রিয়াজ উদ্দীন, পেকুয়া:

পেকুয়ায় গ্রাম পুলিশ উদ্ধার করল ৫ পিএসসি পরীক্ষার্থীকে। এ সময় ১ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে প্রাণনাশ চেষ্টা চালানো হয়েছে। ঘটনার জের ধরে উপজেলার টইটং ইউনিয়নের পুড়াদিয়া এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। টাকা পাওনা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পুরাদিয়া এলাকার মনির আহমদের ছেলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী জয়নাল আবেদিন বাদশাহ ও তার প্রতিবেশী আহমদ কবিরের ছেলে হেলাল উদ্দিন এর মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় বাদশাহকে কোপাতে দা নিয়ে ধেয়ে আসে হেলাল উদ্দিন। প্রাণবাচাতে প্রতিবন্ধী বাদশাহ বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এক পর্যায়ে তাকে বাড়িতে থেকে বের না হতে ধারালো দা নিয়ে বাড়ির সামনে অবস্থান নেয় হেলাল। ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান প্রতিবন্ধী বাদশাহকে উদ্ধার করতে গ্রাম পুলিশ পৌঁছায়। এ সময় হেলাল পালিয়ে যান। রাতে প্রতিবন্ধী বাদশাহসহ অন্তত ১৫ টি পরিবারের একমাত্র চলাচল পথ আটকিয়ে দেওয়া হয়। সকালে বের না হতে দা নিয়ে চলাচল পথে অবস্থান নেয় হেলাল। ২০ নভেম্বর ও ১৯ নভেম্বর প্রায় ১৪ ঘন্টা ধরে অবরুদ্ধ হয়ে যায় বাদশাহসহ আশপাশের ১৫ টি পরিবার। ওই দিন সকাল ১১ টার দিকে পিএসসি পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষার ২য় দিনে অংশ নিতে অনিশ্চয়তা দেখা দেয় ৫ পরীক্ষার্থীদের মাঝে। কাউকে বের হতে দিচ্ছিলেন না বাড়ি থেকে। এ সময় হেলাল হাকাবাকাসহ চরম উত্তেজিত হন। দা নিয়ে মূর্তিমান আতংক। ৫ জন পরীক্ষার্থীসহ সবাই জিম্মী হয়ে যান এ সময়। এতে করে ভীতি ও টান টান উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা ভাব ও শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরী হয়। এ সময় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। টইটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী গ্রাম পুলিশ পৌছায় ওই স্থানে। এ সময় গ্রাম পুলিশ এসে বাড়ি থেকে ৫ জন পরীক্ষার্থীকে বের করে টইটং উচ্চ বিদ্যালয় পিএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ৩০ হাজার টাকা পাওনা নিয়ে বাদশাহ ও হেলালের মধ্যে বনিবনা চলছিল। বাদশাহ উপজেলা প্রতিবন্ধী এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক। হেলাল বিভিন্ন সময় টাকা ধার নেন বাদশাহর কাছ থেকে। এক সময় হেলাল চাকুরীজীবি ছিলেন। শৃংখলা পরিপন্থী কাজের দায়ে তাকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সে সময় থেকে তিনি বেকার। ওই দিন টাকা খুঁজছিলেন বাদশাহ। এর জের ধরে তাকে প্রাননাশ চেষ্টা চালানো হয়। এমনকি পথ আটকিয়ে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে বাদশাহ জানায়, তসলিমা ,রিপা, শিফা, সুমিসহ ৫ জন পরীক্ষার্থীসহ আমরা আটকিয়ে যায়। দা নিয়ে পথে অবস্থান নেয় হেলাল। গ্রাম পুলিশ এসে পরীক্ষার্থীদের উদ্ধার করে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু ওমর জানায়, রাতে আমি গিয়েছিলাম। সে আমার সাথেও দুর্ব্যবহার করেছে। কয়েকটি পরিবার অবরুদ্ধ হয়েছিল। চেয়ারম্যান দু’বার গ্রাম পুলিশ পৌছায়। গ্রাম পুলিশ খলিল জানায়, হেলাল আমাদের সামনে প্রতিবন্ধী বাদশাহকে মারতে লাঠি নিয়ে যায়। রাতে তার হাতে ধারালো দা দেখতে পায়। হেলাল উদ্দিন জানায়, আপনারা সাংবাদিক। আমার কথা শুনবেন। আমার গুলি না লিখলে এখান থেকে চলে যান। না হয় আপনাদের উপরও হামলা হতে পারে।

টইটং ইউপির চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী জানায়, সে অত্যন্ত বর্বর ও খারাপ আচরন করেছে। আমি দু’বার চৌকিদার পৌছায়। তার হিংস্রভাব স্থানীয়রা দেখতে পেয়েছেন বলে নিশ্চিত হয়েছি। আসলে এমন খারাপ প্রকৃতির মানুষের শাস্তি হওয়া উচিত। আমি তাকে পরিষদে নিয়ে এসেছিলাম। বিভিন্ন প্রতিষ্টানের ৩০/৩৫ জন শিক্ষার্থী আতংকিত হন। তারা সবাই অবরুদ্ধ হয়ে যায়। চৌকিদার গিয়ে পিএসসি পরীক্ষার্থীদের উদ্ধার করেছে।