সিবিএন ডেস্ক:
নগরীর বায়েজিদে একটি বাসায় টানা ৪ রাত অভিযান চালিয়ে দুর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত করেছে তিন চোর। এরপর টানা ১২ দিন অভিযান চালিয়ে এক চোরসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে চুরি করা স্বর্ণ, ল্যাপটপ ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেফতার দুজন হলেন-সাইফুল ইসলাম (১৮) ও তপন ধর (৪৫)। সাইফুলকে গ্রেফতারের পরই মূলত পুলিশ গল্পের কাহিনির মতো চার রাতের চুরির রহস্য বের করতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন।

নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার হাজীপাড়া এলাকায় মুনস্টার বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় জনৈক মো.সেলিমের বাসায় চুরির অভিযোগে গত ১৯ অক্টোবর মামলাটি দায়ের করেন তার বড় ভাই মো.সোলায়মান। ওই ‍বাসা থেকে ৫০ ভরি স্বর্ণালংকার, একটি ল্যাপটপ ও নগদ ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা চুরির অভিযোগ করা হয়।

মামলা দায়েরের পরই অভিযানে নামে বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আইয়ূব উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি টিম।

এসআই আইয়ূব বলেন, একই ফ্লোরের দুটি বাসায় দুই ভাই থাকেন। সেলিম গত ৮ অক্টোবর স্ত্রীকে নিয়ে থাইল্যান্ড বেড়াতে যান। ১৯ তারিখ ওই বাসা পরিষ্কার করতে সোলায়মানের স্ত্রী রীনা তালাবদ্ধ বাসা খুলে দেখতে পান, ভেতরে আলমিরা ভাঙা। আসবাবপত্র এলোমেলো। তিনি বিষয়টি স্বামীকে জানানোর পর থানায় মামলা হয়।

‘আমরা প্রথমে সোলায়মানের পরিবারকে সন্দেহ করেছিলাম। কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে আমাদের ভুল ভাঙে। ১৯ অক্টোবর থেকেই আমরা অভিযান শুরু করি। অবশেষে আমরা চোর সাইফুল এবং চোরাই স্বর্ণের ক্রেতা তপনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। ’ বলেন আইয়ূব

টানা ১২ দিন তদন্ত ও বিভিন্নভাবে অভিযান শেষে সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকালে সাইফুলকে বায়েজিদ থানার পূর্ব শহীদনগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে ল্যাপটপ ও নগদ এক লাখ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। সাইফুলের তথ্যে সোমবার গভীর রাতে তপন ধরকে নগরীর বিবিরহাটে অন্তু স্বর্ণশিল্পালয় নামে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেখান থেকে ১৫ ভরি চোরাই স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।

এসআই আইয়ূব জানান, চুরির সঙ্গে সোলায়মানের কার্টন ফ্যাক্টরির নিরাপত্তারক্ষী মো.বাবুল (৬০) এবং নূরনবী (২২) ও মোক্তার হোসেন (২০) নামে আরও দুজন চোর জড়িত ছিলেন। বাবুল ফ্যাক্টরির পাশে সোলায়মানদের বাসায়ও নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করেন। বাবুল একজন পেশাদার চোর। বেশ কয়েকদিন ধরে বন্ধ থাকা বাসাটিতে বাবুলই চুরির পরিকল্পনা করেন।

‘জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল জানিয়েছে, তারা চারদিন ‍বাসাটিতে প্রবেশ করেছে। একজনের কাঁধের ওপর পা দিয়ে আরেকজন দোতলায় উঠেছে। তার রেইঞ্জ দিয়ে গ্রিল কাটতে গিয়ে সেটি ভেঙে যায়। প্রথমদিন তাদের অভিযান ব্যর্থ হয়। দ্বিতীয়দিনও রডগুলো কাটতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। তৃতীয়দিন গ্রিল কেটে বাসার ভেতরে প্রবেশের রাস্তা তৈরি করে। চতুর্থদিন গভীর রাতে ঢুকে চুরি সংঘটিত করে। চারজন মিলেই বাসায় ঢুকেছিল। ’ বলেন আইয়ূব

গ্রেফতারের পর চুরির দায় স্বীকার করে সাইফুল মঙ্গলবার (৩১ ‍অক্টোবর) আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এসআই আইয়ূব।