কক্সবাজার রিপোর্ট :
দেশের শ্রেষ্ঠ সমবায় সমিতি হিসেবে ‘জাতীয় সমবায় পুরস্কার-২০১৫’ এর জন্য নির্বাচিত হয়েছে চকরিয়ার বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি। এই সমিতির মনোনীত প্রতিনিধিরা আগামী ৪ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সমবায় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহন করার কথা রয়েছে। দেশের প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার সমবায় সমিতির মধ্য থেকে এ সমিতি পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিকে বিশাল প্রাপ্তি হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ঠরা।
সমবায় কর্মকর্তা ও সমিতির সভ্যদের দাবী, সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির বর্তমান সম্পাদক এ.কে.এম ইকবাল বদরীর কর্তব্য নিষ্ঠা, সততা ও স্বচ্ছতার কারনে এ স্বীকৃতি অর্জন সম্ভব হয়েছে। মূলত তার হাত ধরেই সমিতি এগিয়েছে বহুদূর।
চকরিয়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘এ সমিতির সাথে যুক্ত সকলের আন্তরিকতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারনে এত বড় অর্জন সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে সমিতির সম্পাদক ইকবাল বদরী দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে কাজ করেছেন। তার সময়ে সমিতির কোন অর্থের অপচয় হয়নি। সম্প্রতি প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সমিতির ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার সমবায় সমিতি আছে। এর মধ্য থেকে জাতীয় সমবায় পুরস্কার-২০১৫ এর জন্য ‘কৃষিভিত্তিক/সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন’ শ্রেণীতে চূড়ান্তভাবে এ সমিতিকে নির্বাচন করেছে সমবায় অধিদপ্তর। গত ১৮ অক্টোবর সমবায় অধিদপ্তরের উপ নিবন্ধক (ইপি) কাজী মেসবাহ উদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক পত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এটি অনেক বড় অর্জন। আমি নিজেও আজ এ সমিতির জন্য গর্বিত। চকরিয়া ও গোটা জেলাবাসীর জন্য এই পুরস্কার অনেক বড় প্রাপ্তি।’
বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সম্পাদক ইবনে আদম জাহান বলেন, ‘সমিতিটি প্রায় ৪০ বছর যাবৎ দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছিল। এটিকে দুর্নীতিমুক্ত করেছেন বর্তমান সম্পাদক ইকবাল বদরী। তিনি দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে সমিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। তিনি স্বচ্ছতা ও ন্যায়নিষ্ঠার মাধ্যমে সমিতিকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে সমিতির বার্ষিক আয় ৩ কোটি টাকার বেশি। আগে কখনও এক কোটি টাকার বেশি আয় হয়নি। গত চার বছর ধরে আয় ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। তাঁর (ইকবাল বদরী) সময়ে সমিতির উপ-আইন পরিবর্তন করায় সমিতির সভ্যদের মাঝে দুর্নীতির প্রবনতা হ্রাস পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন চার কোটি টাকা ব্যয়ে সমিতির যে ভবন হয়েছে, তা আরও ১০ বছর আগে হতে পারতো। আগে যা সম্ভব হয়নি তা করে দেখিয়েছেন ইকবাল বদরী। তিনি যে স্বচ্ছতার সাথে কাজ করেছেন, তার প্রমাণ এ জাতীয় পুরস্কার।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সমবায় সমিতি নিবন্ধন লাভ করে ১৯৩০ সালে। শুরুতে সমিতির সভ্য ছিলেন ২৬২ জন। এখন এ সমিতির সভ্য সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। সমিতিটি ইতোমধ্যে পুরো দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম সমবায় সমিতি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সর্বশেষ সমিতির সাফল্যের পালকে যুক্ত হচ্ছে, জাতীয় সমবায় পুরস্কার।