বিদেশ ডেস্ক:
রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে বাংলাদেশে আসছেন জর্ডানের রানি রানিয়া আবদুল্লাহ। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির (আইআরসি) বিবৃতি থেকে রানিয়ার বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে ২৩ অক্টোবর সোমবার তিনি বাংলাদেশে পৌঁছাবেন।
জর্ডানের রানি রানিয়া

গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধন অভিযান শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫ লাখ ৮২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা ৬ লাখেরও বেশি। এখনও থামেনি রোহিঙ্গা স্রোত। পালিয়ে আসা বিপুল পরিমাণ মানুষের মানবিক সহায়তা নিশ্চিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে। শরণার্থী শিবিরগুলোতে ক্ষুধা আর রোগের শঙ্কা বিরাজ করছে ভয়াবহভাবে। রোহিঙ্গাদের এই বিপন্নতা দেখতেই রানিয়া বাংলাদেশে আসছেন।

রানিয়া আল আবদুল্লাহ আইআরসির একজন বোর্ড সদস্য। একইসঙ্গে তিনি জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক সংস্থার একজন পরামর্শক। তার সফর সংক্রান্ত বিবৃতি থেকে জানা গেছে, ঢাকায় নামার পর একটি বিশেষ ফ্লাইটে তিনি সরাসরি কক্সবাজার যাবেন। সেখানে স্বচক্ষে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখবেন। কথা বলবেন ওই শরণার্থীদের সঙ্গে। শুনবেন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম অত্যাচারের কাহিনী।

সফর শেষে সংবাদমাধ্যমকে নিজের অভিজ্ঞতা জানাবেন রানিয়া।

এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখতে বাংলাদেশে এসেছিলেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিন এরদোয়ান। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের পর দেশটির ফার্স্ট লেডি জানিয়েছিলেন, মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে তুরস্ক।

এদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা এখনও বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে হাজারে হাজারে। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পালিয়ে আসার হার আগের চেয়ে কিছুটা কমলেও, অক্টোবরের ১৫ তারিখ থেকে তা আবারও বেড়েছে। জাতিসংঘ রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতাকে জাতিগত নিধন ও মানবতাবিরোধী অপরাধ আখ্যা দিয়েছে।

অভিযানের নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী খুন, ধর্ষণ, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, কুপিয়ে হত্যাসহ বর্বরতার চূড়ান্ত সীমাও অতিক্রম করেছে বলে অভিযোগ মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধ রুখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে। দুই সংস্থাই মিয়ানমারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছে।