বার্তা পরিবেশক

নমিনীর টাকা তুলতে গিয়ে আইনজীবীর হাতে প্রকাশ্যে লাঞ্চিত হলেন ইউনির্ভাসিটির এক ছাত্রী। ১৯ নভেম্বর সকাল ১০ টায় কক্সবাজার আদালত ভবন প্রাঙ্গণে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে। সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করা হয় ।

কক্সবাজার শহরের এন্ডারসন রোড়ের বাসিন্দা মরহুম এড.আবুল কাসেম (সাবেক নোটারী পাবলিক) এর স্ত্রী,কন্যা ও ছেলে ভেনেভোলেন্ট ফান্ডের নমিনী হিসেবে টাকা উত্তোলন করতে গেলে আইনজীবী মোহাম্মদ ইসহাক (জিপি) কিছু বুঝে উঠার আগেই তাদেরকে অশালীন ভাষায় গালমন্দ করেন। এ সময় মরহুম আইনজীবীর সন্তান শমশাদ লায়লা মিলিকে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করেন। গতকাল (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় একটি রেস্টুরেন্টের হল কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত অভিযোগ করেন মরহুম এড. আবুল কাসেমের কনিষ্ট ছেলে কক্সবাজার সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিজ্ঞান শাখার অর্নাস ১ম বর্ষের ছাত্র মো.বুলবুল ইসলাম সোহাগ।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, আমরা আইনজীবীর সন্তান হয়েও ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত হচ্ছি। দেশ, সমাজ ও সকল মানুষের শেষ অধিকার আদায় ও ন্যায় বিচারের একমাত্র ঠিকানা আদালত। সেই আদালতে আমার বাবা বিগত ১৯/০২/১৯৮০ইং সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। গত ২৬/০৭/২০১৭ ইং আমার বাবা মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে আমার বাবা মোঃ আবুল কাসেম এডভোকেট এর ওয়ারিশ হিসেবে স্ত্রী তাহেরা বেগম, দুই মেয়ে শবনম নার্গিস লিপি ও শমশাদ লায়লা মিলি এবং একমাত্র সন্তান মোঃ বুলবুল ইসলাম সোহাগকে রেখে যান। এছাড়া আমার বাবার আর কোন ওয়ারিশ নাই। যা এলাকার সকলেই অবগত আছে। আমার বাবা জীবিত থাকাকালীন সময়ে একমাত্র সন্তান হিসাবে আমি মোঃ বুলবুল ইসলাম সোহাগকে কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির কল্যাণ তহবিল ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভেনেভোলেন্ট ফান্ড এ নমিনী হিসাবে মনোনীত করিয়াছেন। তৎমতে কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির কল্যাণ তহবিল ও বার কাউন্সিলের ভেনেভোলেন্ট ফান্ড হতে আমার বাবার প্রাপ্ত টাকা পাওয়ার জন্য নমিনী হিসাবে কক্সবাজার আইনজীবী সমিতি বরাবর আবেদন করি।

আমার বাবা মোঃ আবুল কাসেম এডভোকেট মৃত্যু বরণ করার পর আমার পারিবারিক শত্রুদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমরা এতিম তিন ভাই-বোনের মুখের গ্রাস কেড়ে নেওয়ার কু-মানসে আমার বাবার সন্তান দাবী করে জনৈক সুরাইয়া আক্তার নামে এক মহিলা কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির কল্যাণ তহবিলের টাকার জন্য আবেদন করেন। প্রকৃত পক্ষে উপরোক্ত সুরাইয়া আক্তার আমার বাবার কন্যা নয়। উক্ত সুরাইয়া আক্তার এর নামীয় জাতীয় পরিচয়পত্র (যার নং- ১৯৮২২২২২৪০৮৩৬২৭২৯), বিবাহের কাবিন নামা (যার কাবিন নামা নং- ২২১/২০০১, বহি নং- ০৩, পৃষ্ঠা নং- ২১, তারিখ: ১৯/০৩/০১ইং, জেলা সদর কাজী অফিস, কক্সবাজার) এবং স্কুল সার্টিফিকেট (কক্সবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে রেকর্ড আছে) তার নাম সুরাইয়া আক্তার, পিতা- হাবিবুর রহমান, স্বামী- তোফাজ্জল হোসেন, মাতা- আয়েশা বেগম সঠিক ও শুদ্ধভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। তাতে প্রমানিত হয় যে, উক্ত সুরাইয়া আক্তার আমার বাবার ওয়ারিশ নয়। তাছাড়া উক্ত সুরাইয়া আক্তার ইতোপূর্বে কোন দিন আমার বাবার ওয়ারিশ বা মেয়ে দাবী করে নাই, আমার বাবার বিগত ২০ বৎসর যাবত অসুস্থকালীন সময়ে কোন দিন মেয়ে দাবী করিয়া দেখতে আসে নাই, এমনকি তার মৃত্যুর সময় এবং ফাতেহার সময়ও মেয়ে হিসাবে দাবী করে আসে নাই। শুধুমাত্র কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির কল্যাণ তহবিল হতে টাকা পাব এমন খরব পেয়ে পারিবারিক শত্রুদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।

উক্ত ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতি বিগত ০২/১১/২০১৭ইং তারিখ কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠক করে দীর্ঘ আলোচনার পর সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয় যে, মরহুম এডভোকেট মোঃ আবুল কাসেম এর প্রদেয় নমিনী মোঃ বুলবুল ইসলাম সোহাগকে কল্যাণ তহবিলের টাকা পরিশোধ কল্পে চেক হস্তান্তর করা হবে। কিন্তু সমিতির সভাপতি এড: মোহাম্মদ ইসহাক উক্ত সিদ্ধান্ত অমান্য করিয়া চেকখানা আজ দিবে কাল দিবে বলে কালক্ষেপন করতে থাকেন। প্রতি দিনের ন্যায় আমরা দুই ভাই-বোন ১৯/১১/২০১৭ইং তারিখ সকাল ১০টার সময় সভাপতি এড: মোহাম্মদ ইসহাক এর চেম্বারে উপস্থিত হয়ে উক্ত চেকের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি আমাদেরকে চেক দিবে না বলে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে চেম্বার হতে বের করে দেন।

তিনি বলেন, আমি পরিবারের পক্ষ থেকে অত্যান্ত অসহায়ত্ববোধ করে বলছি, আমরা তিন ভাইবোন সকলে অধ্যায়নরত। বড় বোন শবনম নার্গিস লিপি কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বি,বি,এ ফাইনাল ও মেঝ বোন শমশাদ লায়লা মিলি একই ইউনিভার্সিটিতে এল,এল,বি অর্নাস ৭ম সেমিষ্টার এবং আমি মোঃ বুলবুল ইসলাম সোহাগ কক্সবাজার সরকারী কলেজে অর্নাস এ পড়ালেখা করছি। এমতাবস্থায় বাবার দীর্ঘদিনের কর্মস্থলের কল্যাণ ফান্ডের টাকা আমাদের প্রাপ্য হক। এই টাকা দিয়ে আমাদের পড়ালেখার খরচ ও সংসার চালাতে হবে। আমাদের উপার্জনের অন্য কোন উপায় নাই। এমতাবস্থায় কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটির সবাই আমার পিতার কল্যাণ ফান্ডের টাকা নমিনীকে দিতে রাজি হলেও সভাপতি এড: মোহাম্মদ ইসহাক রহস্যজনক কারণে টাকা দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন। তিনি প্রাপ্য টাকা দ্রুত পেতে আন্তরিক সহযোগিতা এবং সংশ্লিষ্ট সকলের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।