বিক্রেতারা সংশ্লিষ্ট আইন না মেনেই ব্যবসাটি চালিয়ে যাচ্ছেন। ঝুঁকিপূর্ণ এ জ্বালানির যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা তারা রাখছেন না। আবার বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ সংগ্রহেরও তোয়াক্কা করছেন না। এলপি গ্যাস প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর ডিলাররা বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ নিলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা সিলিন্ডার মজুদে আইন অনুসরণ করছেন না। ব্যবসা পরিচালনার সাধারণ ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করলেও ১০টির বেশি সিলিন্ডারে আবশ্যকীয় সনদ তাদের নেই।

খুচরা এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের বেশির ভাগই আইনগত বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে অবগত। তার পরও তদারকির অভাবে ঝূঁকি জেনেও তারা সনদ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে লাইসেন্সপ্রাপ্তির দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে এবং বিভিন্ন কোম্পানির ডিলারদের বিপণন কৌশলে প্ররোচিত হয়েও তারা আইন অনুসরণ থেকে পিছিয়ে আসছেন।

ঈদগাঁও বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ ছাড়াই স্থানভেদে ২০ থেকে ৩০টিরও বেশী এলপি গ্যাস সিলিন্ডার দোকানে মজুদ করেছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। এসব দোকানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এলপি গ্যাসবোঝাই সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে।

দেখা গেছে, কোথাও কোথাও ব্যবসায়ীরা বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদের আবেদন করলেও সেটি পাওয়ার অপেক্ষা না করেই দোকান ভাড়া নিয়ে সিলিন্ডার বেচাকেনা শুরু করেছেন। বিভিন্ন স্থানে হার্ডওয়্যার-সামগ্রী বিক্রেতা, এমনকি সিমেন্ট ও মনিহারি-সামগ্রীর দোকানেও এলপি গ্যাস বিক্রি চলছে।

যদিও আইন অনুযায়ী ১০টির বেশি এলপি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার বা গ্যাসাধার রাখলে যেকোনো ব্যবসায়ীর বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ নেয়া বাধ্যতামূলক।
বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪-এর ‘দ্য এলপি গ্যাস রুলস ২০০৪’-এর ৬৯ ধারার ২ বিধিতে ‘লাইসেন্স ব্যতীত কোনো ক্ষেত্রে এলপিজি মজুদ করা যাবে’ তা উল্লেখ আছে। বিধি অনুযায়ী, ‘১০ (দশটি) গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার মজুদকরণে লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই’। অর্থাৎ ১০টির বেশি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার মজুদের ক্ষেত্রে লাইসেন্স নিতে হবে। একই বিধির ৭১ নং ধারায় বলা আছে,আগুন নিভানোর জন্য স্থাপনা বা মজুদাগারে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম মজুদ রাখিতে হইবে।

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নোমান হুসাইনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসব দোকানের বিরুদ্ধে শহরে অভিযান চালানো হয়েছে, ঈদগাঁওতেও যে কোন সময় অভিযান চলবে।

এদিকে ঈদগাঁওর এক দোখান মালিক জানান, একটি সনদ নিতে ৬০ হাজার টাকারও বেশী খরচ হয় তাই এত টাকা খরচ না করে সরাসরি বোতল কিনেন। তাছাড়া এখন কেউই বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ নেয় না। তাই আমরাও নিই না। সরকার চাপ দিলে সবাই নিতে বাধ্যহবে তখন আমরাও নিব।