সোয়েব সাঈদ, রামু:
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেছেন, মায়ানমারে অং সান সুচি ও সামরিক সরকারের নেতৃত্বে আরাকান রাজ্যে মুসলিমদের উপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এজন্য সেদেশের পুরো জাতিকে দায়ি করা যাবে না। মায়ানমারে নির্যাতনের ঘটনায় বাংলাদেশে মুসলিমদের মতো বৌদ্ধ সম্প্রদায়ও শুরু থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছে। সীমান্তের উপারে যাই হোক, আমার দেশের সম্প্রীতি রক্ষা করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। বাংলাদেশ সরকার এবং সর্বস্তুরের মানুষ নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়ে যেমন বিশ্বে মানবতার অনন্য নজির দেখিয়েছে, তেমনি সবধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ বসবাসের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত বজায় রেখেছে। সুখি-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের জন্য এমন মানবিকতা ও সম্প্রীতি ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশের এ মানবতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এখন বিশ^জুড়ে প্রসংসিত হয়েছে।
সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল শুক্রবার (২০ অক্টোবর) বিকালে রামু কেন্দ্রিয় সীমা বিহারে দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
একুশে পদকপ্রাপ্ত, উপসংঘরাজ ও বিহারের অধ্যক্ষ পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথেরর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কঠিন চীবর দানোৎসবে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন বলেন, সব সম্প্রদায়ের নিরাপত্তায় বাংলাদেশ পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। মায়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে আতংকিত হওয়ার কোন কারন নেই। এখানে সবাই নিরাপদে যার যার ধর্ম-কর্ম পালন করতে পারবে। এজন্য একে অপরের প্রতি সৌহাদ্যপূর্ণ আচরণ করতে হবে।
এরআগে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, রামু সেনানিবাস এর এসপিপি, পিএসসি কর্ণেল মো. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ। সম্মানিত অতিথি ছিলেন, রামু ৫০ বিজিবি’র অধিনায়ক গোলাম মোহাম্মদ তানভীর আলী পিএসসি।
বিহারের সহকারি পরিচালক ও আমাদের রামু ডটকম সম্পাদক প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাজাহান আলি, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম লিয়াকত আলী, ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম, কক্সবাজার পলিটেকনিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রদীপ্ত খীসা, বিশিষ্ট ঠিকাদার বংকিম বড়ুয়া প্রমূখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, রামু কেন্দ্রিয় সীমা বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরুন বড়ুয়া।
অনুষ্ঠানে আশির্বাদক ছিলেন- রামু উসাই-ছেন রাখাইন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উপাঞঞা দীপা থের। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বিহারের ভিক্ষু শীলপ্রিয় থের।
এতে ধর্মদেশক ছিলেন, করুনাশ্রী মহাথের, জ্যোতিসেন থের, শীলানন্দ মহাথের, প্রজ্ঞাবোধি মহাথের, জ্ঞানবোধি থের, শাসনপ্রিয় থের, শীলমিত্র থের, প্রজ্ঞাতিলক থের। মঙ্গলাচরণ করেন, ধর্মপাল ভিক্ষু, সৌরবোধি ভিক্ষু ও পাঞাচারা ভিক্ষু।
অনুষ্ঠানে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দসহ বিপুল সংখ্য ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ নরনারী উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যায় বিশ^ শান্তি কামনায় সমবেত উপাসনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।