ইমাম খাইর, সিবিএন:
‘কন্ঠস্বর আজ নিস্তব্দ। ভাইরে… তোকে হারিয়ে আজ আমি হতভম্ব, বাকরুদ্ধ। এভাবেই চলে যাবে সেটা কোনদিন ভাবিনি। তুই শুধু চলে গেলি তা নয়, আমার বুকের বা পাজরটা ভেঙ্গে দিয়ে চলে গেলি তুই। খুব ভালবাসতাম তোকে। আর সে ভালবাসার প্রতিদান এভাবেই দিবি সেটা যদি জানতাম তাহলে কোনদিন তোকে আসার বুকে জায়গা দিতাম না। ভাল থাকিব তুই পরপারে। পারলে অভাগা এ ভাইকে ক্ষমা করে দিস। বুকের মধ্যে আগলে রাখতে এসেছিলাম তোকে। কিন্তু পারলাম না ভাই, তোকে, ক্ষমা করে দিস।’
রবিবার (১২ নভেম্বর) সকালে রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মহিউদ্দিন মাহিকে নিয়ে সাহাব উদ্দিন শিহাব নামে একজন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে কথাগুলো লিখেছেন। শিহাব নিহত মাহির বড় ভাইয়ের মতো। তারা প্রায় সময় এক সঙ্গে থাকতো। রবিবারে দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে মারা যায় আরো দুই জন।
তারা হলো- ঈদগাঁও কলেজ গেইট (হাছিনা পাহাড়) এলাকার ব্যবসায়ী শব্বির আহমদ প্রকাশ ধলুর ছেলে শফিকুল ইসলাম এবং ঈদগাঁও জালাবাদ পালাকাটার আবদুল খালেকের ছেলে মোঃ হাসান।
নিহত মহিউদ্দিন মাহি ও শফিকুল ইসলাম ঈদগাহ ফরিদ আহমদ কলেজে উচ্চমাধ্যমিক ২য় বর্ষের ছাত্র। তারা দুইজনই কলেজ ছাত্রলীগের নেতা। হাসান ঈদগাঁও বাজারের কম্পিউটারের দোকানদার।
তরতাজা তিন যুবকের করুণ এই মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেনা বন্ধুমহল।
ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুহেনা বিশাদ জানান, দীর্ঘদিন ধরে মহিউদ্দীন ও শফিক ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তাদের এ মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না।
বিশাদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছে- ‘সবসময় তোরা বলতি আমাকে ভাইয়া একসাথে থাকব সারাজীবন বল কে থাকবে। তোদের সাথে দেখা হলে বলতি, ভাইয়া কেমন আছেন? তোদের সাথে কথা বলার সময় বলতাম, সারাজীবন ভাল কাজ করে যাব। এখন কাকে বলব বল? মহান আল্লাহ তোদেরকে আমাদের সকলের কাছ থেকে নিয়ে গেছে। হে মহান আল্লাহ আমাদের ৩ প্রিয় ভাইকে জান্নাতবাসি করুন। আমিন।’ এভাবে অসংখ্য নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্খীরা তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বিভিন্ন ধরণের স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২ বছর পূর্বে সৌদি আরবের রিয়াদে মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় বৃহত্তর ঈদগাঁওর ৫ ব্যক্তি একই দিন মৃত্যুবরণ করলে কান্নার রোল পড়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠির কাছে। ঠিক এভাবেই একটি ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটল জোয়ারিয়ানালা এলাকায়।